গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে দেশে। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা রবিবার ছাড়িয়ে ছিল চার লাখ। বুধবার তা ছাড়িয়ে গেল সাড়ে চার লাখ। এ ভাবেই দেশে ফি-দিন বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। আর এই সংক্রমণ বৃদ্ধি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে চিকিৎসক থেকে বিশেষজ্ঞদের।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১৬ হাজার জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন চার লক্ষ ৫৬ হাজার ১৮৩ জন। মহারাষ্ট্র, দিল্লি ও তামিলনাড়ু— দেশের মোট আক্রান্তের প্রায় ৬০ শতাংশই এই তিনটি রাজ্য থেকে।
করোনায় আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুও বাড়াচ্ছে উদ্বেগ। করোনার থাবায় মৃত্যু সংখ্যা ইতিমধ্যেই ১৪ হাজার পার করেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত ১৪ হাজার ৪৭৬ জনের মৃত্যু হল করোনার কারণে। এর মধ্যে সাড়ে ছ’হাজারেরও বেশি মৃত্যু হয়েছে শুধু মহারাষ্ট্রেই। দিল্লিতেও বাড়তে বাড়তে সংখ্যাটা দু’হাজার তিনশোর ঘরে ঠেকেছে। তৃতীয় স্থানে থাকা গুজরাতে মারা গিয়েছেন এক হাজার ৭১০ জন। তামিলনাড়ু (৮৩৩), উত্তরপ্রদেশ (৫৮৮), পশ্চিমবঙ্গ (৫৮০), মধ্যপ্রদেশ (৫২৫)-এ মৃত্যু সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে রাজস্থান (৩৬৫), তেলঙ্গানা (২২০), হরিয়ানা (১৭৮), কর্নাটক (১৫০), অন্ধ্রপ্রদেশ (১১৯) ও পঞ্জাব (১০৫)-র মতো রাজ্যগুলি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আক্রান্ত ও মৃত্যু রোজদিন বাড়লেও সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটা স্বস্তি দিচ্ছে ভারতকে। এখন দেশে সুস্থ হয়ে ওঠা করোনা রোগীর সংখ্যা সক্রিয় করোনা আক্রান্তের চেয়ে বেশি। মোট আক্রান্তের অর্ধেকেরও বেশি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার ৪৯৫ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট দু’লক্ষ ৫৮ হাজার ৬৮৫ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন।
গোড়া থেকেই দেশে করোনা সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। সেখানে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ৩৯ হাজার ১০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ২১৪ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সে রাজ্যে। দিল্লিতেও রোজদিন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। আক্রান্তের নিরিখে সম্প্রতি তামিলনাড়ুকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে দেশের রাজধানী। সেখানে এখন মোট আক্রান্ত ৬৬ হাজার ৬০২ জন। তামিলনাড়ুতে ৬৪ হাজার ৬০৩ জন। চতুর্থ স্থানে থাকা গুজরাতে মোট আক্রান্ত ২৮ হাজার ৩৭১ জন।
করোনা সংক্রমণের হিসাবে এর পর রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ ও হরিয়ানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ। এই সব রাজ্যগুলি ১০ হাজারের গণ্ডি পার করে এগিয়ে চলেছে। উত্তরপ্রদেশ (১৮,৮৯৩), রাজস্থান (১৫,৬২৭), পশ্চিমবঙ্গ (১৪,৭২৮), মধ্যপ্রদেশ (১২,২৬১), হরিয়ানা (১১,৫২০) ও অন্ধ্রপ্রদেশে (১০,০০২) জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে কর্নাটক (৯,৭২১), তেলঙ্গানা (৯,৫৫৩), বিহার (৮,১৫৩), জম্মু ও কাশ্মীর (৬,২৩৬), অসম (৫,৮৩১), ওড়িশা (৫,৪৭০), পঞ্জাব (৪,৩৯৭), কেরল (৩,৪৫১)-র মতো রাজ্যগুলি।
লকডাউন উঠে যাওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গেও সংক্রমণ বাড়েছে। ভিন রাজ্য থেকে ফেরা শুরু হতেই কলকাতার আশপাশে জেলাগুলিতেও ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭০ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন এ রাজ্যে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত হলেন ১৪ হাজার ৭২৮ জন। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মোট ৫৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy