তিন পর সংক্রমণ হার ফের দশ শতাংশ ছাড়াল। গ্রাফিক-শৌভিক দেবনাথ।
দিন তিনেক ৫২ হাজারে বন্দি থাকার পর, বৃহস্পতিবার নতুন করোনা সংক্রমণ হয়েছিল ৫৬ হাজার। শুক্রবার এক লাফে বেড়ে তা হল সাড়ে ৬২ হাজার! সেই সঙ্গে দেশের মোট আক্রান্ত ২০ লাখ ছাড়িয়ে গেল। দিন কয়েক কম থাকার পর আজ ফের সংক্রমণ হার দশ শতাংশ পার করল। পাশাপাশি পরীক্ষাও কম হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। তাই গত কয়েক দিন কোভিড সংক্রান্ত পরিসংখ্যান যে স্বস্তি দিচ্ছিল, আজ তা কিছুটা হলেও উধাও।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬২ হাজার ৫৩৮ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। এক দিনে এত সংখ্যক মানুষ এর আগে আক্রান্ত হননি দেশে। ওই সময়ের মধ্যে, আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৫৮ হাজার ৪৭৩ ও ৫৩ হাজার ১৩৯ জন। এক দিনে আক্রান্ত বৃদ্ধির নিরিখে আজ আবার এক নম্বরে চলে গেল ভারত। এই বৃদ্ধির জেরে ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত হলেন ২০ লক্ষ ২৭ হাজার ৭৪ জন। বিশ্বে প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৪৮ লক্ষ ৮২ হাজার ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ২৯ লক্ষ ১২ হাজার।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। দিন তিনেক ধরে দশ শতাংশের নীচেই রয়েছে এই হার। গত ২৪ ঘণ্টায় তা বেড়ে হয়েছে ১০.৮৮ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে পাঁচ লক্ষ ৭৪ হাজার ৭৮৩ জনের। যা গত তিন দিনের তুলনায় বেশ খানিকটা কম।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও শুরু থেকেই স্বস্তি দিয়ে আসছে। এখনও পর্যন্ত মোট ১৩ লক্ষ ৭৮ হাজার ১০৫ জন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের প্রায় ৬৮ শতাংশই সুস্থ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪৯ হাজার ৭৬৯ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
মৃত্যুর নিরিখে স্পেন, ফ্রান্স, ইটালিকে পিছনে ফেলে বিশ্বের পঞ্চম স্থানে রয়েছে ভারত। যদিও মৃত্যুর হার ওই সব দেশগুলির তুলনায় ভারতে অনেকটাই কম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৮৮৬ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৪১ হাজার ৫৮৫ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ১৬ হাজার ৭৯২ জন। দিল্লিকে পিছনে ফেলে মৃত্যু তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে তামিলনাড়ু। দক্ষিণের এই রাজ্যে মোট মৃত চার হাজার ৫৭১ জন। দেশের রাজধানীতে সেই সংখ্যাটা চার হাজার ৫৯ জন।
জুলাই জুড়েই মৃত্যু বেড়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে কর্নাটক। সেখানে কোভিডের কারণে এখনও অবধি দু’হাজার ৮৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুজরাতে দু’হাজার ৫৮৩ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনাভাইরাস। উত্তরপ্রদেশ (১,৯১৮), পশ্চিমবঙ্গ (১,৯০২) ও অন্ধ্রপ্রদেশে (১,৭৫৩) মৃতের সংখ্যা রোজদিন বেড়েই চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৯৪৬), রাজস্থান (৭৫৭), তেলঙ্গানা (৬০১), পঞ্জাব (৫১৭), হরিয়ানা (৪৫৮), জম্মু ও কাশ্মীর (৪৩৬), বিহার (৩৬৩), ওড়িশা (২৩৫) ও ঝাড়খণ্ড (১৪৫)। বাকি রাজ্যগুলিতে মৃতের সংখ্যা এখনও ১০০ পেরোয়নি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
শুরু থেকেই মহারাষ্ট্র সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে। সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত চার লক্ষ ৭৯ হাজার ৭৭৯ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত দু’লক্ষ ৭৯ হাজার ১৪৬ জন। সংক্রমণ তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১০ হাজার নতুন সংক্রমণের জেরে সেখানে এখন মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ৯৬ হাজার ৭৮৯ জন। তবে জুলাই জুড়েই রাজধানী দিল্লিতে দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধিতে বেশ খানিকটা লাগাম পড়েছে। এখন সেখানে দৈনিক আক্রান্ত বৃদ্ধি এক হাজারের নীচে নেমে গিয়েছে। রাজধানীতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন এক লক্ষ ৪১ হাজার ৫৩১ জন। সংক্রমণের নিরিখে দিল্লিকে পিছনে ফেলে চতুর্থ স্থানে উঠে এল কর্নাটক। সেখানে মোট আক্রান্ত হয়েছেন এক লক্ষ ৫৮ হাজার ২৫৪ জন। উত্তরপ্রদেশেও মোট আক্রান্ত এক লক্ষ পেরিয়ে বেড়ে চলেছে।
পশ্চিমবঙ্গেও রোজদিন বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সোমবার সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে, নতুন করে দু’হাজার ৯৫৪ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এক দিনে এত সংখ্যক মানুষ এর আগে আক্রান্ত হননি রাজ্যে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ৮৬ হাজার ৭৫৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের। করোনার কবলে পড়ে রাজ্যে এখনও অবধি মোট প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজার ৯০২ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy