সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভে শামিল বৃদ্ধা। শুক্রবার জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে। পিটিআই
জামিয়া মসজিদ থেকে শাহিনবাগ পর্যন্ত মিছিলের ঘোষিত কর্মসূচি ছিলই। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান এবং প্রাক্তন ছাত্রদের একাংশের উদ্যোগে মিছিলের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ডিগনিটি মার্চ’। তবে আজ দুপুরে সম্মান আদায়ের এই পদযাত্রাকে ঘিরে কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হল শাহিনবাগে।
পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা মুসলিম হিসেবে নিজেদের পরিচয় তুলে ধরে ধর্মীয় স্লোগান দেওয়ায় বাধা দেন শাহিনবাগের আন্দোলনকারীরা। হাতে হাত ধরে মানবশৃঙ্খল তৈরি করে রাস্তা আটকান স্বেচ্ছাসেবীরা। জামিয়া থেকে আসা মিছিলও থেমে গেল বৃত্তের বাইরে। নমাজ পড়ার পর অবশ্য পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে ফিরে গেলেন তাঁরা।
জামিয়া থেকে আসা মিছিলকে কেন আটকানো হল? শাহিনবাগের আন্দোলনকারীদের পক্ষে স্বেচ্ছাসেবক সোনু ওয়ারসি বলেন, ‘‘এটা ধর্মীয় স্লোগান দেওয়ার জায়গা নয়। আমরা ওঁদের আগেই বলেছিলাম, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সঙ্গে এটাকে গুলিয়ে ফেলো না। এখানে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ আছেন। ধর্মের রং দিয়ে তা নষ্ট করতে পারব না।’’ জামিয়ার আন্দোলনকারীরা তো শুরু থেকেই জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীতকে আঁকড়ে লড়াই করছেন। ধর্মীয় পরিচয় তো বড় হয়ে ওঠেনি। তবে আজ এমন হল কেন? পদযাত্রার উদ্যোক্তাদের তরফে আরশাদ খান বলেন, ‘‘কোথাও একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। জাতীয় পতাকাই আমাদের লড়াইয়ের হাতিয়ার। তবে আমাদের কেউ কেউ ধর্মীয় স্লোগান লিখে এনেছিলেন। অন্য ধর্মের মানুষকে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য ছিল না। ওঁরা বাধা দেওয়া মাত্রই তাই সরে এসেছি।। সমর্থন জানাতে পাশে দাঁড়াতে চেয়েছি, বিতর্ক বাধিয়ে দূরত্ব তৈরি করতে চাই না।’’
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় আজও জাতীয় পতাকাই ঘুরেছে হাতে হাতে। গালেও রং দিয়ে আঁকা জাতীয় পতাকা। ছোট থেকে বড়— প্রায় সমস্ত বয়সিদের হাতে রকমারি পোস্টারে ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দানের এবং যাচাইয়ের বিরোধিতা। কোথাও ‘আজাদি’র স্লোগান থামছে না, তো কোথাও আওয়াজ উঠছে ‘হল্লা বোল’। জাতীয় পতাকা থেকে শুরু করে তেরঙা বেলুন— সবই বিকোচ্ছে রাস্তার পাশে।
১০ নম্বর গেটের সামনে বাঁধা মঞ্চে নাগাড়ে চলা বক্তৃতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে হওয়া পুলিশি তাণ্ডবের কথা উঠছে ঠিকই, কিন্তু তার সিংহভাগ জুড়েই নাগরিকত্ব আইন আর এনআরসি-র বিরোধিতা। ফুটপাথে বসে সংবিধানের নির্বাচিত কিছু অংশ পাঠ করছেন লেখক-লেখিকা, সিনেমা-পরিচালক, গল্পকারের দল। মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের সমান অধিকারের কথা। লড়াইয়ের রসদ জোগাড়ের জন্য যেখানে ‘ডোনেশন বক্স’ রাখা হয়েছে, ঠিক তার পাশেই ফুটপাথে পাতা মাদুরে অস্থায়ী লাইব্রেরি। সেখানে নিজের খুশিমতো বই পড়ছেন অনেকে। এক জায়গায় কাঠের জেলখানা ধরনের কাঠামো গড়ে তাতে পোঁচ পড়ছে কালো রঙের। ‘ডিটেনশন সেন্টারের মডেল’ ? উত্তর এল, ‘‘চমকটা আপাতত তোলা থাক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy