দিল্লিতে ভোট প্রচারে যোগী। ছবি: পিটিআই।
কথায় কাজ না-হলে, চলবে গুলি। দিল্লিতে ভোটের প্রচারে নেমে এমনই হুমকি দিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
দিল্লির শাহিন বাগের বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালানোর উত্তপ্ত স্লোগানে অংশগ্রহণ করছিলেন অনুরাগ ঠাকুরের মতো বিজেপি নেতা। শাহিন বাগের বিক্ষোভকারীরা ঘরে ঢুকে বোনেদের ধর্ষণ করতে পারে, পরিবারের লোকেদের হত্যা করতে পারে— এমন অভিযোগ তুলেছিলেন বিজেপি সাংসদ প্রবেশ বর্মা। এর মধ্যেই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনার রাস্তা খোলার ইঙ্গিত দিচ্ছিল মোদী সরকার। কিন্তু সে সব ছাপিয়ে দিল্লিতে যোগীর ঝোড়ো প্রচারে আজ উঠে এল শাহিন বাগ নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগ।
তবে কথা না-শুনলে গুলি করে মারার হুমকি দিলেন যোগী উত্তরপ্রদেশে কাঁওয়ার যাত্রার প্রসঙ্গ টেনে। রবিবার রোহিনী এলাকায় ভোটের সভায় তিনি দাবি করেন, উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ যাদব ক্ষমতায় থাকার সময়ে এই যাত্রার উপরে অনেক বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। তবে তিনি কুর্সিতে বসার পরে সে সব নিষেধাজ্ঞা তুলে দিতে চাইলে প্রশাসনের তরফে বলা হয়, এর ফলে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। শ্রাবণ মাসে শিব ভক্তদের কাঁওয়ার যাত্রার সময়ে দিল্লি ও আশপাশের শহরগুলির স্থানীয় মানুষের সঙ্গে অনেক সময়েই ভক্তদের গোলমাল বাধে। সেই প্রসঙ্গে যোগীর মন্তব্য, ‘‘আমরা কারও উৎসব কিংবা বিশ্বাসে আঘাত করি না। আইনের আওতায় সবাই উৎসবে মাতুক। কিন্তু শিব ভক্তদের উপর কেউ গুলি চালাবে, দাঙ্গা করবে...কেউ যদি কথা না শোনে, বুলেটেই তা শোনাতে হবে।’’ এই হুমকি শোনার পরেই আপ নেতা সঞ্জয় সিংহ দিল্লিতে যোগীর প্রচার নিষিদ্ধ এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআরের দাবি তোলেন। তিনি জানিয়েছেন, ৪৮ ঘণ্টা ধরে চেষ্টা করেও কমিশনের দেখা পাননি আপের নেতারা। ফলে দেখা করার জন্য সময় না দিলে আগামিকাল নির্বাচন কমিশনের সামনে ধর্নায় বসার হুমকি দিয়ে রেখেছে অববিন্দ কেজরীবালের দল।
দিল্লিতে ৮ ফেব্রুয়ারির ভোটের আগে আজ ছিল শেষ রবিবার। প্রচারে দেখা গিয়েছে রাজনীতির তারকাদের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ও জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার। কেজরীবাল-কংগ্রেসকে নিশানা করতে ছাড়েননি কেউ। তার সঙ্গেই ছিল যোগীর অসংখ্য বিতর্কিত মন্তব্য। শাহিন বাগের অবস্থানকে ভারত বিরোধী আখ্যা দিয়ে যোগী বলেন, ‘‘দিল্লি সরকার মানুষকে বিষ জল দিচ্ছে, অথচ শাহিন বাগের বিক্ষোভকারীদের কাছে পাঠাচ্ছে বিরিয়ানি।...যারা কাশ্মীরের জঙ্গিদের সমর্থন করে, তারা শাহিন বাগে এসে ধর্নায় বসেছে, আজাদির স্লোগান দিচ্ছে।’’ এর পরেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘নরেন্দ্র মোদী যখন থেকে প্রধানমন্ত্রী, আমরা সব জঙ্গিকে চিহ্নিত করছি। বিরিয়ানি নয়, গুলি খাওয়াচ্ছি জঙ্গিদের।’’ তাঁর দাবি, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপে দুঃখ পেয়েছে পাকিস্তান আর কেজরীবাল।
নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিতর্ক দিল্লির ভোটে প্রভাব ফেলবে বুঝে ঝাঁপিয়ে পড়েন অমিত শাহও। আজ দুপুরে পুরনো মেহরাম নগরে মহা জনসম্পর্ক অভিযান-এ নামেন তিনি। গলি গলিতে ঘুরে ভোটের প্রচারপত্র বিলি করেন অমিত। কথা বলেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। আর দিল্লিতে বিজেপির জোট শরিক জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার কেজরীবালকে নিশানা করে বলেন, ‘‘কেউ কেউ বিজ্ঞাপনে বিশ্বাসী। তবে আমরা নই। দিল্লির মানুষ যাঁদের হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়েছিলেন, তাঁরা কোনও কাজই করেননি।’’ রাতে বুরারিতে এক মঞ্চে ছিলেন অমিত-নীতীশ। অমিতের মন্তব্য, ‘‘মিথ্যে বলায় এক নম্বরে কেজরীবাল।’’
আজই কিরারি এলাকায় রোড-শো ছিল কেজরীবালের। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘শুধু কিরারিই নয়, গত সত্তর বছরে গোটা দিল্লিতে কোনও কাজ হয়নি। এই অসমাপ্ত কাজ পাঁচ বছরে শেষ করা সম্ভব নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy