দেশের মোট মৃত্যুর এক তৃতীয়াংশেরও বেশি মহারাষ্ট্রে। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
সেপ্টেম্বর থেকেই দৈনিক মৃত্যু হচ্ছিল এক হাজারের বেশি। এ ভাবে বাড়তে বাড়তে করোনাভাইরাসের জেরে দেশে মোট মৃত্যু এক লক্ষ ছাড়াল। মোট মৃত্যুর তালিকায় বিশ্বের তৃতীয় স্থানেই রয়েছে ভারত। প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মৃত্যু হয়েছে দু’লক্ষেরও বেশি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ১ লক্ষ ৪৪ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়েছে করোনা।
মোট মৃত্যু এক লক্ষ পেরলেও আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির তুলনায় ভারতে মৃত্যুহার অনেকটাই কম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৬৯ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ১ লক্ষ ৮৪২ জনের প্রাণহানি ঘটিয়েছে করোনা। দেশের মোট মৃত্যুর এক তৃতীয়াংশেরও বেশি মহারাষ্ট্রে। সেখানে ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন ৩৭ হাজার ৪৮০ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মৃত্যু সাড়ে ন’হাজার ছাড়িয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা কর্নাটকেও মৃতের সংখ্যা ৯ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশে করোনা প্রাণ কেড়েছে ৫ হাজার ৯০০ জনের। উত্তরপ্রদেশ মৃত্যু ছ’হাজার ছুঁইছুঁই। দিল্লিতে (৫,৪৩৮) মৃত্যু বেড়ে চলেছে। পশ্চিমবঙ্গ (৫,০৭০), গুজরাত (৩,৪৭৫), পঞ্জাব (৩,৫০১) ও মধ্যপ্রদেশ (২,৩৭২) মৃত্যু-তালিকার উপরের দিকে রয়েছে। রাজস্থান, হরিয়ানা, তেলঙ্গানা ও জম্মু ও কাশ্মীরের মোট মৃত্যুও এক হাজার ছাড়িয়ে বেড়ে চলেছে। এর পর তালিকায় রয়েছে বিহার, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, অসম, কেরল, উত্তরাখণ্ড, পুদুচেরি, গোয়া, ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলি।
মৃত্যু বাড়লেও গত কয়েক দিন ধরে দেশের দৈনিক সংক্রমণ স্বস্তি দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। ওই সময়ের মধ্যে আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৫৩ হাজার ৯৮০ ও ২০ হাজার ২০৫। গত দু’মাস ধরেই ওই দু’টি দেশের তুলনায় ভারতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
মোট আক্রান্তের নিরিখে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে ভারত। আমেরিকার পরই। দেশে এখনও অবধি আক্রান্ত হয়েছেন ৬৪ লক্ষ ৭৩ হাজার ৫৪৪ জন। সেখানে বিশ্বের আক্রান্তের তালিকায় প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৭৩ লক্ষ ৩১ হাজার ও তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ৪৮ লক্ষ ৬৭ হাজার।
দেশে কোভিড আক্রান্তদের সুস্থ হওয়ার হারও শুরু থেকেই আশাব্যঞ্জক। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ৫৪ লক্ষ ২৭ হাজার ৭০৬ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। যা গোটা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশের মোট আক্রান্তের ৮৩.৮৪ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সুস্থ হয়েছেন ৭৫ হাজার ৬২৮ জন। এখন ভারতে অ্যাক্টিভ রোগী রয়েছেন ন’লক্ষ ৪৪ হাজার ৯৯৬ জন।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। আজ তা ৭.০২ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ১১ লক্ষ ৩২ হাজার ৬৭৫ জনের। যা গত কালের তুলনায় প্রায় এক লক্ষ বেশি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
মৃত্যুর পাশাপাশি মোট আক্রান্তের নিরিখেও দেশের শীর্ষে মহারাষ্ট্র। দেশের মোট আক্রান্তের ২০ শতাংশেরও বেশি সেখানে। এখনও অবধি ১৪ লক্ষ ১৬ হাজার জন আক্রান্ত হয়েছেন মহারাষ্ট্রে। ৭ লক্ষ ৬ হাজার আক্রান্ত নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে অন্ধ্রপ্রদেশ। কর্নাটক ও তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত ৬ লক্ষ ছাড়িয়ে বাড়ছে। উত্তরপ্রদেশেও সংখ্যাটা ৪ লক্ষ পেরিয়েছে। দিল্লিতে দু’লক্ষ ৮৫ হাজার ও পশ্চিমবঙ্গে দু’ লক্ষ ৬৩ হাজার জন সংক্রমিত হয়েছেন। ওড়িশাতে প্রায় তিন হাজারের ঘরে বাড়তে বাড়তে ২ লক্ষ ২৬ হাজারে পৌঁছেছে। কেরলেও গত কয়েক দিন আট হাজারের বেশি দৈনিক সংক্রমণ হচ্ছে। এর জেরে সেখানে মোট আক্রান্ত ২ লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে।তেলঙ্গানাতে আক্রান্ত ১ লক্ষ ৯৭ হাজার জন। বিহার (১.৮৫ লক্ষ) ও অসমেও (১.৮৩ লক্ষ) আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। গুজরাত (১.৩৯ লক্ষ), রাজস্থান (১.৩৯ লক্ষ), হরিয়ানা (১.৩১ লক্ষ), মধ্যপ্রদেশে (১.৩২ লক্ষ), পঞ্জাব (১.১৬ লক্ষ), ছত্তীসগড়ে (১.১৮ লক্ষ) আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে ঝাড়খণ্ড, জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, পুদুচেরি, ত্রিপুরা, হিমাচল প্রদেশের মতো রাজ্যগুলি। এই রাজ্যগুলিতে মোট আক্রান্ত এখনও এক লক্ষের কম।
পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণ সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই তিন হাজারের বেশি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে তিন হাজার ৩১০ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন দু’লক্ষ ৬৩ হাজার ৬৩৪ জন। যদিও এর মধ্যে ২ লক্ষ ৩১ হাজার রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৩ জনের। করোনার কবলে এ রাজ্যে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ হাজার ৭০ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy