কোঝিকোড়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই বিমান। ছবি: সংগৃহীত।
রাত প্রায় পৌনে আটটা। বাইরে তখন অঝোরে বৃষ্টি হচ্ছে। সেই বৃষ্টির মধ্যে হঠাত্ একটা বিকট শব্দ। তার পরই চিত্কার, আর্তনাদ। প্রথমে আন্দাজ করতে পারেননি যে, এত বড় একটা কাণ্ড ঘটে গিয়েছে। বাইরে বেরোতেই আতঁকে উঠেছিলেন। এমনটাই জানালেন কোঝিকোড় বিমানবন্দর এলাকার খুব কাছে থাকা এক প্রত্যক্ষদর্শী।
তিনি বলেন, “বাইরে বেরিয়েই দেখি একটি যাত্রিবাহী বিমান রানওয়ে থেকে ছিটকে খাদে এসে পড়ছে। সামনের অংশটা ভেঙে গিয়ে দু’টুকরো হয়ে গিয়েছে। এক মুহূর্ত দেরি না করে দুর্ঘটনাস্থলের উদ্দেশে ছুট লাগিয়েছিলাম। আশপাশের বহু মানুষও উদ্ধারের জন্য সে দিকে ছুটছিলেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছেই দ্রুত উদ্ধারের কাজে লেগে পড়ি সকলে মিলে।”
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, “সকলে মিলে একের পর এক আহত যাত্রীদের বার করছিলাম বিমান থেকে। বিমানের ভিতরে তখন রক্তে ভেসে যাচ্ছে। কারও পা ভেঙে গিয়েছে, তো কারও হাত। কারও আবার মাথা ফেটে রক্ত ঝরছে। তার সঙ্গে বাঁচানোর আর্তনাদ— সব মিলিয়ে আবাহওয়াটা ভারী হয়ে উঠেছিল।”
স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধারকাজ চালানোর সময়ই দমকলবাহিনী ও উদ্ধারকারী দল এসে পৌঁছয়। তারাও দ্রুততার সঙ্গে উদ্ধারের কাজ শুরু করে। ওই প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “উদ্ধারের কাজ চালানোর সময়ই চোখ আটকে যায় কয়েকটি শিশুর দিকে। সিটের নীচে আটকে গিয়ে ছটফট করছিল তারা। এই দৃশ্যটা আমাদের খুব নাড়িয়ে দিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।”
আরও পড়ুন: ‘রক্তে ভিজে গেল আমার হাত’
শুক্রবার দুবাই থেকে কোঝিকোড়ের বিমানবন্দরে নামার সময় এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানের চাকা পিছলে গিয়ে রানওয়ে টপকে গভীর খাদে পড়ে যায়। তাতে কমপক্ষে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। আহত হয়েছেন ১৭৩ জন। ডিজিসিএ জানিয়েছে, প্রবল বৃষ্টির কারণে বিমানের চাকা পিছলে গিয়েছিল রানওয়ে থেকে। তার জেরেই এই দুর্ঘটনা।
একেই কোঝিকোড়ের এই বিমানবন্দর ‘টেবল টপ’ হওয়ায় বিমান ওঠানামা করা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তার মধ্যে শুক্রবার ছিল দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। ফ্লাইট ট্র্যাকার ওয়েবসাইট ‘ফ্লাইটরাডার২৪’ জানাচ্ছে, এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি আগে দু’বার নামার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু নামতে পারেনি দৃশ্যমানতা কম হওয়ার কারণে। তৃতীয় বারের প্রচেষ্টায় নামতেই দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। ডিজিসিএ সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছে, নামার সময় বিমানটির ‘প্রবল গতি’ ছিল। যার জেরেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রানওয়ে টপকে খাদে গিয়ে পড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy