সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ছবি পিটিআই।
বাংলাদেশে বহু ভারতীয় আটকে রয়েছেন। তাঁদের দেশে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য রাজ্য একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করে কেন্দ্রকে দিক।
গত কাল সব রাজ্যের শীর্ষ পর্যায়ের অফিসারদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সচিবের ডাকা ভিডিয়ো বৈঠকে হাজির ছিলেন রাজ্যগুলির শীর্ষ কর্তারা। সেখানেই পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ কথা জানিয়েছেন বিদেশসচিব হর্যবর্ধন শ্রিংলা। পাশাপাশি বলা হয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আটকে থাকা ট্রাক থেকে পণ্য খালাস করে বাংলাদেশে তা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে। সূত্রের দাবি, আলাপনবাবু কেন্দ্রকে জানিয়েছেন, সমস্ত বিষয়গুলি নিয়েই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন।
সোমবার, অর্থাৎ আগামিকাল সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে ধাপে ধাপে লকডাউন তোলা-সহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে। তার প্রস্তুতি বৈঠক হিসেবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সচিব রাজীব গৌবা শনিবারের বৈঠকটি ডাকেন। সেখানে রাজ্যগুলির মুখ্যসচিব অথবা স্বরাষ্ট্রসচিবেরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ কর্তা, বিভিন্ন জেলা আধিকারিক, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব, এবং বিদেশসচিব। সরকারি সূত্রের খবর, আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল, পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজ নিজ রাজ্যে ফেরানো নিয়ে ভবিষ্যতে কী ভাবে এগোনো হবে। পাশাপাশি কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এটাও জানতে চাওয়া হয় যে, সংক্রমণের হার কোথায় কী ভাবে বাড়ছে, ২০ তারিখের পরে কোন রাজ্য কী ভাবে ছাড় দিয়েছে, লকডাউন কতটা মানা হচ্ছে ইত্যাদি। সূত্রের বক্তব্য, বৈঠক শুরুর বক্তৃতায় গৌবা বলেন, ২০ তারিখের পরে আংশিক ছাড়ের জন্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে যে নির্দেশিকা গিয়েছিল, তা তৃণমূল স্তরে সঠিক ভাবে মানা হয়নি। গৌবা বলেছেন, স্থানীয় প্রশাসন অনেক ক্ষেত্রে হয় গা ঢিলে দিয়েছে, নয়তো অতিরিক্ত কড়া হয়েছে। সূত্রের মতে, মন্ত্রিসভার সচিবের বক্তব্য, ভাইরাস সংক্রমণ রোধের প্রশ্নে যথেষ্ট উন্নতি হলেও সব জায়গায় তা সমান ভাবে হয়নি।
সূত্রের বক্তব্য, আলাপনবাবু ওই বৈঠকে জানিয়েছেন যে, তাঁর রাজ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। তখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব ভাল্লা তাঁকে বাংলাদেশ সীমান্তে বাণিজ্য চালু করার ব্যাপারে পরামর্শ দেন। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে গত কাল এই একই বিষয়ে একটি চিঠিও রাজ্যকে দেওয়া হয়েছে।
যে সব রাজ্যগুলি থেকে মুম্বই, দিল্লির মতো শহরে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক গিয়েছেন, তার মধ্যে রয়েছে বিহার। গত কাল বৈঠকে বিহার এবং আরও কিছু রাজ্যের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর মতো জটিল প্রক্রিয়া নিয়ে তাঁরা একা হাতে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারবেন না। কেন্দ্রকে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট প্রোটোকল তৈরি করতে হবে। গুজরাতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গ্রামাঞ্চলে ২৮ হাজার শিল্পকারখানা তারা চালু করে দিয়েছে। কেন্দ্র পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরৎ পাঠানোর ব্যবস্থা করুক। পঞ্জাবের মুখ্যসচিব কর্ণ সিংহ ওই বৈঠকে বলেছেন, তাঁদের রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেতে উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারের প্রায় দশ লক্ষ দিনমজুর কাজ করছেন। এখন ফসল তোলা হয়ে গিয়েছে। ফলে মজুরেরা তাঁদের গ্রামে ফিরে যেতে চান।
লকডাউন চলাকালীন তাদের পদক্ষেপগুলির বিবরণ বৈঠকে দিয়েছে বিভিন্ন রাজ্য। কর্নাটকের মুখ্যসচিব টি এম বিজয় ভাস্কর দাবি তুলেছেন, তাঁর রাজ্যে মদের দোকান খোলা প্রয়োজন। সামাজিক দূরত্বের কঠোর অনুশাসনের মধ্যেই মদ বিক্রির আশ্বাস দেন তিনি। তাঁর যুক্তি রাজ্যের বাজেট ঘাটতি মেটাতে এই পদক্ষেপ খুবই জরুরি।
সূত্রের মতে, বিদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফেরানোর দাবিতে বৈঠকে সবচেয়ে বেশি সরব হয় কেরল। রাজ্যের মুখ্যসচিব টম জোসে জানান, তাঁর সরকারের উপর প্রবল চাপ রয়েছে পশ্চিম এশিয়া থেকে প্রায় ৫ লাখ মালয়ালি কর্মী এবং ছাত্রকে ফেরানোর। কেন্দ্র তাঁদের ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিলে কেরলে কীভাবে ওই ব্যক্তিদের কোয়রান্টিন করা হবে, তার বিশদ পরিকল্পনা জোসে ব্যাখ্যা করেন বৈঠকে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য মহারাষ্ট্রের মুখ্যসচিব অজয় মেহতা লকডাউন পালনের জন্য আরও কঠোর নিয়ম জারি করার পরামর্শ দেন। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব তখন নিজে থেকেই তাঁকে বলেন, যে কোনও রাজ্যের অধিকার রয়েছে অবস্থা বুঝে হটস্পটে বাড়তি সতর্কতার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy