মুম্বইয়ের হোটেলে পুলিশের মুখোমুখি ডি শিবকুমার। ছবি: পিটিআই।
জানতেন, মুম্বইয়ের একটি হোটেলে দলের বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের কাছে পৌঁছনোর কাজটা সহজ হবে না। তাই কৌশলের রাস্তা নিয়েছিলেন কর্নাটকে জোট সরকার গড়ার মূল কারিগর ডি কে শিবকুমার। নিজের নামে হোটেলের একটা ঘর ‘বুক’ করে ফেলেছিলেন তিনি। কিন্তু মুম্বই পুলিশের বাধায় আজ সেই হোটেলে পৌঁছতেই পারলেন না কর্নাটক কংগ্রেসের ‘মুশকিল আসান’। পুলিশ আটক করল শিবকুমারকে।
আগামিকাল থেকে শুরু কর্নাটক বিধানসভার অধিবেশন। তার আগে মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামীর ইস্তফার দাবিতে আজ ধর্নায় বসেছিলেন বিজেপির বিধায়কেরা। এর পরে রাজ্যপাল বাজুভাই বালার সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেতা বি এস ইয়েদুরাপ্পা। তাঁর দাবি, সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন কুমারস্বামী। এ দিন কংগ্রেসের এম টি বি নাগরাজ এবং কে সুধাকর ইস্তফা দেন। এর ফলে ১৩ জন কংগ্রেসের, জেডিএসের ৩ জন ও ২ জন নির্দল বিধায়ক কুমারস্বামীকে ছেড়ে গেলেন।
সঙ্কট থেকে দলকে উদ্ধারের জন্য সকালেই মুম্বইয়ের পওয়াই এলাকায় ওই বিলাসবহুল হোটেলে ঢুকতে যান শিবকুমার। ইস্তফা দেওয়ার পরে এখানেই ঘাঁটি গেড়েছেন কংগ্রেসের সাত, জেডিএসের তিন এবং দু’জন নির্দল বিধায়ক। হাতে বুকিংয়ের কাগজ। কিন্তু শিবকুমার গেটে পৌঁছতেই বাধা পান। গেট বন্ধ। নিরাপত্তারক্ষী, পুলিশের বিরাট জমায়েত। স্লোগান ওঠে, ‘শিবকুমার গো ব্যাক।’ মিডিয়া, রাজনৈতিক কর্মীদের ভিড়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। শিবকুমার নাছোড়। তিনি জানান, রাজনীতি সব সময়েই সম্ভাবনার ক্ষেত্র। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা না করে ফিরবেন না। তাঁদের সঙ্গে বসে কফি খেতেই মুম্বইয়ে এসেছেন।
হোটেলের বাইরে হাজির হন মুম্বই কংগ্রেসের নেতা মিলিন্দ দেওরা, সঞ্জয় নিরুপমরা। পুলিশ শিবকুমারকে জানিয়ে দেন, তাঁর বুকিং বাতিল করেছে হোটেল কর্তৃপক্ষ, ভিতরে যেতে পারবেন না তিনি। পুলিশের দাবি, বিক্ষুব্ধ ১০ জন বিধায়ক চিঠি লিখে জানিয়েছেন, শিবকুমারকে নিয়ে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন তাঁরা। তাঁকে হোটেলে আসতে দেওয়া চলবে না। সমর্থকদের নিয়ে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পরে হোটেলের প্রাচীরের উপরে উঠে বসেন শিবকুমার। টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকারও দেন। তড়িঘড়ি তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। আটক করা হয় শিবকুমার, মিলিন্দকে।
এ দিন বিক্ষুব্ধ বিধায়কেরা সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ জানান, সংখ্যালঘু সরকারকে বাঁচাতে চাইছেন স্পিকার। সে জন্যই ইস্তফা গ্রহণ করছেন না। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ জানান, আগামিকালই এই মামলার শুনানি করা যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখবেন।
শিবকুমার হোটেলে ঢুকতে না দেওয়ায় মুখ খুলেছেন এইচ ডি দেবগৌড়া। তাঁর মন্তব্য, ‘‘পরিস্থিতি জরুরি অবস্থার থেকেও ৬০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এমন ঘটনা কখনও দেখিনি।’’ কর্নাটক নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ এনেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বিধানসভায় তৃণমূল, বাম এবং কংগ্রেস কর্নাটকে এই ঘটনার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব এনেছে।
এ দিন কর্নাটক নিয়ে উত্তাল হয় লোকসভা। কক্ষ ত্যাগ করে কংগ্রেস, তৃণমূল। পরে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নির্বাচিত সরকারকে জোর করে বদলে দেওয়া হচ্ছে। আমরা প্রতিবাদ জানাতে চেয়েছি। কংগ্রেসের সঙ্গে কক্ষ সমন্বয়ের বিষয় এটি নয়।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy