মালাবার নৌ মহড়া— ফাইল চিত্র।
চিনা ফৌজের আগ্রাসী আচরণের কারণে লাদাখের পাশাপাশি উত্তেজনার পারদ চড়ছে দক্ষিণ চিন সাগরেও। এই আবহে মঙ্গলবার থেকে বঙ্গোপসাগরে শুরু হল মালাবার নৌ মহড়া। ভারত, আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে গঠিত চতুর্দেশীয় অক্ষ বা ‘কোয়াড’-এর এই নৌ মহড়া বর্তমান প্রেক্ষাপটে বেজিংয়ের প্রতি ‘বার্তা’ বলেই মনে করছেন সামরিক ও কূটনীতি বিশ্লেষকদের একাংশ।
উন্মুক্ত এবং অবাধ সমুদ্র বাণিজ্যপথ তৈরিতে গঠিত ‘কোয়াড’ ইতিমধ্যেই ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের ‘মাথাব্যথার’ কারণ হয়েছে। ‘কোয়াড’-এর মোকাবিলায় পাল্টা জোট গঠনের তৎপরতাও শুরু হয়েছে বেজিংয়ের তরফে। এই প্রেক্ষাপটে ১৩ বছর পর মালাবার নৌ মহড়ায় অস্ট্রেলিয়ার অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ‘কোয়াড’-কে ‘ন্যাটো’-র ধাঁচে সামরিক অবয়ব দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হল বলে মনে করা হচ্ছে।
অক্টোবর মাসের গোড়ায় টোকিয়োয় চার দেশের বিদেশমন্ত্রী বিশেষ আলোচনাসভায় যোগ দেন। সেখানেই অস্ট্রেলিয়াকে মালাবার নৌ মহড়ার অন্তর্ভুক্ত করার প্রসঙ্গ ওঠে। ভারত-সহ সবক’টি দেশ এতে সম্মতি দেয়। এর পরে করোনা পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল মাধ্যমেই সে সব নিয়ে আলোচনা চলছিল। অস্ট্রেলিয়ার অন্তর্ভুক্তির পর অক্টোবরের শেষ দিকে নয়াদিল্লির আলোচনাসভায় বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।
আরও পড়ুন: রাজ্যসভায় ৩৮-এ নেমে গেল কংগ্রেসের আসন, সংসদের ইতিহাসে প্রথম বার
১৯৯২ সাল থেকে আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক মালাবার নৌ মহড়া শুরু করেছিল ভারত। ২০০৭ সালে অস্থায়ী সদস্য হিসেবে তাতে যোগদান করে অস্ট্রেলিয়া। সে বার জাপান এবং সিঙ্গাপুরকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু ওই দেশগুলি অংশগ্রহণ করার পরে আপত্তি জানায় চিন। তার জেরে পরবর্তী প্রায় দু’দশক ধরে মালাবার দ্বিদেশীয় মহড়া হিসেবেই চলে আসছিল।
আরও পড়ুন: ভিয়েনায় ধারাবাহিক জঙ্গি হানা, গুলিতে নিহত ৩, খতম ১ হামলাকারীও
কিন্তু দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের আধিপত্য বাড়তে থাকায় ২০১৫ সালে জাপানকে মালাবার নৌ মহড়ার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০১৭ সালে সেই ত্রিদেশীয় মহড়ায় পর্যবেক্ষক হিসেবে যোগ দিতে চেয়ে অনুরোধ জানায় অস্ট্রেলিয়া। চিনের আপত্তির কারণে প্রাথমিক ভাবে নিয়ে দিল্লির তরফে দ্বিধা ছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভিডিয়ো বৈঠকের পর জট কেটে যায়। লাদাখে চিনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধের প্রেক্ষিতে অস্ট্রেলিয়াকে নৌ মহড়ায় অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়ে মোদী সরকার বেজিংকে কড়া বার্তা দিল বলেই মত কূটনীতিবিদদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy