প্রতীকী ছবি।
ভারতে এখনও পর্যন্ত ব্রিটেনের করোনাভাইরাসের নতুন ‘স্ট্রেন’ (প্রকারভেদ) ধরা পড়েনি, তাই উদ্বেগের কোনও কারণ নেই বলে আজ দাবি করল কেন্দ্র। তবে দিল্লি থেকে কলকাতা, চেন্নাই থেকে মুম্বই— দেশের বিমানবন্দরগুলিতে করোনা সংক্রমণ নিয়ে নামছেন ব্রিটেন ফেরত কিছু যাত্রী। বিদেশ থেকে আগত ওই সংক্রমিত যাত্রীর শরীরে করোনার নতুন ‘স্ট্রেন’ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে আক্রান্ত ব্যক্তির ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স করার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তিরা নতুন স্ট্রেনের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন কি না বুঝতে আক্রান্তদের শরীরে করোনা ভাইরাসের সম্পূর্ণ সিকোয়েন্স করা হচ্ছে। নতুন স্ট্রেনের নমুনা পাওয়া গেলে তা বুঝে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’
চেন্নাই বিমানবন্দরে আজ ব্রিটেন ফেরত এক যাত্রীর কোভিড পজ়িটিভ ধরা পড়ে। এটি করোনার নতুন প্রজাতির সংক্রমণ কি না, তা খতিয়ে দেখতে তাঁর নমুনা পরীক্ষার জন্য পুণে পাঠানো হয়েছে। গত কাল গভীর রাতে দিল্লিতে ব্রিটেন-ফেরত পাঁচ যাত্রীর কোভিড পজ়িটিভ ধরা পড়েছে। ওই যাত্রীদের নমুনা ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল-এ পাঠানো হয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমানে মোট ২৬৬ জন যাত্রী ছিলেন। তাঁদের স্বাস্থ্য ও গতিবিধির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। গত কালই কেন্দ্র জানিয়েছিল, আজ রাত ১২টা থেকে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্রিটেনের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ থাকবে। পরবর্তী ধাপে আজ ব্রিটেন থেকে বা ব্রিটেন হয়ে আসা যাত্রীদের জন্য এক দফা সতর্কতাবিধি জারি করল নরেন্দ্র মোদী সরকার। স্বাস্থ্যসচিব বলেন, ‘‘গত ২৫ নভেম্বর থেকে ব্রিটেন থেকে আসা যাত্রীদের সম্পূর্ণ শারীরিক অবস্থা ও ভ্রমণ-ইতিহাস সরকারকে জানাতে হবে। কারা ব্রিটেন হয়ে এসেছিলেন সেই তথ্য অভিবাসন দফতর প্রতিটি রাজ্যকে পাঠিয়ে দেবে। প্রতিটি রাজ্যকে এর পর সেই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা কেমন রয়েছে, শরীরে সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিয়েছিল কি না, তার খোঁজ নিতে হবে।’’ একই সঙ্গে, গত কাল ও আজ যাঁরা ব্রিটেন থেকে ভারতে এসেছেন, তাঁদের প্রত্যেকের আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। যাঁদের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গিয়েছে, তাঁদের প্রাতিষ্ঠানিক নিভৃতাবাসে পাঠানো হয়েছে। করা হচ্ছে জিনোম সিকোয়েন্স। যাতে বোঝা যায়, করোনার কোন ‘স্ট্রেন’-এর মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন ওই ব্যক্তি। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও আক্রান্তের শরীরে নতুন ‘স্ট্রেন’ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন রাজেশ ভূষণ।
করোনাভাইরাস ঘন ঘন চরিত্র বদল করায় প্রশ্ন উঠেছে, নতুন ওই ‘স্ট্রেন’-এর বিরুদ্ধে কি আদৌ কার্যকর হবে ফাইজ়ার, ভারত বায়োটেক বা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষেধকগুলি? বিষয়টি নিয়ে প্রতিষেধক কমিটির প্রধান তথা নীতি আয়োগ সদস্য (স্বাস্থ্য) ভি কে পল বলেন, ‘‘এটা ঠিক ভাইরাসের ওই নতুন স্ট্রেন প্রবল ছোঁয়াচে, কিন্তু আমাদের দেশে যে প্রতিষেধকের কাজ চলছে তা সব দিক মাথায় রেখেই তৈরি হচ্ছে।’’ বিশেষজ্ঞদের মতে, যেহেতু ওই ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনে বিশেষ পরিবর্তন হচ্ছে না, ফলে প্রতিষেধকের কার্যকারিতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলার সম্ভবনা কম। আজ ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স ফেস্টিভ্যালে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে বিজ্ঞানের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল করোনা অতিমারি রুখতে প্রতিষেধক বানানো।’’
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় সংস্থা সায় দিলে পিয়ারলেসে পরীক্ষা রুশ টিকার
আরও পড়ুন: ট্যাব কিনতে টাকা দেবে সরকার
করোনার ওই নতুন ‘স্ট্রেন’ ছড়িয়ে পড়া রুখতে সক্রিয় হয়েছে রাজ্যগুলি। গোড়া থেকেই সংক্রমণের নিরিখে শীর্ষে থাকা দিল্লি ও মহারাষ্ট্র অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ যাত্রায় সময় থাকতেই তৎপর হয়েছে। দিল্লি সরকার আজ জানিয়েছে, প্রত্যেক বাড়ি ঘুরে দেখা হবে কোন কোন ব্যক্তি গত দু’সপ্তাহের মধ্যে ব্রিটেন থেকে ফিরেছেন। খোঁজ পেলে সেই সব ব্যক্তিদের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হবে, তাঁদের দেহে করোনার নতুন ‘স্ট্রেন’ আছে কিনা। গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ব্রিটেন থেকে ফেরা যাত্রীদের তালিকা তৈরি করতে শুরু করেছে তেলঙ্গানা এবং কর্নাটক সরকার।
করোনার নতুন ‘স্ট্রেন’-এর খবর প্রকাশ্যে আসতেই ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলি থেকে আসা যাত্রীদের জন্য কোয়রান্টিনের নতুন নিয়ম জারি করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। নিয়ম অনুযায়ী, ওই দেশগুলি থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিন কোনও কোয়রান্টিন কেন্দ্রে থাকতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy