সরব: সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মদন বি লোকুর
মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ‘রাষ্ট্র’ লৌহমুষ্টিতে দমন করছে বলে প্রকাশ্যে অভিযোগ আনলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মদন বি লোকুর। তাঁর মতে, সরকার দমনের অস্ত্র হিসেবে দু’টি কঠোর আইনকে ব্যবহার করছে ছাত্র ও সাধারণ নাগরিকদের বিরুদ্ধে। সে দু’টি হল, জাতীয় সুরক্ষা আইন (এনএসএ) এবং বেআইনি কাজকর্ম প্রতিরোধ আইন (ইউএপিএ)।
আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণকে আদালত অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে এক টাকা জরিমানা করা হয়েছে সম্প্রতি। তাঁর বক্তব্যও ভুল ভাবে তুলে ধরা হয়েছে বলে সোমবার মন্তব্য করেছেন প্রাক্তন বিচারপতি। প্রশান্ত ভূষণের ওই ‘শাস্তির’ প্রেক্ষিতে একটি ভার্চুয়াল আলোচনাচক্রের আয়োজন করা হয়েছিল এ দিন। সেখানে প্রাক্তন বিচারপতি লোকুর বলেন, “রাষ্ট্র লৌহমুষ্টিতে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে দমন করছে। হঠাৎ করে প্রচুর রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের হচ্ছে। সাধারণ মানুষ কিছু বললেই রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হচ্ছে। চলতি বছরেই এ পর্যন্ত ৭০টি মামলা হয়েছে।”
এই সূত্রে কাফিল খানের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন বিচারপতি লোকুর। সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদ সভায় তাঁর বক্তব্যের জন্য এনএসএ-তে গ্রেফতার করা হয়েছিল এই চিকিৎসককে। ইলাহাবাদ হাইকোর্ট এনএসএ-তে আনা অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে সম্প্রতি। বিচারপতি লোকুরের মতে, “তাঁর (কাফিল খানের) বক্তব্যও ভুল ভাবে তুলে ধরা হয়েছিল। আদালত বলেছে, দেশের ঐক্য ও সংহতি বাড়ানোর পক্ষেই বলেছিলেন তিনি।”
বিচারপতি লোকুর বলেছেন, “মত প্রকাশের স্বাধীনতা দমনের আরও একটি কৌশল হল, কেউ সমালোচনামূলক কিছু বললেই তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগ আনা।” কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ব্যর্থতা বা ভেন্টিলেটরের অভাবের মতো বিষয় নিয়ে খবর করার জন্য সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে এই কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রাক্তন বিচারপতির মতে, কোনও মন্তব্যকে ভুল ভাবে তুলে ধরার আর একটি পদ্ধতি হল, সেই বক্তব্যের পিছনে কোনও একটা উদ্দেশ্য রয়েছে বলে অভিযোগ আনা। তাঁর কথায়, “আমার বিশ্বাস, বিচার ব্যবস্থাকে ভেঙে দেওয়ার কোনও অভিপ্রায় প্রশান্ত ভূষণের ছিল না। কিন্তু তাঁর বক্তব্যকে ভুল ভাবে তুলে ধরা হয়েছে।” এ ভাবেই বিরোধী কণ্ঠস্বরের ভুল ব্যাখ্যা করে ছাত্রদের জেলে পোরা হচ্ছে। ‘প্রিভেনটিভ ডিটেনশন’-এর নামে যে ভাবে ধরপাকড় চলছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রাক্তন বিচারপতি বলেন, “অথচ, যারা হিংসার কথা বলছে, ভাঙার কথা বলছে, তাদের ক্ষেত্রে কিছুই করা হচ্ছে না।”
রাষ্ট্রের অঙ্গ বিচার ব্যবস্থা নিয়েও এ দিন উদ্বেগ জানিয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি। ৩ কোটিরও বেশি মামলা ঝুলে থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিচার ব্যবস্থায় আরও স্বচ্ছতা আনা এবং কোনগুলিতে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি, তা ঠিক করা দরকার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy