ছবি: পিটিআই।
সামনে এনসিসি ক্যাডেটরা। পাশে তিন সামরিক বাহিনীর প্রধান, চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ। এমন অরাজনৈতিক মঞ্চেই আগাগোড়া রাজনৈতিক বক্তৃতা দিয়ে কার্যত দিল্লি ভোটের প্রচার শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, এনপিআর, এনআরসি-র প্রতিবাদে শাহিন বাগ উত্তাল। গত কয়েক দিন ধরে সেই শাহিন বাগকে কেন্দ্রে রেখেই দিল্লিতে পুরোদস্তুর মেরুকরণের রাজনীতি করছে বিজেপি। অমিত শাহ যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মোদী আজ সাম্প্রদায়িকতার দায় চাপালেন বিরোধীদের উপরেই। ‘হিন্দুত্ব’ আর ‘জাতীয়তাবাদ’-এর সব উপাদানই ছুঁয়ে গেলেন। ‘ছটফটে’ যুবকদেরও ‘টক্কর’ দেওয়ার কথা বললেন কৌশলে। দিল্লি ভোটের আগে প্রথম বক্তৃতায় বিজেপির অন্য নেতাদের মতো উগ্র হলেন না বটে, তবে চমকে দিলেন নিজের দলের নেতাদেরও। নোটবন্দির সময় দাবি করেছিলেন মাওবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি পুরোপুরি বন্ধ হবে। আজ মোদী কবুল করলেন ওই সব সমস্যা এখনও ‘বহাল’ রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এ দিন রামজন্মভূমির কথা বলেছেন। তুলেছেন সার্জিকাল স্ট্রাইকের প্রসঙ্গ। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ঘর ছাড়তে বাধ্য করার ঘটনাও সামনে এনেছেন। এ সবের পিছনে সরকার ও প্রশাসনকে দুর্বল করার অভিযোগ তুলে পূর্ববর্তী সরকারের ভাবনাকেই আক্রমণ করেছেন। গেরুয়া শিবিরের পছন্দের নিশানা ‘পাকিস্তান’ বারবার উঠে এসেছে বক্ততায়। বলেছেন, ‘‘প্রতিবেশী দেশ তিনটি যুদ্ধ হেরেছে। পাকিস্তানকে কুপোকাত করতে ৭-১০ দিনের বেশি সময় নেয় না ভারতের সেনা। কিন্তু দশকের পর দশক ধরে ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে এসেছে তারা। আগে সেনাকে অভিযানের অনুমতি দেওয়া হত না। আমাদের সময় সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, বিমান হানা হয়েছে।’’ নাম না-করে রাহুল গাঁধীকেও খোঁচা দেন, রাফালের মতো যুদ্ধবিমান আনতে দেরি হওয়ার জন্য। প্রধানমন্ত্রীর অন্যতম লক্ষ্য ছিল, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিরোধীদের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে হিন্দু ভোটারদের উস্কে দেওয়া। অন্তত বিরোধীরা তেমনটাই মনে করছেন। সে কারণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাদের সরকার নতুন নাগরিকত্ব আইন এনেছে। কিন্তু রাজনৈতিক দল নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক কব্জা করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। কার হিতে এ কাজ হচ্ছে? এক সময় শত্রু সম্পত্তি আইনের বিরোধ করেছেন যাঁরা, তাঁরাই সিএএ-র বিরোধী। সাত দশকের পুরনো সমস্যা সমাধানের উদ্যোগেও যাঁরা সাম্প্রদায়িক রং লাগাচ্ছেন, তাঁদের আসল মুখ দেখছে জনতা। দেশ চুপ আছে, কিন্তু বুঝছে।’’
আরও পড়ুন: কেন বেকারি ও হিংসা? প্রশ্ন তুলুন: জয়পুরে রাহুল
মোদীর অবশ্য দাবি, উন্নয়নের প্রশ্নে তিনি হিন্দু-মুসলিম ভেদাভেদ করেননি। তিন তালাকে মহিলা মুসলিমদের সুরাহা হয়েছে। দিল্লির অবৈধ কলোনি বৈধ হওয়ার সুফল সকলেই পেয়েছেন। কিন্তু এ সব বলতে গিয়েই প্রধানমন্ত্রী বলে ফেলেন, ‘‘তবু কেউ বিচ্ছিন্নতাবাদী বক্তৃতা দিচ্ছেন, কখনও ভারতের বিরুদ্ধে বিষ ছড়াচ্ছেন, তেরঙ্গার অপমান হচ্ছে, নকশালরা বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে, সন্ত্রাসবাদী হামলা হচ্ছে, রোজ লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতির খবর আসছে। দীর্ঘ সময়ে ব্যধি থাকায় তা শরীরের অংশ হয়ে গিয়েছে। নতুন ভারতের যুবকরা এটা মেনে নিতে রাজি নয়।’’
বিরোধীদের প্রশ্ন, মোদীর অতীতের দাবি মতো নোটবন্দিতে তবে এগুলি মিটে যায়নি? প্রধানমন্ত্রীর মুখে মাওবাদ, জঙ্গি হানা, দুর্নীতির কথা শুনে বিস্মিত বিজেপিরও অনেকে। তাঁরা বলছেন, হয়তো পুরনো বিষয়ের কথা বলতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। টাটকা ঘটনা তো ঘটেনি!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy