শিশু নিগ্রহ কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে তিরস্কৃত বিহার সরকার। অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।
অমানবিক অত্যাচারের শিকার শিশুরা। রাজ্যের হোমগুলিতে ধর্ষণ এবং মানসিক নির্যাতনের একাধিক অভিযোগ উঠে এসেছে। অথচ আশ্চর্যজনকভাবে নির্বিকার সরকার। এফআইআরটাও ঠিকমতো দায়ের করেনি তারা। বিহার সরকারের এমন আচরণে অসন্তোষ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। কড়া ভাষায় তাদের নিন্দা করল বিচারপতি মদন বি লোকুরের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
মুজফ্ফরপুর-সহ বিহারের একাধিক হোমে শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন নিয়ে আদালতে একটি আবেদন জমা পড়েছিল। তাতে বলা হয়, অভিযোগ এত গুরুতর হওয়া সত্ত্বেও বিশেষ গা করেনি পুলিশ। শুধুমাত্র অপ্রাপ্তবয়স্কদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক আচরণ বলেই দায় সেরেছে তারা। তাতেই চটে যান বিচারপতি লোকুর। বিহার সরকারে আচরণের তীব্র নিন্দা করে বলেন, ‘‘কী করছেন বলুন তো? আপনাদের আচরণ অত্যন্ত লজ্জাজনক। প্রকৃতিবিরুদ্ধ যৌন মিলনে বাধ্য করা হচ্ছে শিশুদের। আ আপনারা বলছেন কিছুই হয়নি! এত নির্লিপ্ত থাকেন কীভাবে বলুন তো! অত্যন্ত অমানবিক আচরণ।’’
রাজ্যের বিভিন্ন হোমে সমীক্ষা চালিয়ে চলতি বছরের শুরুতে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে মুম্বইয়ের টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস (টিস)। তাতে বলা হয়, রাজ্যের একাধিক হোমে ধর্ষণ সহ শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের একাধিক অভিযোগ মিলেছে। অত্যাচারের হাত থেকে নিষ্কৃতি পায়নি ছেলে-মেয়ে কেউই। লাগাতার তাদের ধর্ষণ করা হতো। মারধরও করা হতো ওই শিশুগুলিকে। হুমকি দেওয়া হতো প্রাণে মেরে ফেলার। মে মাসে নীতীশ সরকারের হাতে আসে ওই রিপোর্ট। তার পর তদন্ত শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত মামলার বিশেষ সুরাহা হয়নি। তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি লোকুর।
আরও পড়ুন: ফিরল ভাগাড় আতঙ্ক, ফের রাতের অন্ধকারে হোটেল, রেস্তরাঁয় পৌঁছে যাচ্ছে মরা পশুর মাংস
আরও পড়ুন: রেলকর্মীদের প্রচুর বেতন, ভাতা বাড়ানোর সুপারিশ সপ্তম বেতন কমিশনে
নীতীশ সরকারের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন তোলেন, এত গুরুতর অভিযোগ জমা পড়ার পরও পুলিশ গা ছাড়া মনোভাব দেখাল কীভাবে? ৩৭৭ ধারায় (প্রকৃতিবিরুদ্ধ যৌন মিলন)মামলা দায়ের হলো না কেন? শুধুমাত্র শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধ বলে দায় সেরে ফেলা হল কোন যুক্তিতে? ওই শিশুগুলি কি তাহলে এ দেশের নাগরিক নয়? তাহলে ন্যায় বিচার পাচ্ছে না কেন তারা? এই মুহূর্তে মুজফ্ফরনগর কাণ্ডের তদন্তের দায়িত্বে রয়েছে সিবিআই। প্রয়োজনে বাকি মামলার তদন্তভারও তাদের হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে বলে জানান তিনি। আগামী কাল মামলার পরবর্তী শুনানি স্থির হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy