সংসদ ভবনে ভিডিয়ো বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী। বুধবার। পিটিআই
এক ধাক্কায় গোটা দেশে ১৪ এপ্রিলের পরে লকডাউন তুলে দেওয়া সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে এ কথা জানিয়ে দিলেন।
রাজনৈতিক সূত্রের খবর, নেতাদের মোদী জানিয়েছেন, সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, জেলা প্রশাসন ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা একটি সার্বিক বার্তা পেয়েছেন। সেটি হল, এখন লকডাউন তুলে নেওয়া হোক, এমনটা কেউই চাইছেন না। তাঁর বক্তব্য, এক বারে লকডাউন তুলে দেওয়ার কাজটি সরলও নয়। মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে এই বিষয়ে আবার কথা বলবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘দেশে কার্যত সামাজিক জরুরি অবস্থা চলছে। ফলে পারস্পরিক দূরত্বের সমস্ত নিয়ম কঠোর ভাবে মেনে, সব সতর্কতা বজায় রেখে আবশ্যক যা যা করার, কঠোর ভাবে করতে হবে।’’ তাঁর মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগের এবং পরের পৃথিবীর মধ্যে যেমন ফারাক, করোনার আগের ও পরের পৃথিবীও তেমনই আলাদা হবে। মানুষের কাজের ধরন বদলে যাবে।
এই বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব, গ্রামোন্নয়ন ও স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে প্রায় পৌনে চার ঘণ্টা বৈঠক করেন। সেখানে লকডাউনের ফলে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির খতিয়ান ‘প্রেজেন্টেশন’ আকারে তুলে ধরা হয়। পরে নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মোদী বলেন, ‘‘ভারতে জেলা স্তরে এবং আন্তর্জাতিক স্তরে কথা বলে এটাই স্পষ্ট হয়েছে যে, লকডাউনের রাস্তায় হেঁটেই দেশবাসীর জীবন রক্ষা করা সম্ভব।’’
পরে প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে জানানো হয়, ১১ এপ্রিল, শনিবার সকাল ১১টায় সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে বসবেন মোদী। সেখানে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। এমস সূত্রের বক্তব্য, ১০ এপ্রিল নোভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান হাতে আসবে কেন্দ্রের। লকডাউনের ফলে ভাইরাস রোধের করার প্রয়াস কতটা ফলপ্রসূ হল বা হল না, তা স্পষ্ট হয়ে যাবে সেই তথ্যে। সেটা হাতে নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বসতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী।
আজকের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ, তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, এনসিপির শরদ পওয়ার, ডিএমকের টিআর বালু, এসপি-র রামগোপাল যাদব, বিএসপির সতীশ মিশ্র, সিপিএমের ই করিম প্রমুখ। গুলাম নবি পরে সাংবাদিকদের বলেন, “এর আগে পঞ্জাব, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ় এবং পুদুচেরির কংগ্রেস মু্খ্যমন্ত্রীরা প্রস্তাব দিয়েছিলেন, ধাপে ধাপে লকডাউন তোলা হোক। আজ আমরা তো বলেইছি, উপস্থিত নেতাদের ৮০ শতাংশই জানিয়েছেন যে, এক ধাক্কায় গোটা দেশে লকডাউন তুলে দেওয়া ঠিক হবে না। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার প্রধানমন্ত্রীর। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে, তার পরেই পদক্ষেপ করা হবে।’’
কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলির বক্তব্য, লকডাউন যদি এখনই না-ওঠে, তা হলে ক্ষতিগ্রস্ত দিনমজুর, বিভিন্ন ছোট ব্যবসা এবং ঠিকা বা চুক্তিতে কর্মরত ব্যক্তিদের জন্য অর্থনৈতিক প্যাকেজ কী হবে, সেটাও স্থির করা জরুরি। পাশাপাশি বিভিন্ন পরীক্ষা ক্রমাগত পিছিয়ে যাওয়ার ফলে শিক্ষাবর্ষ বদল করতে হবে কি না, সেটাও দেখতে হবে।
বিভিন্ন রাজ্যে ও জেলার যেখানে যেখানে সংক্রমণ বেশি ছড়িয়েছে সেই জায়গাগুলি অর্থাৎ ‘হটস্পটগুলি’ পুরোপুরি সিল করে দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছেন অনেক নেতা। প্রধানমন্ত্রীকে বলা হয়েছে, সেই এলাকাগুলিকে সিল করে দিয়ে বাকি অঞ্চলে বাণিজ্যিক কাজকর্ম চালানো যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হোক।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy