আন্দোলনকারী কৃষকদের পাশে দাঁড়ালেন মমতা।
বন্ধে সায় না থাকলেও কৃষক আন্দোলনকে সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলেন। দলীয় প্রতিনিধিদের পাঠিয়ে পাশে থাকার বার্তাও দিয়েছিলেন। বিতর্কিত কৃষি আইনের বিরোধিতায় সরব আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গে ফের একবার কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার দুপুরে দিল্লি–হরিয়ানা সীমানায় আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তৃণমূলের ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। সেখানেই ফোনে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন মমতা। সবরকম ভাবে পাশে থাকার বার্তা দেন।
মমতার নির্দেশেই এ দিন সিঙ্ঘু সীমানায় কৃষকদের আন্দোলনস্থলে হাজির হন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, শতাব্দী রায়, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রতিমা মণ্ডল এবং মহম্মদ নাদিমুল হক। সেখানে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কৃষকদের ছোট ছোট বেশ কয়েক দলের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মমতা। জানিয়ে দেন, কেন্দ্রীয় সরকারের ‘কৃষক-বিরোধী’ আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে সমর্থন করছেন তিনি।
মমতার সঙ্গে কৃষকদের কথোপকথনের যে ভিডিয়ো সামনে এসেছে, তাতে শতাব্দীর উপস্থিতিতে ফোনের স্পিকার অন করে মমতার সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় এক প্রবীণ কৃষককে। মমতার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যম এবং হিন্দু, মুসলিম, জৈন, বৌদ্ধ, সব ধর্মের মানুষকে আমাদের এখানে আসার আর্জি জানাচ্ছি। আপনারা এখানে আসুন, আমাদের সঙ্গে কথা বলুন, একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করুন। একজোট হয়ে মোদী সরকারকে ঝুঁকতে বাধ্য করব আমরা। কারণ মোদী সরকার জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এই সরকার শুধুমাত্র দু’জনের জন্যই কাজ করে, অম্বানী এবং আদানি।’’
আরও পড়ুন: মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পিছিয়ে জুনে, জানালেন পার্থ
মমতাকে আন্দোলনস্থলে আসার আর্জি জানিয়ে ওই কৃষক বলেন, ‘‘বাংলায় ভাল কাজ করছেন আপনি। আমরা আপনার প্রশংসা করি। কারণ আগে একাধিক বার বিজেপিকে বড় ধাক্কা দিয়েছেন আপনি। এখনও দিচ্ছেন। আপনি আমাদের দিদি। আপনি যেমন যে ভাবে কাজ করে চলেছেন, আমরা চাই দেশের সব বোনেরাও এ ভাবেই এগিয়ে আসুক। আমাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ধন্যবাদ।’’ কেন্দ্রীয় সরকার আইন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন থেকে একচুল সরবেন না বলেও জানিয়ে দেন ওই কৃষক নেতা।
কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইন নিয়ে শুরু থেকেই আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। এ আগেও প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন মমতা। শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপি-তে যাওয়া নিয়ে টানাপড়েন চলাকালীন গত ৭ ডিসেম্বর মেদিনীপুরের সভায় দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, ‘‘নবান্নের ধান ছুঁয়ে শপথ করছি, আমরা কৃষকদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম-নেতাই ভুলিনি। আমি ভারতও ভুলিনি। আমি কৃষিজীবী মানুষকে ভুলিনি।’’
আরও পড়ুন: ‘ডাল-ভাত খেয়ে বাংলার সংস্কৃতি পাল্টানো যাবে না’, পার্থর নিশানায় শাহ
সিঙ্গুরের কৃষি আন্দোলনের হাত ধরেই পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কেন্দ্রে চলে আসেন মমতা। তবে বঙ্গে গেরুয়া শিবিরের ‘শক্তিবৃদ্ধি’তে গত কয়েক মাসে হিসেব খানিক পাল্টে গিয়েছে। জোড়াফুল শিবির থেকে একে একে বহু নেতা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ফলে তৃণমূলের অন্দরেও হিসেব কিছুটা বদলে গিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মমতা দলকে কৃষক আন্দোলনমুখী করে তুলতে চাইছেন বলে মত অনেকের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy