—প্রতীকী চিত্র। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
প্রেমিকাকে দুষ্কৃতীদের হাত থেকে বাঁচাতে পারেননি। সেই গ্লানিতে আত্মঘাতী হয়েছিলেন এক যুবক। আর সেই মৃত্যুই শেষমেশ ধরিয়ে দিল অপরাধীদের। সামনে নিয়ে এল ভয়ঙ্কর গণধর্ষণের ঘটনা, যা ২০১২ সালে রাজধানীর বুকে ঘটে যাওয়া নির্ভয়া কাণ্ডের স্মৃতিকে উস্কে দিল আরও এক বার।
রাজস্থানের বাঁশওয়ারা জেলার মালাবস্তিতে এমনই ঘটনা ঘটেছে। গত ১৪ জুলাই সেখানে প্রভু ওরফে বাপুড়া নামের এক যুবক আত্মহত্যা করেন। নিহতের বাবা অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করলে, তদন্তে নামে পুলিশ। গত ২৬ জুলাই জিতেন্দ্র চারপোতা নামের এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে সামাজিক দুষ্কর্ম এবং অপহরণের মামলা দায়ের হয়। জিতেন্দ্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রবিবার সুনীল চারপোতা, বিকাশ, নরেশ গুর্জর এবং বিজয় নামেরও আরও চার জনের হদিশ মেলে। সোমবার তাদের জেলা আদালতে হাজির করানো হলে বিষয়টি সামনে আসে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দলিত সম্প্রদায়ের ১৯ বছরের এক তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল প্রভুর। ১৩ জুলাই রাত ১০টা নাগাদ বাঁশওয়ারা থেকে প্রেমিকাকে বাড়ি পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময় লোহার রড এবং তরোয়াল নিয়ে রাস্তায় তাঁদের উপর চড়াও হয় তিন দুষ্কৃতী। প্রথমে মেয়েটিকে টেনে নামায় তারা। তার পর প্রভুকে বেধড়ক মারধর করে। ছিনিয়ে নেওয়া হয় তাঁর মোবাইল। তাঁকে একা গ্রামে ফিরে যেতে বাধ্য করে। কিন্তু সেই অবস্থায় গ্রামের ফিরে গেলেও, বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছতে পারেননি প্রভু। অপমান এবং গ্লানিতে রাস্তা ধারে একটি গাছে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
আরও পড়ুন: অসমে বাতিল নাগরিকদের তালিকা আর যাচাই নয়, এনআরসি মামলায় জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট
বাঁশওয়ারা পুলিশের সার্কল ইনস্পেকটর পার্বতীলাল জানিয়েছেন, প্রভু ঘটনাস্থল থেকে চলে গেলে ওই তরুণীকে টেনে হিঁচড়ে স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। একে একে তাঁকে গণধর্ষণ করে। তাতেই ক্ষান্ত হয়নি অভিযুক্তরা। এর পর আরও দুই বন্ধু নরেশ এবং বিজয়কে ফোন করে ডেকে আনে। নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে ওই তরুণীকে ফের ধর্ষণ করে ওই দু’জন। অকথ্য শারীরিক অত্যাচারে জ্ঞান হারান ওই তরুণী। সেই অবস্থাতেই ভোর চারটে নাগাদ তাঁকে রাস্তার ধারে ফেলে চলে যায় দুষ্কৃতীরা। নির্যাতিতা কোনওরকমে প্রাণে বেঁচে গেলেও, তাঁর গর্ভে বেডে় ওঠা দু’মাসের ভ্রুণটিকে বাঁচাতে পারেননি চিকিৎসকরা।
পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে থানায় যাননি নির্যাতিতা। ঘটনার প্রায় তিন সপ্তাহ পর, প্রভুর আত্মহত্যার তদন্ত চলাকালীন অভিযুক্ত জিতেন্দ্রর স্ত্রীর কাছ থেকে তাঁর মোবাইলটি উদ্ধার হয়। তাতে নির্যাতিতার নম্বর থেকে ওই নম্বরে বহু বার ফোন আসতে দেখা যায়। সেই সূত্র ধরেই ওই তরুণীর কাছে পৌঁছনো সম্ভব হয়।
আরও পড়ুন: যৌন হেনস্থা না করলেও অশ্লীল কথা বলত বাবা, এবার মুখ খুললেন শ্বেতার মেয়ে
সেই সময়ও চিকিৎসাধীন ছিলেন ওই তরুণী। সেই অবস্থাতেই পুলিশকে গোটা ঘটনার বিবরণ দেন তিনি। তাঁর বয়ানের উপর ভিত্তি করে অভিযুক্ত পাঁচ জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, অপহরণ এবং তফসিলি জাতি ও উপজাতি আইনে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা দায়ের হয়। সোমবার জেলা আদালতের সামনে তোলা হলে বিচারবিভাগীয় হেফাজত হয় তাদের। আগেও পুলিশের খাতায় নাম উঠেছে অভিযুক্ত জিতেন্দ্রর। এমনকি তাকে পাকড়াও করতে পাঁচ হাজার টাকার পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল। চলতি সপ্তাহের শেষে ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে বয়ানও রেকর্ড করা হবে নির্যাতিতার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy