কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস অঠওয়ালে। —ফাইল চিত্র
খাতায়-কলমে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক জোট এনডিএ। কিন্তু কালক্রমে সেই জোটশক্তি নিষ্প্রভ হয়ে শুধুমাত্র বিজেপির ক্ষমতার মঞ্চে পর্যবসিত হয়েছে। নরেন্দ্র মোদীর বর্তমান মন্ত্রিসভার চেহারা দেখে এমনটাই মনে করছেন রাজনীতির লোকজন।
মোদী সরকারের ৫১ জনের সুবিশাল মন্ত্রিসভায় আতশ কাচ দিয়ে খুঁজতে হচ্ছে অ-বিজেপি মন্ত্রী। খোঁজার পর পাওয়া যাচ্ছে একজনকেই। তাও তিনি পূর্ণমন্ত্রী নন। সামাজিক ন্যায় ও সশক্তিকরণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী। রিপাবলিকান পার্টি অব ইন্ডিয়ার প্রতিনিধি রামদাস আঠওয়ালে। বাকি পঞ্চাশে পঞ্চাশই বিজেপির হাতে!
অথচ দু’টি বা চারটি নয়। ২০১৯ সালে নরেন্দ্র মোদী বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসার পর চব্বিশটি রাজনৈতিক দলের জোট ছিল এনডিএ। মোদী তিনটি পূর্ণমন্ত্রিত্ব দিয়েছিলেন শরিকদের। কিন্তু এখন লোকজনশক্তি নেতা রামবিলাস পাসোয়ানের মৃত্যুর পর আর কোনও অবিজেপি পূর্ণমন্ত্রী রইলেন না মন্ত্রিসভায়। রামবিলাস ছাড়া শিবসেনার অনন্ত গীতে ছিলেন ভারী শিল্পমন্ত্রী। অকালি-র হরসিমরত কৌর বাদল ছিলেন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রকের পূর্ণ দায়িত্বে। রামবিলাস ছিলেন কেন্দ্রীয় খাদ্য, গণবন্টন ও উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী। গত বছরই অনন্ত গীতে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন, তাঁর দল বিজেপিকে ছেড়ে কংগ্রেস এবং এনসিপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন করার পর। হরসিমরতের পদত্যাগ হালের ঘটনা। কৃষিসংক্রান্ত তিনটি বিল সংসদে পাশ করার প্রতিবাদে গত মাসে তিনি মন্ত্রিসভা ছেড়েছেন। বিজেপির পর এনডিএ-তে সবচেয়ে বড় দল জেডি(ইউ)। ২০১৪ সালের সাময়িক বিচ্ছেদের পর তারা এনডিএ-তে ফিরে এসেছে ঠিকই, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ দু’টি মন্ত্রক মিলবে না জেনে নীতীশ কুমারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের কেউ মন্ত্রিসভায় যোগ দেয়নি।
আরও পড়ুন: মহার্ঘ বিমানের জন্য ফের কটাক্ষ রাহুলের
এই শরিকহীন মন্ত্রিসভা নিয়ে জানতে চাওয়া হলে বিজেপির মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়ার জবাব, “আমাদের দল চির কালই শরিকদের সম্মান করে এসেছে। তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান কখনই ছোট করার নয়। এনডিএ এবং বিজেপি বরাবর জাতীয় স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে চলেছে। সেটা কখনও কখনও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল অথবা আঞ্চলিক স্বার্থের সঙ্গে খাপ খায়নি। শিবসেনা আমাদের সঙ্গে নির্বাচনে লড়েও আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছে। বিহারে বহু সময়েই আমরা শরিক জেডিইউ-কেই বেশিটা ছেড়েছি।”
আরও পড়ুন: বাবার অসম্মানে একলা লড়াই, নড্ডাকে চিরাগ
রাজনীতির লোকজন মনে করেন, বিজেপির ধারণা, মোদীর জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের শক্তিবৃদ্ধি করছে ছোট শরিক দলগুলি। কিন্তু নিজস্ব ভোট বাড়ানোর কোনও ক্ষমতা নেই। আর তাই বিজেপি তাদের মন্ত্রিসভা থেকে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গা থেকে ক্রমশই সরিয়ে দিয়েছে। ছোট ছোট দলগুলির মধ্যে নিরাপত্তার অভাববোধ তৈরি হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy