Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
সাংসদেরা সরব, রা নেই মন্ত্রীদের

‘পুলিশের অস্ত্র কি সাজিয়ে রাখতে?’

শাসক দলের মহিলা সাংসদ এবং নেতারা এনকাউন্টারকে স্বাগত জানালেও চুপ ছিলেন মন্ত্রীরা। দুপুরে এনকাউন্টারের সমর্থনে টুইট করলেও বিকেলে তার দায় অস্বীকার করেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:৩৮
Share: Save:

হায়দরাবাদে গণধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্তদের নিহত হওয়ার খবর আসার পরে মোটের উপরে পুলিশের পাশেই দাঁড়িয়েছেন বিভিন্ন দলের মহিলা সাংসদেরা। তবে বিজেপির চেষ্টা ছিল দু’দিক সামলানোর। শাসক দলের মহিলা সাংসদ এবং নেতারা এনকাউন্টারকে স্বাগত জানালেও চুপ ছিলেন মন্ত্রীরা। দুপুরে এনকাউন্টারের সমর্থনে টুইট করলেও বিকেলে তার দায় অস্বীকার করেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।

বিজেপি সাংসদ মীনাক্ষী লেখি আজ লোকসভায় বলেন, ‘‘পুলিশকে সাজিয়ে রাখার জন্য হাতিয়ার দেওয়া হয়নি!’’ প্রশ্ন ওঠে তা হলে কি উন্নাও ধর্ষণ কাণ্ডে সদ্য বহিষ্কৃত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গার ও তার প্রধান সহযোগী শশী সিংহকেও এনকাউন্টার করে মেরে ফেলাই যথাযথ ছিল? লেখির কথায়, ‘‘অভিযুক্ত যখন পালাচ্ছে, তখন পুলিশকে হাতিয়ার তুলে নিতেই হবে। কুলদীপ তো পালায়নি।’’ হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘এতে মেয়েটির আত্মা শান্তি পেয়েছে। আমি পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই।’’ জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রধান রেখা শর্মার কথায়, ‘‘বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি চেয়েছিলাম। তবে ঘটনার সময়ে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ তা তারিফযোগ্য।’’

কয়েক দিন আগেই ধর্ষণকারীদের ‘জনসমক্ষে পিটিয়ে মারা উচিত’ বলে মন্তব্য করে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন সমাজবাদী পার্টির রাজ্যসভার সাংসদ জয়া বচ্চন। আজ তাঁর মন্তব্য, ‘‘দের আয়ে দুরস্ত আয়ে!’’ এর আগে জয়ার বক্তব্যকে সমর্থন করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। দল তখন তাঁর পাশে দাঁড়ায়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিনও বলেছেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনার মোকাবিলায় আইনকে আরও শক্তিশালী করা দরকার।’’ এ দিকে আজও মিমি টুইট করেছেন, ‘এখন তোমার আত্মা শান্তি পাবে’।

আরও পড়ুন: ‘ওকে যেখানে মেরেছে, সেখানে আমাকেও মারুক’

হায়দরাবাদ পুলিশের এনকাউন্টারকে সমর্থন করেছেন আরও দুই তৃণমূল সাংসদ দেব এবং নুসরত। দেবের টুইট: ‘এর প্রয়োজন ছিল’। আর নুসরত লিখেছেন, ‘অবশেষে... সুবিচার দেওয়ার জন্য বিচার/আইন ব্যবস্থার কারও ব্যাটন হাতে তুলে নেওয়া দরকার ছিল। ...অপরাধীদের আর অস্তিত্ব নেই’।

বিএসপি নেত্রী মায়াবতীর বক্তব্য, হায়দরাবাদের পুলিশের কাছ থেকে ‘অনুপ্রেরণা’ নেওয়া উচিত উত্তরপ্রদেশ এবং দিল্লি পুলিশের। তাঁর কথায়, ‘‘হায়দরাবাদ পুলিশ যা করেছে, তা প্রশংসাযোগ্য। উত্তরপ্রদেশে সব জেলায় প্রতিনিয়ত এই ঘটনা ঘটছে। বাচ্চা মেয়ে, বয়স্ক মহিলা কাউকে ছাড়া হচ্ছে না। জঙ্গলের রাজত্ব চলছে।’’

প্রাক্তন ও বর্তমান সাসংদদের এ হেন মন্তব্যের ফলে প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি যাঁরা আইন তৈরি করেন তাঁরাই প্রকারান্তরে মেনে নিচ্ছেন যে আইনের রাস্তায় চলা অর্থহীন? আদালত সুবিচার দিতে পারে না? এই প্রশ্নের জবাবে কিন্তু পুলিশের আচরণের তীব্র নিন্দা করেছেন বিজেপি-রই সাংসদ মেনকা গাঁধী। তিনি বলেন, ‘‘যা হয়েছে তা এই দেশের জন্য ভয়ানক।... চাইলেই যাকে খুশি এ ভাবে মারতে পারেন না আপনি। আইন হাতে তুলে নিতে পারেন না। আদালতে তো ওদের (অভিযুক্তদের) ফাঁসিই হত।’’

লোকসভার কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর বলছেন, ‘‘বিচারব্যবস্থার বাইরে গিয়ে খুন সামাজিক আইন অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য নয়। তবে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। কী ঘটেছিল তা যত ক্ষণ না প্রকাশ্যে আসছে, তত ক্ষণ এ নিয়ে নিন্দা করা উচিত নয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Hyderabad Encounter Parliament
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy