সমাধিস্থ করা হল উন্নাওয়ের নির্যাতিতার দেহ। ছবি: পিটিআই
হাসপাতালে দগ্ধ অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে চল্লিশ ঘণ্টা লড়াইয়ের পর শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয়েছে উন্নাওয়ের নির্যাতিতাকে। রবিবার, চোখের জলেই তাঁকে চিরবিদায় জানালেন আত্মীয়, পরিজন ও প্রতিবেশীরা এ দিন গ্রামেই সমাধিস্থ করা হয় তাঁর দেহ।
প্রাথমিক ভাবে অবশ্য নির্যাতিতার অন্ত্যেষ্টিতে রাজি হননি তাঁর পরিবারের সদস্যরা। পরে সেই অবস্থান থেকে সরে আসেন তাঁরা। এ দিন ওই তরুণীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন লখনউ-এর ডিভিশনাল কমিশনার মুকেশ মেশরাম। তরুণীর বাবা এবং অন্যান্যদের সঙ্গে প্রায় ঘণ্টা দুয়েক কথাবার্তা চালান তিনি। তাতে বরফ কিছুটা গলে। শেষ পর্যন্ত নির্যাতিতার দেহের সৎকার করতে রাজি হয় পরিবার। এ দিন নিজেদের জমিতেই সমাধিস্থ করা হয় তাঁর দেহ। ভবিষ্যতে ওই জমিতে একটি সমাধিস্থলও গড়ে তোলা হবে বলে তরুণীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। কোনওরকম অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে এ দিন কার্যত নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয় গোটা গ্রাম। তরুণীর দেহাবশেষ নিয়ে শোকমিছিলও কার্যত ঘিরে রেখেছিল পুলিশ।
নির্যাতিতার পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা অর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি আগেই দিয়েছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। ওই পরিবারটিকে একটি পাকা বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে পরিবারটিকে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও জানিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু, তরুণীর মৃত্যুতে ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা গ্রাম। আর এই আবহেই যোগী সরকারের এই সাহায্য ফিরিয়ে দেওয়ার কথা শুনিয়ে দিয়েছেন তরুণীর বাবা। তাঁর দাবি, এমন নৃশংস ঘটনায় সাত দিনের মধ্যে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করুক সরকার।
আরও পড়ুন: টাকা-বাড়ি চাই না, দোষীদের ৭ দিনের মধ্যে বিচার নিশ্চিত করুন, দাবি উন্নাওকন্যার পরিবারের
গত কালই দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতাল থেকে উন্নাওয়ের গ্রামের বাড়িতে আসে নির্যাতিতার দেহ। তার পর থেকে কার্যত ভিড় লেগে গিয়েছে গ্রামে। এর মাঝেই উন্নাও-নির্যাতিতার বোন জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ যত ক্ষণ না গ্রামে এসে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার আশ্বাস দিচ্ছেন তত ক্ষণ পর্যন্ত দিদির শেষকৃত্য হবে না। হায়দরাবাদ গণধর্ষণ ও খুনে চার অভিযুক্তের এনকাউন্টারে মৃত্যুর পর তা নিয়ে ক্ষোভের আঁচ কিছুটা স্তিমিত। কিন্তু, উন্নাও কাণ্ড নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ছে গোটা দেশ। গত কাল নির্যাতিতার গ্রামে গিয়ে সেই ক্ষোভের আঁচ টের পান যোগী সরকারের দুই মন্ত্রীও। এমন অবস্থায় নির্যাতিতার বোনের দাবিতে সিঁদুরে মেঘ দেখছিল যোগী সরকার। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে নতুন করে চেষ্টায় নামতে হয় আধিকারিকদের।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে ইন্টারনেট চালু করুন, আটকদের মুক্তি দিন, মার্কিন কংগ্রেসে প্রস্তাব পাশ
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে উন্নাওয়ের ২৩ বছরের তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ বছর মার্চ মাসে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়। ঘটনায় গ্রেফতার হন পাঁচ জন। গত ২৫ নভেম্বর জামিন পান অন্যতম অভিযুক্ত শিবম ত্রিবেদী। কিন্তু, জামিন পাওয়ার ১০ দিনের মাথায় নির্যাতিতাকে পুড়িয়ে খুন করার মতো মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে ধর্ষণে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy