শেষ ক’দিনে কর্নাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশে দৈনিক মৃত্যু সংখ্যা বৃদ্ধি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বিশেষজ্ঞদের।
ন’লাখের গণ্ডি ছাড়িয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে দেশে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯ হাজার ৪২৯ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। ২৪ ঘণ্টার নিরিখে যা এখনও অবধি সর্বোচ্চ। এক দিনে এত সংখ্যক মানুষ এর আগে আক্রান্ত হননি। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন নয় লক্ষ ৩৬ হাজার ১৮১ জন। আক্রান্তের সঙ্গে সংক্রমণের হারও ঊর্ধ্বমুখী। প্রতিদিন যে সংখ্যক মানুষের টেস্ট হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট কোভিড পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণের হার ৮.৯ শতাংশ।
আক্রান্তের পাশাপাশি ধারাবাহিক ভাবে মৃত্যু বেড়ে ২৪ হাজার ছাড়াল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৫৮২ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ২৪ হাজার ৩০৯ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ১০ হাজার ৬৯৫ জন। মৃত্যুর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা দিল্লিতে প্রাণ গিয়েছে তিন হাজার ৪৪৬ জনের। দু’হাজার ৯৯ জনের প্রাণহানি নিয়ে মৃত্যু-তালিকার তৃতীয় স্থানে তামিলনাড়ু। গুজরাতে দু’হাজার ৬৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন করোনার কারণে। উত্তরপ্রদেশ (৯৮৩) ও পশ্চিমবঙ্গেও (৯৮০) মৃত্যুর সংখ্যা হাজার ছুঁইছুঁই। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে কর্নাটক (৮৪২), মধ্যপ্রদেশ (৬৭৩), রাজস্থান (৫২৫), অন্ধ্রপ্রদেশ (৪০৮), তেলঙ্গানা (৩৭৫), হরিয়ানা (৩১২), পঞ্জাব (২১৩), জম্মু ও কাশ্মীর (১৯৫), বিহার (১৭৪)। বাকি রাজ্যগুলিতে মৃতের সংখ্যা এখনও ১০০ পেরোয়নি। তবে শেষ ক’দিনে কর্নাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশে দৈনিক মৃত্যু সংখ্যা বৃদ্ধি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বিশেষজ্ঞদের।
আক্রান্ত দ্রুত হারে বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও বেশ স্বস্তিদায়ক। আক্রান্ত হওয়ার পর এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন প্রায় ছ’লক্ষ মানুষ। অর্থাৎ মোট আক্রান্তের ৬৩ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২০ হাজার ৫৭২ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট পাঁচ লক্ষ ৯২ হাজার ৩১ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হলেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
শুরু থেকেই মহারাষ্ট্রে বল্গাহীন ভাবে বেড়েছে সংক্রমণ। গোড়া থেকেই এই রাজ্য কার্যত সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে। তার পর সময় যত গড়িয়েছে, এই রাজ্য নিয়ে সারা দেশের শঙ্কা বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে ছ’হাজারের বেশি সংক্রমণের জেরে সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন দু’লক্ষ ৬৭ হাজার ৬৬৫ জন। তামিলনাড়ু ও দিল্লির মোট সংক্রমণ এক লাখ পেরিয়ে রোজ দিন বাড়ছে। তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ৪৪ হাজার ৩২৪ জন। রাজধানী দিল্লিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ ১৫ হাজার ৩৪৬ জন।
বিগত কয়েকদিনে কর্নাটকে দৈনিক সংক্রমণ হচ্ছে দু’হাজারেরও বেশি। যার জেরে সংক্রমণ তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে দক্ষিণের এই রাজ্য। সেখানে মোট আক্রান্ত ৪৪ হাজার ৭৭ জন। ৪৩ হাজার ৬৩৭ আক্রান্ত নিয়ে এর পর পঞ্চমে গুজরাত। উত্তরপ্রদেশ (৩৯,৭২৪), তেলঙ্গানা (৩৭,৭৪৫), অন্ধ্রপ্রদেশে (৩৩,০১৯) ও পশ্চিমবঙ্গে (৩২,৮৩৮) আক্রান্তের সংখ্যা রোজদিন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে রাজস্থান (২৫,৫৭১), হরিয়ানা (২২,৬২৮), বিহার (১৯,২৮৪), মধ্যপ্রদেশ (১৯,০০৫), অসম (১৭,৮০৭), ওড়িশা (১৪,২৮০), জম্মু ও কাশ্মীর (১১,১৭৩)-এর মতো রাজ্য। কেরল, পঞ্জাব, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, ত্রিপুরার মোট আক্রান্ত এখনও ১০ হাজারের কম।
পশ্চিমবঙ্গেও রোজ দিন কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে এক হাজারেও বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৩৯০ জন। এই নিয়ে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ৩২ হাজার ৮৩৮। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের। রাজ্যে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হল ৯৮০ জনের।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy