ছেলে ও নাতির সঙ্গে নিরঞ্জন ঠাকুর। ছবি টুইটার থেকে সংগৃহীত।
দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে এক ছেলে, খবরটা সদ্য পেয়েছেন। পুত্রবধূ দ্বিতীয়বারের জন্য অন্তঃসত্ত্বা। রয়েছে চার বছরের এক নাতিও। সন্তান হারিয়েও অন্য ছেলে আর নাতিকেও দেশের সেবায় পাঠাতে চাইলেন বিহারের বাসিন্দা নিরঞ্জন কুমার ঠাকুর। বললেন, সামরিক বাহিনীতেই যোগ দিক অন্যরাও।
প্রতিদিন সন্ধ্যায় ফোন করে খোঁজ নেয় ছেলে। তবে বৃহস্পতিবার ফোন আসেনি ছেলের। ফোন করলেও ‘সুইচ অব’ বলছিল। এরমধ্যেই টিভিতে দেখেও ফেলেছেন যে পুলওয়ামায় হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা।
এর পরই ফোন করেন এক ক্যাপ্টেন কমান্ডার। ফোন নম্বর চাইলেন সামরিক বাহিনীতে কর্মরত ছেলের, জানতে চাইলেন বাবা এবং স্ত্রীর নাম। তার পরই জানতে পারলেন, ৪৫ ব্যাটেলিয়নের সিআরপিএফ জওয়ান তাঁর ছেলে রতন কুমার ঠাকুর আর নেই।
সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা সম্পর্কে এই তথ্যগুলি জানেন? খেলুন কুইজ
আরও পড়ুন: হামলার মূল্য চোকাতেই হবে দোষীদের, হুঁশিয়ারি মোদীর, নাম না করে কড়া বার্তা পাকিস্তানকেও
বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলায় যখন খবরটা এসে পৌঁছানোর পর থেকেই বিহারের ভাগলপুর জেলার লোদীপুর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পুলওয়ামার অবন্তীপোরায় সিআরপি কনভয়ে গাড়িবোমা হামলায় নিহত হয়েছেন এই গ্রামেরই ছেলে রতন ঠাকুর। ভেজা চোখে অসহায়তার চেয়েও আরও বেশি করে যেন ফুটে উঠছে রাগ, বিদ্বেষ, ক্ষোভ। তবে তা হামলাকারীদের বিরুদ্ধেই।
আরও পড়ুন: সিরিয়ার কায়দায় পুলওয়ামায় হামলা হতে পারে, আগাম জেনেও নেওয়া যায়নি ব্যবস্থা!
রতন ঠাকুরের বাবা নিরঞ্জন কুমার ঠাকুরের দৃপ্ত ভঙ্গী বার বার করে বুঝিয়ে দিল, ছেলে চলে যাওয়ায় তিনি শোকে পাথর হলেও দমে যাওয়ার পাত্র নন একেবারেই। পুত্রবধূর আর নাতির দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘‘এক ছেলেকে হারালেও নিজের অন্য ছেলে, নাতিকেও দেশের কাজেই পাঠাব। ওঁরা দেশের জন্যই প্রাণ দিক। এই লড়াই থেমে যাওয়ার নয়।’’
আরও পড়ুন: আগামী বছরই অবসর নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল বাবলুর, কিন্তু তার আগেই সব শেষ
সন্ত্রাসের চোখরাঙানিতেও ভয় পাননি এই ব্যক্তি। বরং সংবাদ সংস্থার প্রতিনিধিরা প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বললেন, ‘‘পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দিতে হবে। ভারত মাতার সেবায় জওয়ান হতেই পাঠাব অন্যদেরও। ভয় পেলে চলবে না’’
নিহত জওয়ান রতন কুমার ঠাকুর। ছবি টুইটার থেকে সংগৃহীত।
বিস্ফোরকভর্তি একটি গাড়ি হাইওয়েতে ঢুকে পড়ে হামলা চালিয়েছে পুলওয়ামায়, আর তাতেই প্রাণ হারিয়েছেন ৪০ জন জওয়ান। এই জওয়ানদেরই এক জন রতন কুমার ঠাকুর।
আরও পড়ুন: ইসলামাবাদকে বোঝাতে পারেনি ওয়াশিংটন, বলছেন মার্কিন বিশেষজ্ঞরা
বৃহস্পতিবার বিকেলে জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সেনা কনভয়ে আত্মঘাতী হামলা হয়। পাক মদতে পুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদ এই হামলায় যুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে। সেই হামলায় নিহত হয়েছেন ৪০ জন জওয়ান। হামলার ভয়াবহতায় শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। ক্ষোভে ফুঁসছে দেশবাসী। আর একটা সার্জিক্যাল স্ট্রাইকেরও দাবি উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই! যেন সেই একই পথে হাঁটলেন হামলায় হত জওয়ানের বাবাও। সন্তান হারানোর শোক বুকে চেপে পাল্টা লড়াইয়ের কথা বললেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy