Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

প্রতিশোধ ন্যায়বিচার হতে পারে না, বললেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডে বলেন, ‘‘বিচার কখনও তাৎক্ষণিক হতে পারে না। ন্যায়বিচার যদি ‘প্রতিশোধ’-এর চেহারা নেয় তবে তা আর ন্যায়বিচার থাকে না।’’

প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডে

প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডে

সংবাদ সংস্থা
হায়দরাবাদ শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৮
Share: Save:

তেলঙ্গানা খুন ও ধর্ষণে চার অভিযুক্তের পুলিশি ‘সংঘর্ষে’ মৃত্যুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হল সুপ্রিম কোর্টে। অন্য দিকে ধর্ষণের মামলা দ্রুত শেষ করার দায় কার্যত বিচার বিভাগের উপরে চাপাতে চাইলেন আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। জবাবে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডে বলেন, ‘‘বিচার কখনও তাৎক্ষণিক হতে পারে না। ন্যায়বিচার যদি ‘প্রতিশোধ’-এর চেহারা নেয় তবে তা আর ন্যায়বিচার থাকে না।’’

আজ রাজস্থানের জোধপুরে এক অনুষ্ঠানের মঞ্চে তেলঙ্গানা প্রসঙ্গ তোলেন আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। বলেন, ‘‘প্রধান বিচারপতি ও অন্য শীর্ষ বিচারপতিদের উচিত ধর্ষণের মতো ঘটনার মামলা যাতে দ্রুত শেষ হয় তা দেখার জন্য ব্যবস্থা তৈরি করা। তবেই ভারত আইনের শাসন বজায় আছে এমন একটি গর্বিত দেশ হিসেবে ফের নিজের পরিচয় দিতে পারবে।’’ আইনমন্ত্রী জানান, সরকার ইতিমধ্যেই ৭০৪টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট তৈরি করেছে। মহিলাদের বিরুদ্ধে হিংসা রুখতে আইনও কড়া করা হয়েছে। রাজনীতিকদের মতে, এ ভাবে ধর্ষণের মামলার দ্রুত ফয়সালার দায় কার্যত পুরোপুরি বিচার বিভাগের উপরে চাপিয়ে দিতে চেয়েছেন আইনমন্ত্রী।

ওই অনুষ্ঠানেই আইনমন্ত্রীর পরে বক্তৃতা দিতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডে ন্যায়বিচার ও প্রতিশোধের উল্লেখ করেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিচার পেতে যে সময় লাগে, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে। তা বিচার বিভাগকে বিবেচনা করতে হবে।’’

তেলঙ্গানা ‘এনকাউন্টারের’ বিরুদ্ধে গত কালই মামলা হয়েছিল তেলঙ্গানা হাইকোর্টে। আজ সুপ্রিম কোর্টে দু’টি মামলা হয়েছে। আইনজীবী জি এস মণি, প্রদীপকুমার যাদব ও এম এল শর্মা আবেদনে জানিয়েছেন, ওই চার জনই যে খুন-ধর্ষণের জন্য দায়ী তা প্রমাণ হয়নি। স্পষ্টতই চার জন নির্দোষকে সুপরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে। আবেদনগুলিতে বলা হয়েছে, ‘‘খুন-ধর্ষণের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের কেউ সমর্থন করবেন না। কিন্তু পুলিশ তদন্ত না করে আইন নিজের হাতে নিয়েছে।’’ সাংসদ জয়া বচ্চন ও দিল্লি মানবাধিকার কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়ালকেও মামলায় পক্ষ করেছেন আইনজীবী এম এল শর্মা। তিনি আবেদনে জানিয়েছেন, জয়া বচ্চন সংসদে দাঁড়িয়ে এই ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের পিটিয়ে মারার দাবি করেছিলেন। মালিওয়াল দ্রুত ফাঁসির দাবিতে অনশনে বসেছিলেন। আবেদনকারীর অভিযোগ, এই সব ‘দাবি’র জেরে অভিযুক্তদের ‘সংঘর্ষে’ খুন করা হয়েছে।

আবেদনকারীদের মতে, খুন-ধর্ষণের ঘটনার ফলে যে জনরোষ তৈরি হয়েছে তা থেকে নজর ঘোরাতে এবং হয়তো প্রকৃত দোষীদের রক্ষা করতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আবেদনকারীদের আশঙ্কা, পুলিশের বিরুদ্ধে থাকা প্রমাণ নষ্ট করে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে। তাই নিরপেক্ষ তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারদের বিভাগীয় কাজকর্ম থেকে সরিয়ে রাখার নির্দেশ চেয়েছেন তাঁরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Supreme Court Chief Justice Telengana
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE