মঙ্গলবার করোনা সারানোর দাবি করে বাজারে ওষুধ আনে পতঞ্জলি।
করোনায় নাজেহাল গোটা দুনিয়া। এই অতিমারির হাত থেকে রেহাই পেতে হন্যে হয়ে প্রতিষেধকের খোঁজ চালাচ্ছেন সারা বিশ্বের গবেষকরা। সেই গবেষণায় শামিল ভারতও। এর মাঝেই ৭ দিনে করোনা সারানোর গ্যারান্টি দিয়ে আয়ুর্বেদিক ওষুধ বাজারে আনল যোগগুরু রামদেবের সংস্থা পতঞ্জলি। মঙ্গলবার ওই সংস্থার তরফে ১০০ শতাংশ ক্ষেত্রে করোনা সারানোর দাবি করা হয়েছে। পতঞ্জলির এই ঘোষণার পর পরই বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ওই ওষুধ সম্পর্কে সবিস্তার জানানোর জন্য আয়ুর্বেদ সংস্থাটিকে নির্দেশ দিয়েছে আয়ুষ মন্ত্রক। ওষুধের গুণাগুণ পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত বিজ্ঞাপন দিতে নিষেধ করা হয়েছে।
এ দিন পতঞ্জলির তরফে ‘করোনিল’ ও ‘শ্বাসরি’ নামে দু’টি ওষুধ বাজারে আনা হয়েছে। সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা রামদেব দাবি করেছেন, সারা দেশে ২৮০ জন করোনা রোগীর উপর পরীক্ষালব্ধ গবেষণা থেকেই ওই ওষুধগুলি তৈরি করা হয়েছে। রামদেব বলেন, ‘‘সারা দেশ এবং গোটা পৃথিবী করোনার ওষুধ অথবা ভ্যাকসিনের অপেক্ষায় রয়েছে। আমরা গর্ব অনুভব করছি যে, পতঞ্জলি এবং এনআইএমএস-এর যৌথ গবেষণায় এই ওষুধ মিলেছে।’’
এই কিটই বাজারে এনেছে পতঞ্জলি।
রামদেব এ-ও দাবি করেন, ‘‘আমরা দু’টি পরীক্ষা চালিয়েছিলাম। দিল্লি, আহমেদাবাদ-সহ একাধিক শহরে প্রথম গবেষণা চলেছিল। ২৮০ জন রোগীর সকলেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। আমরা করোনা এবং সেই রোগের নানা জটিলতা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। এর পরে রোগ নিয়ন্ত্রণের পরীক্ষা হয়।’’ কোথায় কত রোগীর উপর ওই ওষুধ পরীক্ষা করা হয়েছিল তা-ও ব্যাখ্যা করেছেন রামদেব। তাঁর দাবি, এনআইএমএস-এর সহায়তায় জয়পুরে ৯৫ জন রোগীর উপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানো হয়েছিল। তিনি এ-ও দাবি করেছেন, ৩ দিনে ৬৯ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। রামদেব বলছেন, ‘‘৭ দিনে ১০০ শতাংশ করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন।’’ রোগীদের উপর এই গবেষণা চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় ছাড়পত্রও মিলেছিল বলে দাবি করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: পাক হাইকমিশনের অর্ধেক কর্মীকে ফেরত পাঠাচ্ছে নয়াদিল্লি
পতঞ্জলি করোনার ওষুধ বাজারে আনার কিছু ক্ষণের মধ্যেই পদক্ষেপ করে কেন্দ্রীয় সরকার। ওই দু’টি ওষুধ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছে আয়ুষ মন্ত্রক। মন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পতঞ্জলির এই দাবির বাস্তবতা এবং বিস্তারিত জানে না আয়ুষ মন্ত্রক। ওই ওষুধগুলি কী দিয়ে তৈরি তা জানতে চাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কোন কোন হাসপাতালে গবেষণা চালানো হয়েছে, ইনস্টিটিউশনাল এথিকস কমিটির ছাড়পত্র রয়েছে কিনা তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে পতঞ্জলির কাছ থেকে। লাইসেন্স এবং ওষুধের অনুমোদন সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যও চেয়েছে আয়ুষ মন্ত্রক। এ দিনই সারা দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লক্ষ ৪০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ১৪ হাজার মানুষের।
আরও পড়ুন: গালওয়ানে হামলার নির্দেশ দিয়েছিল চিন, বলছে মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট
করোনার প্রতিষেধক নিয়ে বিভিন্ন দেশেই গবেষণা চলছে। সেই তালিকায় রয়েছে ভারত, আমেরিকা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া-সহ বহু দেশ। এর মধ্যেই নানা বিকল্প ওষুধ করোনার সারাতে সক্ষম বলে অনেকেই দাবি করেছেন। এ নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। তাদের মতে, কিছু পাশ্চাত্য, পরম্পরাগত অথবা ঘরোয়া টোটকা করোনার উপসর্গ দূর করতে কিছুটা সক্ষম। হু এ-ও বলছে, তার অর্থ এই নয় যে, সেগুলি করোনা দূর করবে। হু এমন ওষুধ সুপারিশ করেনি বলেও ওই আন্তর্জাতিক সংস্থাটির তরফে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy