বেলা বাড়লেও আলো ফোটেনি দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
দমবন্ধ করা পরিস্থিতি রাজধানীর। দূষণের পরিভাষায় ‘সিভিয়ার প্লাস’। আর তার জেরে এ বার দিল্লিতে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি (পাবলিক হেলথ্ এমার্জেন্সি) অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গঠিত দূষণ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ দিল্লির ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আগামী ৫ নভেম্বর পর্যন্ত রাজধানী এবং সংলগ্ন এলাকায় সমস্তরকম নির্মাণকার্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। গোটা শীতকালে কোথাও বাজি পোড়ানো যাবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে তারা। জানুয়ারির পর এই প্রথম রাজধানীর পরিস্থিতি এত ভয়ঙ্কর হল বলে জানানো হয়েছে।
বাতাসের গুণমান সূচক বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করলে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে অনুকুল বলে ধরা হয়। বাজির কানাফাটানো আওয়াজ এবং তা থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাসের জেরে দিওয়ালিতে দিল্লি এবং নয়ডার গড় একিউআই বেড়ে ৩০৬ ও ৩৫৬ -তে দাঁড়িয়েছিল আগেই। এই মুহূর্তে রাজধানীর একিউআই ৫০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সূচক পাঁচশো ছাড়ালেই তা ‘সিভিয়ার প্লাস’।
মুখে মাস্ক পরে স্কুলের পথে খুদে পড়ুয়ারা।
আরও পড়ুন: দিল্লি বিমানবন্দরে বিস্ফোরক ভর্তি ব্যাগ ঘিরে আতঙ্ক, সন্দেহ আরডিএক্স
কেন্দ্রীয় ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রক অধীনস্থ বাতাসের গুণমান নজরদারি সংস্থা ‘সফর’ জানিয়েছে, পড়শি দুই রাজ্য পঞ্জাব এবং হরিয়ানায় ফসলের গোড়া পোড়ানোর জেরে গত দু’দিনে দিল্লিতে দূষণের পরিমাণ ২৭ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে,যার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বাওয়ানার। সেখানে একিউআই ৫০০-র উপরেই ঘোরাফেরা করছে বলে জানা গিয়েছে। দিল্লি টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি, ওয়াজিরপুর, আনন্দ বিহার এবং বিবেক বিহার এলাকায় একিউআই বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৫০০, ৪৮৫, ৪৯৮ এবং ৪৮২-তে।
অন্য দিকে, দিল্লি সংলগ্ন উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে ভাসমান ধূলিকণার (পিএম ২.৫) পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রতি ঘনমিটারে ৪৯৩ মাইক্রোগ্রাম। গ্রেটার নয়ডা, নয়ডা এবং ফরিদাবাদে এই পরিমাণ যথাক্রমে ৪৮০, ৪৭৭ এবং ৪৩২ মাইক্রোগ্রাম।
ধোঁয়ায় ঢাকা রাজধানী।
দূষণের জেরে আগামী ৫ নভেম্বর পর্যন্ত দিল্লির সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি সরকার। তবে রাজধানীর এমন পরিস্থিতির জন্য পড়শি দুই রাজ্য পঞ্জাব ও হরিয়ানাকেই দুষেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। তাঁর অভিযোগ, ইচ্ছাকৃত ভাবে কৃষকদের ফসলের গোড়া পোড়াতে বাধ্য করছে ওই দুই রাজ্যের সরকার। তার জেরেই ধোঁয়ায় ঢাকা ‘গ্যাস চেম্বার’-এ পরিণত হয়েছে রাজধানী।
আরও পড়ুন: উদ্বোধনের দিন ফি, পাসপোর্ট ছাড়াই করতারপুর করিডরে ঢুকতে পারবেন ভারতীয় শিখরা
শুক্রবার সকালে টুইটারে এমন অভিযোগ তোলেন অরবিন্দ কেজরীবাল। তিনি লেখেন, ‘খট্টর (মনোহরলাল) এবং ক্যাপ্টেন (অমরেন্দ্র সিংহ)-এর সরকার কৃষকদের ফসলের গোড়া পোড়াতে বাধ্য করছেন। তার জেরেই রাজধানীতে এত দূষণ। এ নিয়ে গতকালই সেখানকার মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন।’
Delhi has turned into a gas chamber due to smoke from crop burning in neighbouring states
— Arvind Kejriwal (@ArvindKejriwal) November 1, 2019
It is very imp that we protect ourselves from this toxic air. Through pvt & govt schools, we have started distributing 50 lakh masks today
I urge all Delhiites to use them whenever needed pic.twitter.com/MYwRz9euaq
কেজরীবালের টুইট।
ধোঁয়ার জেরে রাজধানী ‘গ্যাস চেম্বার’-এ পরিণত হয়েছেন বলেও অভিযোগ তোলেন কেজরীবাল। তাঁর কথায়, ‘পড়শি রাজ্যগুলিতে ফসলের গোড়া পোড়ানোর জেরে ধোঁয়ায় ঢেকে গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়েছে দিল্লি। এই বিষাক্ত বাতাস থেকে নিজেদের বাঁচানো প্রয়োজন। তাই আজ সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলগুলিতে ৫০ লক্ষ মাস্ক বিতরণ করছি আমরা।’ বিষয়টি নিয়ে স্কুল পড়ুয়াদের পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ এবং হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরকে চিঠি লিখতেও আর্জি জানিয়েছেন কেজরীবাল, যাতে ফসলের গোড়া পোড়ানো বন্ধ রাখা যায়।
ছবি: এএফপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy