নিহত ধন্না সিংহ। ছবি: টুইটার থেকে।
বহু গ্রাম থেকে একা কৃষকদের জড়ো করে রওনা দিয়েছিলেন দিল্লির উদ্দেশে। লক্ষ্য ছিল, নিজেদের দাবি আদায়। কিন্তু মিছিল রাজধানীর সীমানা ছোঁয়ার আগেই নিজের ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল কৃষক নেতার। শুক্রবার ভিওয়ানি-দিল্লি হাইওয়েতে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে পঞ্জাবের মানসা-র বাসিন্দা ধন্না সিংহের ট্রাক্টর। তাতেই মৃত্যু হয় বছর পঁয়তাল্লিশের ওই কৃষক নেতার। রাস্তায় পাথর এবং কাদা ছড়িয়ে রাখার জন্যই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে কৃষক সংগঠনগুলির অভিযোগ।
ধন্না পঞ্জাবের মানসা জেলার খিয়ালি চেহলান ওয়ালি গ্রামের বাসিন্দা। শুক্রবার ভিওয়ানি হাইওয়েতে আচমকাই একটি ট্রাক তাঁর ট্রাক্টরের পিছনে ধাক্কা মারে। সে সময় ট্রাক্টর থেকে রাস্তায় পড়ে যান তিনি এবং পিষ্ট হন তাঁর নিজের ট্রাক্টরের চাকাতেই। গুরুতর জখম অবস্থায় ধন্নাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তাঁকে বাঁচানো যায়নি। ওই ট্রাক্টরটিতে মোট ২৫ থেকে ৩০ জন কৃষক ছিলেন। দুর্ঘটনার জেরে আহত হয়েছেন আরও ২ কৃষক। ওই ঘটনায় ট্রাকচালককে গ্রেফতার হয়েছে।
ধন্নার মৃত্যুতে অবশ্য কৃষকদের আন্দোলনে ছেদ পড়েনি। তাঁর পরিবারকে ২০ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য, ঋণ মকুব এবং চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান কৃষকরা। নিহত ওই কৃষকনেতার দেহ তাঁর গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর অন্ত্যেষ্টিও হয়। ধন্নার স্ত্রী ছাড়াও এক কন্যা এবং এক পুত্র রয়েছে। দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা পরিবার।
আরও পড়ুন: খেজুরি উত্তপ্ত, তৃণমূলের ৬ অফিস ভাঙচুর, ‘দখল’ নিল বিজেপি
আরও পড়ুন: লালা কোথায়? কয়লা-কাণ্ডে রাজ্য জুড়ে সিবিআই তল্লাশি
ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের সভাপতি বুটা সিংহ বুর্জগিল অভিযোগ করেছেন, ‘‘রাস্তায় কাদা এবং পাথর ছিল। সে সব সরানোর জন্যই ট্রাক্টরের সামনে ওঁরা ৩ জন বলেছিলেন। তার জেরেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসনও এই দুর্ঘটনার জন্য সমান দায়ী।’’
কৃষকদের এই ‘লং মার্চ’-এর জেরে প্রায় অবরুদ্ধ দিল্লি। এর পিছনে রয়েছে দীর্ঘ দিনের প্রস্তুতি। ধন্নার সহযাত্রী কৃষকদের দাবি, ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচি পালনে গ্রামে গ্রামে ঘুরে কৃষকদের এককাট্টা করেছিলেন তিনি। অন্তত ৪০টি গ্রাম থেকে লোকজনকে একজোট করেছিলেন। ধন্নার বন্ধু বলজিন্দর সিংহ বলেন, ‘‘প্রতি দিন গুরুদ্বারা থেকে ও এই কর্মসূচি সম্পর্কে ঘোষণা করত। এই দুর্ঘটনায় আমরা বাকরুদ্ধ।’’ ধন্নার প্রতিবেশী জিওন সিংহ বলেন, ‘‘ও এক জন প্রান্তিক কৃষক। ২ একর জমি ছিল এবং গুরুদ্বারার কাজ করে ওর চলত। কৃষি আইন নিয়ে গুরুদ্বারা থেকে ওর প্রতি দিনের ঘোষণা শোনা আমাদের অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy