সীমা কুশওয়াহা। —ফাইল চিত্র।
পুলিশি নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা হাথরস। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বাধা পেয়েছেন বিরোধী শিবিরের রাজনীতিকরা। এ বার একই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলেন আইনজীবী সীমা কুশওয়াহা। ২০১২-র নির্ভয়া কাণ্ডে নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী ছিলেন তিনি। হাথরস কাণ্ডে নির্যাতিতার পরিবারের হয়ে বিনা পারিশ্রমিকে আইনি লড়াইয়ে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। কিন্তু যোগীর রাজ্যের পুলিশ তাঁকে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন সীমা।
বৃহস্পতিবার হাথরসে রাহুল গাঁধী এবং কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে পুলিশের। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে না দিয়ে রাহুলদের গাড়িতে তুলে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। সেই নিয়ে দেশের রাজনীতি যখন তোলপাড়, সেই সময় হাথরসে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান সীমা কুশওয়াহা। কিন্তু পুলিশ তাঁর রাস্তা আটকায় বলে অভিযোগ। পরে থানায় গিয়ে অনুরোধ করলেও, নির্যাতিতার বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি পাননি তিনি।
হাথরসে পুলিশের যে দল সীমা কুশওয়াহাকে নির্যাতিতার বাড়িতে যেতে বাধা দেয়, তাদের সঙ্গে অতিরিক্ত জেলাশাসকও শামিল ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। সংবাদমাধ্যমে সীমা কুশওয়াহা বলেন, ‘‘নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা না হওয়া পর্যন্ত হাথরস ছেড়ে যাব না আমি। ওঁরা আমাকে আইনজীবী হিসেবে চেয়েছেন। কিন্তু রাজ্য প্রশাসন আমাকে ওঁদের সঙ্গে দেখাই করতে দিচ্ছে না। নির্যাতিতার দাদার সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। যে মেয়ে কথা বলতে পারছিল না, কিছু লেখার ক্ষমতা ছিল না, সবার আগে তার ডাক্তারি পরীক্ষা হওয়া উচিত ছিল।’’
আরও পড়ুন: তৃণমূলকেও বাধা, ডেরেককে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলল পুলিশ
পরিবারের হাতে দেহ তুলে না দিয়ে যে ভাবে রাতারাতি নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সীমা। তিনি বলেন, ‘‘অন্যায় ভাবে মেয়েটির দেহ সৎকার করে দেওয়া হয়। পরিবারের অনুমতি পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। যে পেশাতেই থাকুন না কেন, এ দেশে কোনও মহিলা বুক ঠুকে বলতে পারবেন না যে, তাঁরা নিরাপদ। আইন-কানুন আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন।’’
২০১২-র ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার হন বছর তেইশের এক প্যারামেডিক্যাল পড়ুয়া। পরে সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। সেই মামলায় নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী ছিলেন সীমা কুশওয়াহা। দীর্ঘ সাত বছরের আইনি লড়াইয়ের পর এ বছর মার্চ মাসে দোষী সাব্যস্ত চার জন, অক্ষয় ঠাকুর, পবন গুপ্ত, বিনয় শর্মা এবং মুকেশ সিংহের ফাঁসি হয়।
হাথরসের ঘটনার ভয়াবহতা সেই নির্ভয়া কাণ্ডের স্মৃতিই নতুন করে মনে করিয়ে দিয়েছে। দীর্ঘ ১৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লডা়র পর গত মঙ্গলবার দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যু হয় ১৯ বছরের ওই তরুণীর। বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে তিন সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে রাজ্য সরকার। এই ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে মামলার শুনানি হবে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘গণধর্ষণের শিকার গণতন্ত্র’, রাহুলকে ধাক্কা প্রসঙ্গে মন্তব্য সঞ্জয় রাউতের
ময়নাতদন্তে ধর্ষণ প্রমাণিত হয়নি বলে ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন রাজ্যের অতিরিক্ত ডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) প্রশান্তকুমার। কিন্তু গোটা ঘটনায় রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন উঠছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy