Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
S Jaishankar

‘লাদাখের পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর’, প্রভাব ফেলবে সম্পর্কে, মস্কো বৈঠকের আগে বললেন জয়শঙ্কর

সম্পর্কের উন্নতিতে রাজনৈতিক স্তরে গভীর ভাবে আলোচনা এবং সীমান্তে উত্তেজনা কমানো দরকার বলেও মনে করেন কূটনীতিক-রাজনীতিবিদ জয়শঙ্কর।

মস্কোয় চিনা বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে অকপট বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র

মস্কোয় চিনা বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে অকপট বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১২:৪০
Share: Save:

বুধবার মস্কোয় বৈঠকে বসছেন ভারত ও চিনের বিদেশমন্ত্রী। তার দু’দিন আগে পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার অবস্থা ‘অত্যন্ত গুরুতর’ বলে মন্তব্য করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সীমান্তে এই উত্তেজনার প্রভাব নয়াদিল্লি-বেজিং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে অবধারিত ভাবে পড়বে বলেও মনে করেন বিদেশমন্ত্রী। সমস্যার সমাধানে এবং সম্পর্কের উন্নতিতে রাজনৈতিক স্তরে গভীর ভাবে আলোচনা এবং সীমান্তে উত্তেজনা কমানো দরকার বলেও মনে করেন কূটনীতিক-রাজনীতিবিদ জয়শঙ্কর।

বৃহস্পতিবার মস্কোয় বসছে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের সম্মেলন। সেখানে আট দেশের বিদেশমন্ত্রীরা আলোচনা করবেন। তার ফাঁকেই বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র বৈঠক হওয়ার কথা। তার আগে সোমবার নয়াদিল্লিতে একটি সংবাদ মাধ্যম আয়োজিত আলোচনা চক্রে বিদেশমন্ত্রী বলেন, সীমান্তের উত্তেজনা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক থেকে আলাদা করা যায় না। পর্যবেক্ষকদের মতে, মস্কোয় নয়াদিল্লি-বেজিং আলোচনার আগে বিদেশমন্ত্রীর এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁদের ব্যাখ্যা, মস্কোতেও যে দু’পক্ষের আলোচনার মূল ইস্যু হতে চলেছে পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার উত্তেজনা, সেটা আগেভাগেই চিনকে বুঝিয়ে দিলেন বিদেশমন্ত্রী।

গত ৪ মে থেকে পূর্ব লাদাখের প্যাংগং, গালওয়ান-সহ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় বিপুল সেনা মোতায়েন করে চিন। তার জের ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় সেনা সংঘর্ষে ভারতের ২০ জনের মৃত্যু হয়। চিনের পক্ষের কত জনের মৃত্যু হয়েছে, বেজিং তা স্পষ্ট করেনি। তবে একটি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, চিনের দিকে প্রাণহানি হয়েছে অন্তত ৩৫ জনের। সেই সংঘর্ষের প্রসঙ্গ টেনে জয়শঙ্কর সোমবার বলেন, ‘‘সীমান্তের অবস্থা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না। গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের আগেই সে কথা আমি লিখেছিলাম।’’ প্রকাশের অপেক্ষায় থাকা তাঁর বই ‘দ্য ইন্ডিয়ান ওয়ে’-তেও সেই বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: ফের প্ররোচনা, প্যাংগং-এ শূন্যে গুলি চালিয়ে ভারতকেই দূষল বেজিং

গালওয়ানের সংঘর্ষের পরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা কিছুটা কমলেও পুরোপুরি থামেনি। বরং সম্প্রতি নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। লাগাতার প্ররোচনা দিয়ে চলেছে বেজিং। ২৯-৩০ অগস্ট রাতে এবং ৩১ সেপ্টেম্বর দিনের বেলা ফের আগ্রাসনের চেষ্টা চালিয়েছে চিনা বাহিনী। গতকাল সোমবার আবার চিনা বাহিনী শূন্যে গুলি চালিয়েছে বলেও ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর। কিন্তু বিদেশমন্ত্রীর মতে, সীমান্তের এই উত্তেজনা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক। জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘সীমান্তে যদি শান্তি ও স্থিতাবস্থা না থাকে, তা হলে বাকি সম্পর্কও তার উপর ভিত্তি করেই এগোয়। কারণ, সম্পর্কের ভিত্তিই হল সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা।’’

আরও পড়ুন: শীতেও কি সেনা থাকছে লাদাখে?

ওয়াং ই-র সঙ্গে বৈঠকে এই চিনকে কি এই বার্তাই দেওয়া হবে? সরাসরি এই প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর অবশ্য কিছুটা রক্ষণাত্মক। বলেন, ‘‘তাঁকে (চিনা বিদেশমন্ত্রীকে) ঠিক কী বলব, সেটা অবশ্যই এখানে আলোচনা করব না।’’ তবে সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা ফেরানো এবং সামগ্রিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতিই যে তাঁর প্রাধান্য হবে, সে কথা বুঝিয়ে দিয়েছেন জয়শঙ্কর। ইতিহাসের হাত ধরে নয়াদিল্লি বেজিং-এর এই সমস্যা এসেছে বলে উল্লেখ করে জয়শঙ্কর বলেন, ঐতিহাসিক সমস্যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে থাকবে।

অন্য বিষয়গুলি:

S Jaishankar Ladakh India-China India China
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE