স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের মিডিয়া উইংয়ের সব শীর্ষ আধিকারিককে সরালেন অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র
আমপান পরে কী ভাবে এ রাজ্যে পুনর্গঠনের কাজ করছে এনডিআরএফ— তার প্রচার করতে গিয়ে বিপত্তি বেধেছিল। ফেসবুকে এনডিআরএফ কর্মীদের গাছ সরানোর ছবির সঙ্গে পোস্ট হয়ে গিয়েছিল ‘মদের আসর’-এর ছবি। তার জেরে ছেঁটে ফেলা হল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের শীর্ষ আধিকারিকদের পুরো দলকেই। পরিবর্তে নিয়ে আসা হয়েছে নতুন এক দল আধিকারিককে। শুক্রবার নর্থ ব্লকের এই এক ঝাঁক অফিসারের রদবদল ঘিরে সরগরম দিল্লির রাজনৈতিক পরিমণ্ডল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের মুখপাত্র ছিলেন বসুধা গুপ্ত। তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি)-র অফিসে। আপাতত তিনি সেখানকার ‘ফ্যাক্ট চেক ইউনিট’-এর কাজকর্ম্ দেখভাল করবেন। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব নিচ্ছেন ব্যুরো অব কমিউনিকেশনের ডিরেক্টর জেনারেল নিতিন ওয়াকঙ্কর। ওয়াকঙ্কর এর আগে সিবিআই এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রকের মুখপাত্রের দায়িত্ব সামলেছেন।
বদলি করা হয়েছে ডেপুটি ডিরেক্টর পদমর্যাদার দুই অফিসার বিরাট মজবুর এবং শেলাত হরিৎ কেতনকে। দু’জনকেই অল ইন্ডিয়া রেডিয়োতে পাঠানো হয়েছে। পিআইবির ডেপুটি ডিরেক্টর প্রবীণ কবি ফিরে এসেছেন। এই মিডিয়া উইংয়েই আগে এ ভারতভূষণ বাবুর নেতৃত্বে তিনি কাজ করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে অমিত শাহ দায়িত্ব নেওয়ার পর তাঁকে সরানো হয়েছিল। তাঁর জায়গায় এসেছিলেন বসুধা গুপ্ত। এ ছাড়াও কাঠমান্ডুতে কর্মরত এডিজি রাজকুমারমকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এই মিডিয়া উইংয়ে আনা হয়েছে। এসেছেন অল ইন্ডিয়া রেডিয়োর অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অমনদীপ যাদবও।
আরও পড়ুন: ভারতে সংক্রমণ বাড়ছে বেশি, উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা
জল্পনা শুরু হয়েছিল ওই ফেসবুক পোস্টের পর থেকেই। গত ২৮ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করা হয়। তাতে হাওড়ার পাঁচলার দেউলপুরে এনডিআরএফ কর্মীরা কী ভাবে গাছ সরানোর কাজ করছেন, সেটাই তুলে ধরা হয়েছিল কয়েকটি ছবিতে। কিন্তু সেই রকম দু’টি ছবির সঙ্গেই তৃতীয় একটি ছবি পোস্ট করা হয়। তাতে একটি টেবিলের উপর রাখা দু’টি হুইস্কির বোতল, গ্লাসে রাখা মদ ও চানাচুরের মতো কিছু ভাজাভুজির ছবি। এই ছবি ঘিরেই গোল বাধে।
ওই পোস্টের জেরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায়। আমপানের চেয়েও তা দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকেই ওই পোস্টে নানা রকম কমেন্ট করতে থাকেন। কেউ ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করেছেন। এক দল আবার খুঁজে পেয়েছেন ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের রসদ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ফেসবুক পেজের সেই পোস্টের স্ক্রিনশট।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে খবর ছিল, ওই ঘটনায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন অমিত শাহ। পরে সেই পোস্ট মুছে ফেসবুকে ক্ষমা চাওয়া হলেও ‘বিপর্যয়’ যা হওয়ার তা হয়ে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, তাই এক বছর কোনও নতুন প্রকল্প নয়, জানাল অর্থমন্ত্রক
তার উপর সদ্য আরও একটি ঘটনায় আগুনে ঘৃতাহুতি পড়ে। দ্বিতীয় এনডিএ সরকার তথা দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর এক বছর পূর্তিতে সব মন্ত্রকের সাফল্য তুলে ধরা হয়। কিন্তু আবারও কার্যত ‘ভুল’ করে বসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের মিডিয়া উইং। সাফল্যের তালিকায় রাখাই হয়নি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)। পরে যে পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে অবশ্য সিএএ-র বিষয়টি যোগ করা হয়।
আবার সাংবাদিক মহলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের মিডিয়া উইং নিয়ে ক্ষোভ ছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে একাধিক প্রতিবেদন বা খবরকে ‘ফেক নিউজ’ বলে দেগে দেওয়া হয়েছিল। কয়েকজন সাংবাদিককে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী ‘রিজয়েন্ডার’ না দিয়ে টুইটারে আক্রমণ করা হয়েছিল। এই সব নিয়েই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শীর্ষ আধিকারিকদের উপর ব্যাপক ক্ষুব্ধ ছিলেন বলে সূত্রের খবর। পর্যবেক্ষকদের মতে, এর জেরেই পুরো টিমকে সরিয়ে নতুন করে দল সাজালেন অমিত শাহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy