সরব: সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে রাহুল গাঁধী। পিটিআই
দশ বছর আগে এ রকমই একটি লোকসভা ভোটের ঠিক আগে চাষিদের ৬০ হাজার কোটি টাকার ঋণ মকুব করে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় ফেরার পথ প্রশস্ত করেছিলেন মনমোহন সিংহ।
দশ বছর পরে, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের মুখে রাহুল গাঁধী প্রতিশ্রুতি দিলেন, ক্ষমতায় এলে চাষিদের ঋণ মকুব করা হবে। আজ সংসদের বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একই সঙ্গে কংগ্রেস সভাপতির ঘোষণা, ‘‘যত ক্ষণ না চাষিদের ঋণ মকুব হচ্ছে, তত দিন মোদীজিকে ঘুমোতে দেব না। আর যদি প্রধানমন্ত্রী ঋণ মকুব না-করেন, তা হলে আমরা ২০১৯-এ করব।’’
হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে কৃষিঋণ মাফের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কংগ্রেস। তিন রাজ্যেই ক্ষমতায় এসে একে একে ঋণ মাফের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছেন কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীরা। মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়ে ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। বাকি রাজস্থান। যা শুধু সময়ের অপেক্ষা। এই তিন রাজ্যের ফল খতিয়ে দেখে কংগ্রেস নেতৃত্ব যে কৃষিঋণ মকুবকেই সাফল্যের চাবিকাঠি হিসেবে দেখছেন, তা আজ রাহুলের কথায় স্পষ্ট। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা ১০ দিনে ঋণ মাফের কথা বলেছিলাম। এক দিনে হয়ে গিয়েছে। মানে ১০ গুণ ভাল কাজ।’’
আরও পড়ুন: লুট হয়েছে সব! আত্মহত্যা করার আগে লিখেছিলেন চাষি
উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র বা অসমের মতো বিজেপিশাসিত রাজ্য কৃষিঋণ মকুবের সিদ্ধান্ত নিলেও, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি আগেই জানিয়েছেন, বিপুল আর্থিক দায় নিয়ে জাতীয় স্তরে ঋণ মকুব সম্ভব নয়। কিন্তু রাহুলের অভিযোগ, ‘‘মোদীজি গত সাড়ে চার বছরে ১৫-২০ জন শিল্পপতির ৩ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ মাফ করে দিয়েছেন। সাধারণ মানুষের টাকা তাঁদের পকেটে পুরে দিয়েছেন। মোদীজি দু’টি ভারত তৈরি করেছেন। একটি ভারত ১৫-২০ জনের, ধনীদের ঋণ মাফের, ব্যক্তিগত বিমানের। আর অন্য ভারত গরিব জনতা, মজদুর, কৃষক, ছোট দোকানদারদের।’’
আরও পড়ুন: জাত-ধর্মের ভিত্তিতে ক্লাসে বসানো হল স্কুলপড়ুয়াদের!
কৃষিঋণ মাফ করা নিয়ে বাকি বিরোধীদেরও পাশে টানার চেষ্টা করছেন রাহুল। তাঁর বক্তব্য, মোদী সাড়ে চার বছরে কৃষকদের এক টাকাও মাফ করেননি। বিরোধীরা একজোট হয়ে তাঁকে দিয়ে ঋণ মাফ করিয়ে দেখাবেন। আজ কংগ্রেস সরকারের ঋণ মকুবের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সিপিএম-সহ অন্য বিরোধী দলগুলিও।
কিন্তু ঋণ মকুব করতে গিয়ে রাজ্যগুলির ঘাটতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, সেই প্রশ্নও উঠেছে। রাহুলের যুক্তি, ‘‘অনিল অম্বানীর ৪৫ হাজার কোটি টাকার ধার রয়েছে। ওই টাকায় হয়তো রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ— সকলের ঋণ মাফ হয়ে যেতে পারে।’’
রাহুলের মন্তব্য নিয়ে পাল্টা আক্রমণে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে ঘুমোতে না দেওয়ার কথা বলে রাজনৈতিক বিতর্কের মান আরও নীচে টেনে নামানো হল। যারা ৬০ বছর দেশের মানুষকে দুর্নীতি করে ঘুমোতে দেয়নি, তাদের মুখে এ কথা মানায় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy