লকডাউনের পর এ ভাবেই ঘরে ফিরেছিলেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। ছবি: রয়টার্স
আগামিকাল সোমবার থেকে চালু হচ্ছে একাধিক ক্ষেত্র। ‘নন হটস্পট’ এলাকাগুলিতে শিথিল হচ্ছে লকডাউনের নিয়মকানুন। কিন্তু ভিন রাজ্যে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকরা ঘরে ফিরতে পারবেন না। রবিবার নির্দেশিকা জারি করে রাজ্যগুলিকে জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। বরং ওই শ্রমিকরা যে যেখানে রয়েছেন, সেখানেই স্থানীয় প্রশাসনের কাছে কাজের জন্য নাম নথিভুক্ত করাতে পারবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী তাঁদের কাজ দেওয়া হবে। তবে রাজ্যের মধ্যে স্থানান্তরে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্র।
১৫ এপ্রিল থেকে সারা দেশে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় দফার লকডাউন। চলবে ৩ মে পর্যন্ত। প্রথম দফায় লকডাউন ঘোষণার পরেই বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা।অনেকে দীর্ঘ পথ হেঁটে বাড়ি ফিরেছেন। অনেকে তাও পারেননি। কর্মস্থলেই আটকে পড়েছেন। অনেকেই রাজ্য সরকারগুলির ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন। এর মধ্যেই সোমবার থেকে অর্থনীতিকে কিছুটা সচল করতে বেশ কিছু ক্ষেত্রের কাজকর্ম চালু করার বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। কৃষিকাজ, মাছ চাষ ও পশুপালন, উদ্যান পালন, শিল্প ও শিল্প প্রতিষ্ঠান, চা-কফি-রবার চাষ, সরকারি ও বেসরকারি অফিস কাল থেকেই খুলছে। শুরু হচ্ছে ১০০ দিনের কাজও। যদিও সেগুলি নন-হটস্পট এলাকায় এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে।
কিন্তু তাতে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে, এই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই শুধুমাত্র পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য আলাদা নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্র। রাজ্যগুলিকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘‘যে যেখানে (শ্রমিকরা) আছেন, সেখান থেকে অন্য রাজ্যে যাওয়ার জন্য কোনও ভাবেই অনুমতি দেওয়া যাবে না।’’
স্থানীয় প্রশাসনের কাছে নাম নথিভুক্তির বিষয়ে কেন্দ্রের নির্দেশিকা, ‘‘যে সব পরিযায়ী শ্রমিক ত্রাণকেন্দ্র বা আশ্রয়স্থলে রয়েছেন, তাঁরে সেই রাজ্যের সংশ্লিষ্ট স্থানীয় প্রশাসনে নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। কে কোন ধরনের কাজে দক্ষ বা প্রশিক্ষিত, সেই অনুযায়ী স্থানীয় প্রশাসনই তাঁদের কাজে নিয়োগ করবে।’’ অর্থাৎ, কে কোন ধরনের কাজ করতে চান, বা কী ধরনের কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে, তা স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়ে রাখতে হবে। দরকার মতো প্রশাসন কাজ দেবে।
আরও পড়ুন: শরীরে জীবাণুনাশক স্প্রে করা ক্ষতিকর, নিষেধাজ্ঞা জারি করল কেন্দ্র
নতুন নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, ‘‘যে হেতু ২০ এপ্রিল থেকে সংক্রমিত এলাকার বাইরে বেশ কিছু কর্মকাণ্ড শুরু হচ্ছে, তাই এই পরিযায়ী শ্রমিকদের শিল্প, উৎপাদন, নির্মাণ, কৃষি বা ১০০ দিনের কাজে অস্থায়ী ভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে।’’ কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের বাদ দিয়ে এই সব পরিযায়ী শ্রমিকরা কতটা কাজ পাবেন, বা আদৌ পাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় থাকছেই। তবে যে পরিস্থিতিই হোক, তাঁদের যে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাওয়ার অনুমতি কোনওভাবেই দেওয়া হবে না, কেন্দ্রের এই বিজ্ঞপ্তিতে তা স্পষ্ট করে দেওয়া হল।
আরও পড়ুন: ৩ মে-র পরেও ট্রেন ও বিমান চলার সম্ভাবনা কম: রিপোর্ট
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, লকডাউনের জেরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এই পরিযায়ী শ্রমিক শ্রেণির মানুষ। দিন আনা দিন খাওয়া এই মানুষজনের কেউ কেউ তাই লকডাউন ঘোষণার পর দীর্ঘ পথ হেঁটে পাড়ি দিয়ে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু যাঁরা ফিরতে পারেননি, তাঁরা মাঝপথেই আটকে পড়েছেন। রাজ্য সরকারের কোনও আশ্রয়স্থলে বা ত্রাণশিবিরে অসহায় অবস্থায় দিন কাটছে তাঁদের। পরিবারের লোকজনও রয়েছেন উদ্বেগে, অভাবে। যে এলাকায় আটকে পড়েছেন তাঁরা, সেখানে কাজ পেলেও তাঁদের সেই পরিস্থিতি থেকে কিছুটা সুরাহা হবে। সেই কারণেই কেন্দ্রের এই নির্দেশিকা বলে মত পর্যবেক্ষকদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy