ছবি: পিটিআই।
শাহিন বাগে সিএএ-এনআরসি-র বিরুদ্ধে ১০১ দিন ধরে বিক্ষোভ চলেছিল। তার পরে কোভিড অতিমারির জন্য শাহিন বাগ খালি করে দেওয়া হয়েছিল। কোভিড অতিমারির মধ্যেই দিল্লির সীমানায় সড়ক অবরোধ করে কৃষক আন্দোলন শুরু হয়েছিল। সেই আন্দোলনের ৩৭ দিনের মাথায় আজ কৃষক নেতারা হুঁশিয়ারি দিলেন, বিক্ষোভের পরিণতিও শাহিন বাগের মতো হবে ভেবে থাকলে মোদী সরকার ভুল করবে।
আজ নতুন বছরের প্রথম দিনে সিংঘুতে কৃষক নেতাদের সাংবাদিক সম্মেলনে কৃষক নেতা গুরনাম সিংহ চাদুনি বলেন, ‘‘যদি মোদী সরকার কৃষকদের প্রতিবাদকে আরও একটা শাহিন বাগ করতে চায়, সরকার যদি ভেবে থাকে, শাহিন বাগের মতোই সড়ক খালি করে দেওয়া হবে, তা হলে সরকার পরিস্থিতির ভুল পর্যালোচনা করছে।’’ তাঁর মন্তব্য, কৃষকরা ‘অ্যাকশন’-এর জন্য তৈরি। আগামী সোমবার মন্ত্রীদের সঙ্গে কৃষক নেতাদের বৈঠকের কী পরিণতি হয়, তা দেখে কৃষকরা পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবেন। রাজস্থান-হরিয়ানা সীমানায় আটকে থাকা কৃষকরা দিল্লির দিকে রওনা হবেন। বৈঠক ব্যর্থ হলে অন্যান্য প্রতিবাদ কর্মসূচিও আগেভাগে ঘোষণা করে দিয়েছেন কৃষক নেতারা
আজ কৃষক বিক্ষোভকারীদের মধ্যে আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে। কিসান মজদুর সংঘর্ষ সমিতির নেতা বাবা দয়াল সিংহ বৃহস্পতিবারই সিংঘু থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন। বাড়ি ফেরার পরেই তাঁর মৃত্যু হয়। প্রবল ঠান্ডায় তাঁর নিউমোনিয়া হয়ে গিয়েছিল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। বছরের প্রথম দিনে ঠান্ডা অগ্রাহ্য করেই সিংঘু, টিকরি, গাজিপুর সীমানায় কৃষকরা ‘নগর কীর্তন’-এ বেরিয়েছেন। তার আগে তিনটি বিক্ষোভের এলাকাই সাফসুতরো করা হয়েছে। তার আগে রাত বারোটায় ‘মোদী সরকার মুর্দাবাদ’ স্লোগান উঠেছে।
সোমবার মোদী সরকারের সঙ্গে কৃষক নেতাদের ফের বৈঠক। শেষ বৈঠকে মোদী সরকার কৃষক নেতাদের চারটি প্রধান দাবির মধ্যে দু’টি দাবি মেনে নিয়ে জানিয়েছিল, দিল্লির দূষণ রুখতে খড় পোড়ানোর শাস্তি থেকে কৃষকদের বাইরে রাখা হবে। বিদ্যুৎ আইনে সংশোধনীতে কৃষকদের বিদ্যুতে ভর্তুকি ব্যবস্থা বজায় থাকবে। কিন্তু তিন কৃষি আইনের প্রত্যাহার ও ফসলের ন্যূনতম দাম বা এমএসপি-র আইনি গ্যারান্টি নিয়ে সরকার কোনও প্রতিশ্রুতি দেয়নি। গুরনাম বলেন, ‘‘সরকার এমএসপি-র আইনি গ্যারান্টি দিতে নারাজ। এমএসপি-র নিশ্চয়তা না থাকায় বছরে ৩ লক্ষ কোটি টাকা লোকসান হয়। গত ১৫ বছরে চাষিদের ৪৫ লক্ষ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। এমএসপি-র নিশ্চয়তা থাকলে ৩ লক্ষ কৃষককে আত্মহত্যা করতে হত না।’’
কৃষক নেতারা তাই সরকার ৫০ শতাংশ দাবিই মেনে নিয়েছে বলে মানতে নারাজ। তাঁদের যুক্তি, মাত্র ৫ শতাংশ দাবি মানা হয়েছে। যে দুই দাবি মানা হয়েছে, তা নিয়েও সরকারি ঘোষণার দাবি তুলেছেন কৃষক নেতারা। কৃষক নেতা মনজিৎ সিংহ রাই বলেন, ‘‘সবে তো হাতির লেজ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এখনও হাতিটাই বাকি।’’
শেষ বৈঠকের সময় আলোচনার বাইরে কৃষক নেতাদের সঙ্গে মন্ত্রীদের ঘরোয়া আলোচনার কিছু ভিডিয়ো এ দিন প্রকাশ্যে এসেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, কর্পোরেট সংস্থাগুলি এলে চাষিদের কী লাভ হবে, তা বোঝানোর চেষ্টা করলে কৃষক নেতারা বলছেন, ‘ওলা-উবের আসার পরে প্রথম প্রথম গাড়ি চালকদের লাভ হয়েছিল। জাঁকিয়ে বসার পরে এখন তারা ঠকাতে শুরু করেছে’। আবার কৃষক নেতারা আইনের সমর্থনকারী সংগঠনগুলিকে নিয়ে প্রশ্ন তোলায় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলছেন, ‘আপনাদের ৪০ সংগঠনের তালিকাও আমাদের রয়েছে। বেশি মুখ খোলাবেন না’। পঞ্জাবে বিজেপি নেতারা নিয়মিত কৃষকদের বয়কট-ঘেরাওয়ের মুখে পড়ছেন। এ দিন পঞ্জাবের প্রাক্তন মন্ত্রী, বিজেপি নেতা টিকসান সুদের হোসিয়ারপুরের বাড়ির উঠোনে বিক্ষোভকারীরা ট্রাক ভর্তি গোবর ফেলে এসেছেন। গত তিন দিন ধরে আর এক বিজেপি নেতা তরুণ চুগের অমৃতসরের বাড়ি ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ একে পঞ্জাবের সংস্কৃতির বিরোধী বলে দাবি করলেও তাতে কৃষক নেতারা কান দিতে নারাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy