পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ ফেসবুকের বিরুদ্ধে। প্রতীকী ছবি।
ব্যবসার স্বার্থে বিদ্বেষের সঙ্গে আপসের অভিযোগ খারিজ করল ফেসবুক। সোমবার সংস্থার এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘সমস্ত ধরনের বিদ্বেষমূলক মন্তব্য বা হিংসা ছড়াতে পারে এমন প্রতিবেদনকে আমরা সব সময়ই নিষিদ্ধ করি। বিশ্ব জুড়েই আমরা এই নীতি অনুসরণ করে থাকি। এ ক্ষেত্রে কোনও রাজনৈতিক অবস্থান বা দলীয় সহযোগিতা পাওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হয় না।’’ যদিও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি আজ ইঙ্গিত দিয়েছে, মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে ফেসবুকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হতে পারে। কমিটির চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর বলেন, ‘‘আমরা অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখব এবং ফেসবুকের কাছে জবাব চাইব।’’
বিদ্বেষ ও হিংসার বিরুদ্ধে কড়া নীতির কথা জানালেও সেই নীতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছু খামতি রয়েছে বলে আজ স্বীকার করে নিয়েছেন ফেসবুক মুখপাত্র। তাঁর কথায়, ‘‘তবে আমাদের আরও কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে। সেটা আমরা জানি এবং সেই মতো পর্যালোচনার কাজও চলছে। নিরপেক্ষ এবং ত্রুটিহীন ব্যবস্থা গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।’’ মার্কিন সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের জেরে ইতিমধ্যেই বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবির। অভিযোগের তদন্তের জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়ারও দাবি উঠেছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত খবরে দাবি, ভারতের শাসক দল বিজেপিকে চটাতে ভয় পান ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। কারণ, তাতে ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্ভাবনা প্রবল। আর তাই বিজেপি নেতাদের হিংসায় উস্কানি বা বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেন না ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। এমনকি, এ বিষয়ে ঘোষিত নীতি ভাঙতেও পিছপা হয় না মার্ক জ়াকারবার্গের সংস্থা।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসায় প্ররোচনা দিতে ফেসবুকে একাধিকবার বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছেন তেলঙ্গানার বিজেপি বিধায়ক টি রাজা সিংহ। ‘বিপজ্জনক ব্যক্তি এবং সংস্থা’ নীতির ভিত্তিতে রাজাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার জন্য সুপারিশ করেছিলেন ফেসবুক কর্মীরা। সংস্থার ভারতীয় শাখার পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর আঁখি দাসের হস্তক্ষেপেই ওই বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছিল কপিল মিশ্র, অনন্ত হেগড়ে-সহ একাধিক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধেও। কিন্তু সংস্থার কর্মীদের আঁখি স্পষ্ট বলে দেন, বিজেপি নেতাদের আইনভঙ্গকারী হিসেবে শাস্তি দিলে ভারতে ফেসবুকের ব্যবসায়িক ক্ষতি হতে পারে।
সোমবার আঁখি দাস প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছেন বলে অভিযোগ। তিনি দিল্লি পুলিশের সাইবার সেলে অভিযোগ জানিয়েছেন, তাঁর পরিচয় প্রকাশ্যে আসার পর একাধিক লোক তাঁকে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ‘ভয়ে’ বিজেপিকে চটায় না ফেসবুক, দাবি মার্কিন সংবাদপত্রে
আঁখির বোন রশ্মি দাস দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিভিপির সভানেত্রী ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে পুরো বিষয়টি নতুন মাত্রা পেয়েছে। কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন আজ বলেন, ‘‘জেএনইউ-র প্রাক্তন এবিভিপি সভানেত্রী রশ্মির সঙ্গে আঁখির কী সম্পর্ক, বিজেপি সেটা প্রকাশ্যে জানাক।’’ রাহুল গাঁধীও বিজেপি এবং আরএসএস ফেসবুক আর হোয়াটসঅ্যাপ নিয়ন্ত্রণ করছে বলে রবিবার অভিযোগ করেন।
অভিযোগের জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘কংগ্রেস আগে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কাণ্ডের কথা খুলে বলুক।’’ কংগ্রেস একাধিক নির্বাচনে ব্রিটিশ সংস্থা কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার সাহায্য নিয়েছে বলে বিজেপির অভিযোগ। মাইক্রো-টার্গেটিং অর্থাৎ ব্যক্তিবিশেষ বা বিশেষ জনগোষ্ঠীকে নিশানা করে প্রচার চালানোর পরাদর্শী এই সংস্থা। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চালিয়ে মানুষকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে অ্যানালিটিকা একাধিক বার ফেসবুকের তথ্য চুরি করেছে বলেও অভিযোগ।
আরও পড়ুন: ‘পিএম কেয়ার্স’ এর তথ্য দিতে অস্বীকার, আরটিআই ফেরাল প্রধানমন্ত্রীর দফতর
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy