কমলেশ তিওয়ারি (বাঁ দিকে)। সুরাতে মিষ্টির দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া দুই শুটার ( ডান দিকে চিহ্নিত)। ফাইল চিত্র।
হিন্দু মহাসভার প্রাক্তন নেতা কমলেশ তিওয়ারি খুনে ছ’জন গ্রেফতার হলেও এখনও পর্যন্ত দুই শুটার অধরা। কমলেশকে খুনের আগে গুজরাতের সুরাতে একটি মিষ্টির দোকানে দেখা গিয়েছিল ওই দুই শুটারকে। দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে আশফাক ও মইনুদ্দিন নামে ওই দুই শুটারকে চিহ্নিত করেছিল পুলিশ। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ সূত্রে খবর, এই দুই দুষ্কৃতীর শেষ অবস্থান দেখা গিয়েছে বরেলীতে। কিছু ক্ষণ থাকার পর সেখান থেকে গা ঢাকা দিয়েছে দু’জনেই। ইতিমধ্যেই স্পেশাল টাস্ক ফোর্স এবং সন্ত্রাসদমন শাখা-সহ বেশ কয়েকটি দল গঠন করে শুটারদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। রাজ্য পুলিশের ডিজি ওপি সিংহ এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, খুনের আরও সূত্র পেতে গুজরাত ও মহারাষ্ট্র পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
অন্য দিকে, কমলেশের বাড়ির সামনের সিসিটিভি ফুটেজে গেরুয়া পোশাক পরা যে দুই ব্যক্তির সঙ্গে এক মহিলাকে দেখা গিয়েছে ইতিমধ্যে তাঁকেও জেরা করেছে পুলিশ। ওই ফুটেজে মহিলাকে দুই সন্দেহভাজনের সঙ্গে কথা বলছেন। সূত্রের খবর, জেরায় পুলিশকে ওই মহিলা পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ওই দু’জন তাঁকে দাঁড় করিয়ে একটি বাড়ির ঠিকানা জানতে চেয়েছিল। যে হেতু এলাকাটা তাঁর ভাল ভাবে চেনা, তাই তিনি ঠিকানাও বলে দিয়েছিলেন। সূত্রের খবর, মহিলাকে জেরা করে যা তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে তাতে তদন্তকারী অফিসাররা মনে করছেন এই মহিলা খুনের সঙ্গে হয়ত জড়িত নন। তবে বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে ওই সূত্রটি জানিয়েছে।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে মহারাষ্ট্র পুলিশ নাগপুর থেকে শনিবারই এক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতের নাম সৈয়দ আসিম আলি। পুলিশ সূত্রে খবর, কমলেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে ধৃতের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ইউটিউবেও কমলেশকে হুমকি দিয়ে ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন। অন্য দিকে, মোরাদাবাদের ছয় যুবককে জেরা করছে পুলিশ। সূত্রের খবর, এই ছ’জন সুরাত এবং লখনউয়ে নিয়মিত ফোন করত। কাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত তারা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। রাজ্যের এক তদন্তকারী অফিসার জানিয়েছেন, কানপুর থেকেও এক ব্যক্তিকে আটক করা করা হয়েছে। আততায়ীরা এই ব্যক্তির ফোন থেকেই কমলেশকে ফোন করেছিল। তবে একের পর এক গ্রেফতারিতে এই হত্যাকাণ্ড মামলার জাল অনেকটাই গুটিয়ে এসেছে বলে দাবি উত্তরপ্রদেশের এক শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক।
কমলেশ তিওয়ারির মা। কুসুম তিওয়ারি।
আরও পড়ুন: ফের সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন পাক সেনার, কুপওয়ারায় নিহত ২ জওয়ান, এক গ্রামবাসী
আরও পড়ুন: কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানকে সমর্থন তুরস্কের, মোদীর আঙ্কারা সফর বাতিল ক্ষুব্ধ নয়াদিল্লির
কমলেশ হত্যাকাণ্ডের জট খুলতে যোগী আদিত্যনাথের পুলিশ-প্রশাসন যখন চেষ্টার কোনও কসুর করছে না ঠিক তখনই এই খুনের জন্য বিজেপির দিকেই আঙুল তুলেছেন কমলেশের মা কুসুম তিওয়ারি। তাঁর ছেলের খুনের পিছনে বিজেপি নেতা শিবকুমার গুপ্তর হাত রয়েছে বলেই অভিযোগ তুলেছেন কুসুমদেবী। শনিবার সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি বলেন, “কার প্রতি সন্দেহ, কার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, এ সব নিয়ে কেউই আমার কাছে জানতে চাইছে না। যখন আমাকে জিজ্ঞাসা করা হল সরকারের কাছে থেকে কী প্রত্যাশা করছেন। শুধু বলেছিলাম, ছেলের দেহ চাই।”
কুসুমদেবী আরও বলেন, “গুপ্তকে অবশ্যই জেরা করা উচিত পুলিশের। স্থানীয় একটি মন্দির নির্মাণকে কেন্দ্র করেই গুপ্ত আমার ছেলেকে খুন করিয়েছে।” যদিও ডিজি ওপি সিংহ এ প্রসঙ্গে জানান, কমলেশের পরিবারের তরফে এমন কোনও অভিযোগ পায়নি পুলিশ। পাশাপাশি তিনি ওটাও জানান, কমলেশের স্ত্রী তাঁর এফআইআরে বিজনৌরের দুই মৌলবীর নাম উল্লেখ করেছেন।
কমলেশের ছেলে সত্যম তিওয়ারি বলেন, “বাবার হত্যার এনআইএ তদন্ত চাইছি। কারও উপর ভরসা নেই আমাদের। নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও বাবাকে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা। এর পর কী ভাবে আর প্রশাসনের উপর ভরসা রাখব?”
রবিবার বিকেলে সীতাপুরে কমলেশের বাড়িতে দেখা করতে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। শুক্রবারই রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকরা কমলেশের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কমলেশের স্ত্রী কিরণ তিওয়ারি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে আসতে হবে। যত ক্ষণ না তিনি আসবেন কমলেশের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করা হবে না। শুধু তাই নয়, গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যারও হুমকি দেন কমলেশের স্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy