নির্ভয়া কাণ্ডের চার অপরাধী। —ফাইল চিত্র
বক্সার জেল থেকে এসে গিয়েছে ফাঁসির দড়ি। মহড়াও সারা। এখন শুধু আইনি জটিলতা কাটিয়ে নির্দেশের অপেক্ষা। তিহাড় জেলে জোর কদমে চলছে নির্ভয়া কাণ্ডের চার দোষীকে ফাঁসিতে ঝোলানোর প্রস্তুতি। তিহাড় জেলের নিজস্ব ফাঁসুড়ে না থাকায় ভিন রাজ্য থেকে আনার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলেও জেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর।
নির্ভয়া কাণ্ডের চার দোষী অক্ষয় ঠাকুর, মুকেশ সিংহ, বিনয় কুমার এবং পবন গুপ্ত তিহাড় জেলে বন্দি। আলাদা আলাদা সেলে রেখে সিসিটিভিতে নজরদারি চলে তাঁদের উপর। সাধারণত ফাঁসি হয় তিহাড়ের তিন নম্বর জেলে। সেখানেই এই চার জনের ফাঁসির প্রস্তুতি চলছে বলে জেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলের এক আধিকারিক সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বলেছেন, আমাদের কাছে কোনও ফাঁসুড়ে নেই। প্রয়োজন হলেই অন্য রাজ্য থেকে ফাঁসুড়ে নিয়ে আসা হবে।’’ এএনআই-এর দাবি, ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, বক্সার জেল থেকে ফাঁসির দড়ি এসে গিয়েছে। ‘ডামি’ দিয়ে মহড়াও সেরে ফেলা হয়েছে, যাতে নির্দেশ এলে দ্রুত তা কার্যকর করা যায়।
তবে নির্ভয়া ধর্ষকদের ফাঁসিতে ঝোলানোর ক্ষেত্রে এখনও কিছু আইনি প্রক্রিয়া বাকি রয়েছে। দোষীদের মধ্যে বিনয় কুমার দিল্লি সরকার ও কেন্দ্রের কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু গত সপ্তাহে দু’পক্ষই তা খারিজ করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়েছে। ফলে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। যদিও সম্প্রতি বিনয় জানিয়েছেন, ওই আবেদন তুলে নিতে চান তিনি।আইনজীবী তাঁকে না জানিয়েই প্রাণভিক্ষার আর্জি জানিয়েছিলেন বলে তাঁর দাবি।
অন্য দিকে সুপ্রিম কোর্টে ফাঁসির সাজা বহাল রাখার পর রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে রিট পিটিশন দাখিল করেছিলেন তিন দোষী বিনয়, মুকেশ ও পবন। কিন্তু শীর্ষ আদালত সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে। এ বার অন্য অভিযুক্ত অক্ষয় ঠাকুরও সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছেন। শীর্ষ আদালত এখনও সেই মামলায় সিদ্ধান্ত জানায়নি।
আরও পডু়ন: ১০টি ফাঁসির দড়ি চাই, নির্দেশ এল বক্সারের জেলে, নির্ভয়া-কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসির গুঞ্জন
আরও পড়ুন: নির্ভয়া-কাণ্ডে অপরাধীদের নিজের হাতেই ফাঁসি দিতে চান নাটার ছেলে মহাদেব মল্লিক
এর মধ্যেই গত সপ্তাহে হায়দরবাদে তরুণী চিকিৎসককে গণধর্ষণ ও খুন এবং অভিযুক্তদের এনকাউন্টার হয়েছে। উন্নাওয়ের তরুণীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর তাঁকে পুড়িয়ে মারা চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই দুই ঘটনাতেই দেশ জুড়ে তীব্র আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। নির্ভয়া কাণ্ডের সাত বছর পরেও এখনও কেন দোষীদের ফাঁসিতে ঝোলানো গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের একটা বড় অংশ। নানা মহল থেকে দ্রুত ফাঁসি কার্যকরের দাবিও উঠেছে। এই ঘটনাপ্রবাহের পরেই এশিয়ার বৃহত্তম জেল তিহাড়েও ফাঁসিতে ঝোলানোর বিষয়ে তৎপরতা বেড়েছে বলেই সূত্রের খবর।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে গভীর রাতে বছর কুড়ির এক তরুণীকে চলন্ত বাসে তুলে ছ’জন মিলে অকথ্য নির্যাতন ও গণধর্ষণ করেন। ওই ঘটনা নিয়ে দেশ জুড়ে তীব্র সাড়া পড়ে। ঘটনায় ছ’জনকেই দোষী সাব্যস্ত করেছিল নিম্ন আদালত। তাঁদের মধ্যে এক জন ঘটনার সময় নাবালক থাকায় সর্বোচ্চ সাজা তিন বছরের জেলের মেয়াদ শেষে ছাড়া পেয়ে গিয়েছে। ৪ জনকে ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছিল নিম্ন আদালত। রাম সিংহ নামে এক অভিযুক্ত তিহাড় জেলের মধ্যেই আত্মহত্যা করেন। নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত, শীর্ষ আদালত হয়ে সর্বশেষ আইনি প্রক্রিয়াও শেষের পথে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy