Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পরিবারকে বাঁচাতে সুপারিকিলার দিয়ে নিজেকেই খুন করালেন!

রাজস্থানের ভিলওয়ারা জেলার বাসিন্দা বলবীরের ধারের কারবার। ঋণের দায়ে নয়, ঋণ অনাদায়ে জীবন শেষ করার কথা ভাবলেন বলবীর। ২০ লক্ষ টাকা ধার দিয়েছেন নানা জনকে।

প্রতীকী ছবি। অলঙ্করণ- তিয়াসা দাস

প্রতীকী ছবি। অলঙ্করণ- তিয়াসা দাস

সংবাদ সংস্থা
জয়পুর শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:০৭
Share: Save:

রাজবীর সিংহ আর সুনীল যাদবকে জেরা করে চমকে উঠেছিল পুলিশ। বলবীর খারোল (৩৮) নামে এক ব্যক্তিকে খুনের দায়ে গ্রেফতার হয়েছে দু’জন। বলবীরের কল রেকর্ড আর সিসিটিভি ফুটেজ দেখেই রাজবীর-সুনীলকে পাকড়াও করা হয়েছে। পুলিশের কাছে তাদের দাবি, বলবীরই তাদের নিয়োগ করেছিল নিজেকে খুন করানোর জন্য!

রাজস্থানের ভিলওয়ারা জেলার বাসিন্দা বলবীরের ধারের কারবার। ঋণের দায়ে নয়, ঋণ অনাদায়ে জীবন শেষ করার কথা ভাবলেন বলবীর। ২০ লক্ষ টাকা ধার দিয়েছেন নানা জনকে। ছ’মাসে কেউ এক টাকাও ঠেকাননি। বলবীর ঠিক করে নেন কর্তব্য! মাসখানেক আগে বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে ৫০ লক্ষ টাকার একটা জীবনবিমা করালেন। প্রথম মাসের প্রিমিয়ামও জমা দিলেন। এ বার শুরু হল তাঁর পৃথিবী ছাড়ার সাধনা। বাড়িতে মা-বাবা-স্ত্রী-সন্তান আছেন। বলবীর মারা গেলে ওই ৫০ লক্ষ টাকায় জীবন কাটাতে পারবেন ওঁরা, এই ছিল ভাবনা।

রাজেন তরফদারের ‘জীবন কাহিনী’ ছবির কথা মনে পড়তে পারে। বিমার দালাল কোনও উপায় না দেখে এক আত্মহননেচ্ছু যুবককে পাকড়ায়। বিমা করায়। শর্ত, সে এর পর যখন আত্মহত্যা করবে, বিমার টাকায় সংসার চলবে দালালের। মনে পড়তে পারে, ব্রাত্য বসুর নাটক ‘সুপারি কিলার’। জীবন-যুদ্ধে ছিন্নভিন্ন হতে হতে এক তরুণী পেশাদার খুনি ভাড়া করতে চায় নিজেকে শেষ করার জন্য। কিন্তু এই সব গল্পের পরিণতিই ছিল মিলনে। বলবীর খারোল গল্পকে হারিয়ে দিয়েছেন। রাজবীর, সুনীল তাঁকে নিরস্ত করেনি। টাকা নিয়ে আদেশ পালন করেছে।

সুনীলরাই পুলিশকে জানিয়েছে, বলবীর প্রথমে চেয়েছিলেন তাঁর মৃত্যু হোক পরিকল্পিত দুর্ঘটনায়। এগিয়েওছিলেন কিছু দূর। কিন্তু যদি শেষমেশ বেঁচে যান কোনও মতে? এই আশঙ্কা তাঁকে ফিরিয়ে আনল। কোনও ঝুঁকি না নিয়ে নিজেকে একেবারে নিকেশ করিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তই নিয়ে ফেললেন তিনি। ডাক পড়ল রাজবীর আর সুনীলের। রফা হল, কাজটা হলে ৮০ হাজার টাকা পাবে ওরা।

২ সেপ্টেম্বর ওদের সঙ্গে দেখা করে বলবীর প্রথমে ১০ হাজার টাকা আগাম দিলেন। তার পর তিন জনে মাংরোপ এলাকার একটা ফাঁকা জায়গায় চলে গেলেন। বলবীর বলে রাখলেন, বাকি টাকাটা ওঁর পকেটে আছে। ওঁকে খুন করে যেন টাকাটা ওরা নিয়ে নেয়। নির্দেশ মতোই রাজবীর ওঁর হাত-পা বেঁধে ফেলল। সুনীল শ্বাসরোধ করে বাকি কাজটুকু সেরে দিল। সোমবার ধরা পড়েছে সুনীলরা। মঙ্গলবার পুলিশ সুপার হরেন্দ্র মাহাওয়ার সংবাদমাধ্যমকে বললেন, ‘‘অত্যাশ্চর্য ব্যাপার। কিন্তু ওরা এই কথাই বলল।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Rajasthan Contract Killer Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy