বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: প্রেম সিংহ
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত কাল লোকসভাতেই আঙুল তুলে শাসিয়েছিলেন বিরোধী শিবিরের নেতা আসাদউদ্দিন ওয়েইসিকে। আজ নিজের দলের মন্ত্রী-সাংসদদের হুঁশিয়ারি দিলেন প্রধানমন্ত্রী। সাংসদদের বৈঠকে বললেন, ‘‘মুঝে সবকো ঠিক করনা আতা হ্যায়।’’
তিনশো পার করে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরে সংসদের প্রথম অধিবেশনের শুরুতেই দলের সাংসদ ও মন্ত্রীদের প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন, সংসদে নিয়মিত হাজিরা দিতে হবে। সারাক্ষণ সভায় বসে থাকতে হবে। কিন্তু অধিবেশন প্রায় এক মাস গড়ানোর পরে ঢিলেমি এসেছে সাংসদদের মধ্যে। এমনকি, সংসদে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সময়ও হাজির থাকছেন না সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরাই। তা নিয়ে বিরোধী দলের নেতারা যেমন সংসদে প্রতিবাদ করছেন, তেমনই চিঠি লিখে নালিশ জানাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীকে।
সংসদ চলাকালীন প্রতি মঙ্গলবার বিজেপির সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংস হলেও সরকার যে হেতু নতুন, তাই সপ্তাহের অন্য দিনেও সাংসদদের ছোট ছোট গোষ্ঠী করে বৈঠক করছেন তিনি। যেমন আগামিকাল প্রধানমন্ত্রী ফের বসবেন ৪৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী সাংসদদের সঙ্গে। এর আগে যুব, মহিলা, তফসিলি জাতি, জনজাতি, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির সাংসদদের নিয়ে আলাদা আলাদা বৈঠক করেছেন। আর প্রতিটি বৈঠকেই জোর দিয়েছেন, কী করে শৃঙ্খলা আনতে হবে, নির্বাচনী কেন্দ্রকে কী করে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে, অফিসারদের নিজেদের থেকে ‘ছোট’ মনে না-করে তাঁদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে কী করে কাজ করতে হবে— এই সব বিষয়ের উপরে।
কিন্তু গত এক মাস ধরে পাখি পড়া পড়ালেও সে সব কথা অনেক মন্ত্রীর এক কান দিয়ে ঢুকে অন্য কান দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছে। তাই সংসদে মন্ত্রীদের গরহাজিরা নিয়ে মোদী আজ ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিজেপি সাংসদদের কাছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ফার্স্ট ইম্প্রেশন ইজ লাস্ট ইম্প্রেশন। বিরোধী দলের নেতা আমাকে চিঠি লিখে নালিশ জানাচ্ছেন। মন্ত্রীরাই যদি সংসদে না থাকেন, তা হলে সাংসদদের থাকতে বলি কী করে? আমি সবাইকে ঠিক করতে জানি।’’
শুধু এটুকু হুঁশিয়ারি দিয়েই মোদী ক্ষান্ত হননি। সংসদীয়মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীকে বানিয়ে দিয়েছেন ‘ক্লাস মনিটর’। যে সব মন্ত্রী সংসদে থাকছেন না, তাঁদের নাম লিখে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সেই তালিকা তাঁর কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
সম্প্রতি বাজেট নিয়ে লোকসভায় দু’দিন ধরে আলোচনা চলে। কিন্তু অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনই হাজির ছিলেন না। প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরকে বসিয়ে রেখেছিলেন। তিনিও সব সময় থাকেননি। তৃণমূলের সৌগত রায়-সহ বিরোধীদের অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, বাজেট নিয়ে আলোচনায় পূর্ণমন্ত্রীই থাকছেন না কেন? অনুরাগ অবশ্য পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে চিড়ে ভেজেনি। নালিশ পৌঁছয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
বিজেপি সূত্রে বলা হচ্ছে, কোনও মন্ত্রক নিয়ে আলোচনা হলে তার মন্ত্রীকে তো সংসদে উপস্থিত থাকতেই হবে। এর বাইরেও সব মন্ত্রীকে প্রতিদিন দু’ঘণ্টা উপস্থিত থাকার রোস্টার বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনেক পূণর্মন্ত্রীই প্রতিমন্ত্রীর হাতে দায়িত্ব ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। আজ প্রধানমন্ত্রীর দাওয়াইয়ের পর অবশ্য মন্ত্রীরা হাজির ছিলেন। কিন্তু দলের অনেকেই মনে করছেন, কয়েক দিন পর আবার ‘ফাঁকিবাজি’ শুরু হবে। কারণ, প্রথম জমানাতেও প্রধানমন্ত্রী বারবার সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy