নয়া শিক্ষানীতি নিয়ে ভাষণ প্রধানমন্ত্রীর। ছবি: পিটিআই।
চার বছরের ‘নমনীয়’ স্নাতক পাঠ্যক্রম আগামী দিনে পড়ুয়াদের মস্ত সুবিধা দেবে বলে ফের দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর মতে, এতে কাজের বাজারের প্রয়োজন মেপে নিজেকে তৈরি করার সুবিধা মিলবে। কোনও বিষয়ে ভর্তি হওয়ার পরে তা ভাল না-লাগলে, পাওয়া যাবে তা পাল্টে নেওয়ার সুযোগ। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের একাংশ থেকে পড়ুয়া, অনেকেরই আশঙ্কা— উচ্চশিক্ষায় মাঝপথে পড়া ছেড়ে দেওয়ার (ড্রপ-আউট) প্রবণতা বাড়তে পারে এর জেরে। আবার মনুর কথাও উল্লেখ করলেন মোদী, যা বিতর্ক বাড়িয়েছে।
নতুন শিক্ষানীতি অনুযায়ী, আগামী দিনে স্নাতকের পাঠ্যক্রম হবে ৩/৪ বছরের। ৪ বছরের স্নাতকের পাঠ শেষ করলে, সুযোগ মিলবে সরাসরি পিএইচডি-র। চাকরিমুখী হলে, যথেষ্ট ৩ বছরই। কেউ এক বা দু’বছর পড়ে কলেজ ছেড়ে দিলেও জলে যাবে না তা। এক থেকে চার বছর শেষে যথাক্রমে সার্টিফিকেট, ডিপ্লোমা, ডিগ্রি, অনার্স। কোনও কারণে এক টানে স্নাতক বা স্নাতকোত্তরের পাঠ শেষ করতে না-পারলেও, পরে সেখান থেকেই তা শেষের সুযোগ। আগের গ্রেড বা নম্বর জমা থাকবে ডিজিটাল লকারে। শুক্রবার এই নতুন ব্যবস্থা সম্পর্কেই মোদীর দাবি, এতে পছন্দের বিষয় পরখ করে পড়ার সুযোগ বাড়বে। আগামী দিনে কাজের বাজারে টিকে থাকতে যে ভাবে প্রথাগত শিক্ষার চৌকাঠ পেরোনোর পরেও ক্রমাগত নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে যেতে হবে, তারও ভিত তৈরি করবে এই নতুন ব্যবস্থা। এতে কাজের বাজারের উপযুক্ত হয়ে কলেজের চৌকাঠ টপকানোর সম্ভাবনা বাড়বে বলে মত কে কস্তুরীরঙ্গনেরও। যাঁর নেতৃত্বাধীন কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তৈরি হয়েছে এই নতুন শিক্ষানীতি।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যে দেশে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারে কম বয়সে এমনিতেই কাজে যোগ দেওয়ার চল কিংবা প্রবণতা রয়েছে মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে দেওয়ার, সেখানে এর জেরে কলেজছুটের সংখ্যা আখেরে বাড়বে না তো?
আরও পড়ুন: কোঝিকোড়ে নামার সময় পিছলে গিয়ে দু’টুকরো বিমান, হত অন্তত ১৭, আহত বহু
আরও পড়ুন: এক দিনে ৫২ জন মারা গেলেও রাজ্যে কমল সংক্রমণের হার
মুখস্থে জোর আর পাঠ্যক্রমের বোঝা কমিয়ে জীবনে প্রয়োগযোগ্য শিক্ষায় গুরুত্বের কথা এ দিন ফের বলেছেন মোদী। দাবি করেছেন, পঞ্চম (পারলে অষ্টম) শ্রেণি পর্যন্ত মাতৃভাষায় ক্লাসে পড়ানো হলে, সুবিধা হবে বহু পড়ুয়ার। কিন্তু তেমনই বিতর্কের মুখে পড়েছে তাঁর আর এক কথা। তিনি বলেছেন, নতুন শিক্ষানীতির লক্ষ্য এমন বিশ্ব নাগরিক গড়ে তোলা, যারা নিজেদের শিকড় ভুলবে না। নিজের শিকড় থেকে পৃথিবী, মনু থেকে মানবিকতা, অতীত ও ভবিষ্যৎ সবই থাকবে নখদর্পণে। তাতে অনেকের প্রশ্ন, তবে কি মনুবাদী শিক্ষারই ইঙ্গিত দিলেন মোদী?
২২শে শ্রাবণে শিক্ষানীতি নিয়ে বলতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথকেও টেনেছেন মোদী। মনে করিয়েছেন, বিশ্বকবি এমন উচ্চশিক্ষা চাইতেন, যা শুধু জ্ঞান দান করবে না। বরং সমস্ত অস্তিত্বের সঙ্গে সদ্ভাব তৈরি করবে জীবনের। নতুন শিক্ষানীতি তৈরির ক্ষেত্রে তা মাথায় রাখা হয়েছে বলে দাবি প্রধানমন্ত্রীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy