—ফাইল চিত্র।
দ্য হেগের আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের রায় পাকিস্তান মানবে বলেই ধারণা সাউথ ব্লকের কর্তাদের। কিন্তু কুলভূষণ যাদবকে ফেরানো যে এখনও অথৈ জলে, ঘরোয়া আলোচনায় তা-ও মেনে নিচ্ছেন তাঁরা। পাকিস্তানের আদালতেই কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ডের পুনর্বিবেচনা হবে। ফলে ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের ‘জয়’ হয়েছে বলে দাবি করেছে ইমরান খান সরকার।
আজ মধ্যরাতে এক বিবৃতিতে পাক বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, ‘‘দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান কুলভূষণকে ভারতীয় কূটনীতিকদের সঙ্গে দেখা করতে দেবে। দেশের আইন মোতাবেক সেই অনুমতি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’’ একই সঙ্গে পাক বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ভিয়েনা চুক্তি অনুসারে কুলভূষণকেও এই বিষয়টি জানানো হয়েছে।
আজ সংসদের দুই কক্ষেই কুলভূষণ মামলা নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেখানে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তিনি বলেছেন, ‘‘তাঁর সরকার সর্বতোভাবে চেষ্টা করবে কুলভূষণ যাতে নিরাপদে পাকিস্তানে থাকতে পারেন এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশে ফিরে আসতে পারেন।’’ তাঁর এই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিদেশ মন্ত্রক সূত্র জানাচ্ছে, আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের রায়ের পরে প্রাথমিক ভাবে উল্লাস দেখানো হয়েছে ঠিকই। ঘরোয়া রাজনীতির প্রশ্নে তার বাধ্যবাধকতাও ছিল। কিন্তু কুলভূষণকে ফিরিয়ে আনতে সরকারকে এখনও যে বহু কাঠখড় পোড়াতে হবে, তা স্পষ্ট। কারণ বিদেশ মন্ত্রকের কর্তাদের মতে, ভারতের আর্জির সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি আন্তর্জাতিক আদালত খারিজ করেছে। যার মধ্যে রয়েছে কুলভূষণকে দোষী সাব্যস্ত করার রায় পুরোপুরি খারিজ করে দেওয়া, অবিলম্বে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার মতো বিষয়গুলি।
গত কাল আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারপতি আব্দুলওয়াকি আহমেদ ইউসুফের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ রায়ে বলেছে যে, কুলভূষণের সঙ্গে দেখা করার জন্য ভারতীয় কূটনীতিকদের আর্জি খারিজ করে ভিয়েনা সনদ লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। কুলভূষণের সঙ্গে ভারতীয় কূটনীতিকদের দেখা করতে দিতে হবে। পাশাপাশি, তাঁর উপযুক্ত আইনি প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা করতে হবে। আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে ভারতের কৌঁসুলি হরিশ সালভের মতে, পাক সামরিক আদালতের বিচার পদ্ধতিকেই আন্তর্জাতিক আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। ফলে এখন হয় পাকিস্তানকে সামরিক আইন সংশোধন করতে হবে বা অন্য পথ নিতে হবে।
ভারতীয় কূটনীতিকদের মতে, পাকিস্তান সরকার কী ভাবে তাদের দেশের অসামরিক আদালতের উপরে প্রভাব বিস্তার করে কোনও মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে, তা এর আগে অনেক বার দেখা গিয়েছে। ফলে পুনর্বিবেচনার ফল কী হবে, তা নিয়ে সন্দিহান তাঁরা।
কূটনীতিকদের মতে, পাক আদালতে মামলার গতিপ্রকৃতি নরেন্দ্র মোদী-ইমরান খানের ভবিষ্যৎ যাত্রাপথের উপরে নির্ভর করবে। আমেরিকাও একতরফা ভারতের হয়ে পাকিস্তানের উপরে চাপ দিয়ে যাবে, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। ২১ জুলাই আমেরিকা সফরে যাচ্ছেন ইমরান। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ওই বৈঠকে আফগানিস্তান নিয়ে যৌথ কৌশল রচনা হবে। কাবুল প্রশ্নে ইসলামাবাদও খুবই গুরুত্বপূর্ণ শরিক ওয়াশিংটনের। ফলে কুলভূষণ প্রশ্ন নিয়ে উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy