Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus Lockdown

চাকা ঘুরল ঘরে ফেরার ৮ ট্রেনের

৫৫ দিনের মাথায় ফের ট্রেন চলল নয়াদিল্লি স্টেশন থেকে। যাকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত আখ্যা দিয়ে পরে টুইট করেছে উত্তর রেল।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২০ ০৩:২৮
Share: Save:

ঐতিহাসিক মুহূর্ত!

ঘড়ির কাঁটা চারটে ছুঁতেই দীর্ঘ বাঁশি। সরীসৃপের মতো গা-ঝে়ড়ে নয়াদিল্লি স্টেশন থেকে গতি নিল বিলাসপুরগামী প্রথম ট্রেনটি। ৫৫ দিনের মাথায় ফের ট্রেন চলল নয়াদিল্লি স্টেশন থেকে। যাকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত আখ্যা দিয়ে পরে টুইট করেছে উত্তর রেল। প্রায় দু’মাসের মাথায় ফের প্রাণ ফিরে পেল নয়াদিল্লি স্টেশন। যে স্টেশনে ফি দিন ৩৫১টি ট্রেন ও পাঁচ লক্ষ যাত্রীতে সরগরম থাকত, তাতে আজ খানিকটা হলেও ফিরল কর্মচাঞ্চল্য।

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে থাকা যাত্রীদের বাড়ি পৌঁছে দিতে আজ থেকে বিশেষ ট্রেন পরিষেবা শুরু করেছে রেল। এ দিন দেশের বিভিন্ন স্টেশন থেকে আটটি ট্রেন ছেড়েছে। প্রথমটি ছাড়ে বেলা চারটেয়, নয়াদিল্লি থেকে। এর পরে নয়াদিল্লি থেকে ছেড়ে যায় ডিব্রুগড় ও বেঙ্গালুরুগামী ট্রেন। বিলাসপুরগামী ট্রেনে ১১৭৭ জন, ডিব্রুগড়গামী ট্রেনে ১১২২ জন ও বেঙ্গালুরুগামী ট্রেনে ১১৬২ জন যাত্রা করেছেন। হাওড়া, মুম্বই সেন্ট্রাল, আমদাবাদ, পটনা ও বেঙ্গালুরু থেকে এ দিন দিল্লি রওনা দিয়েছে পাঁচটি ট্রেন। কাল সেগুলি পৌঁছবে। রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী এক সপ্তাহের এই বিশেষ ট্রেনগুলির জন্য মোট ৫৪ হাজার যাত্রী
টিকিট কেটেছেন।

বেলা চারটেয় প্রথম ট্রেন ছাড়ার কথা থাকলেও, নয়াদিল্লি স্টেশনে এ দিন ভিড় জমতে শুরু করে দুপুর দেড়টা থেকেই। অজমেরি গেটের দিক থেকে ঢোকার পথ বন্ধ। খোলা ছিল শুধু পাহাড়গঞ্জের গেটটি। ফলে বেলা আড়াইটে নাগাদ যাত্রীদের লাইন লম্বা হতে থাকে কনট প্লেসের দিকে। টিকিট পরীক্ষার পরে থার্মাল স্ক্রিনিং হয়। স্টেশনে ঢুকতেই ও ট্রেনে ওঠার আগে ফের একপ্রস্ত স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হয় প্রত্যেক যাত্রীকে।

আরও পড়ুন: উড়ানে ঘেঁষাঘেঁষি বসার ব্যবস্থা, উঠছে প্রশ্ন

দিল্লিতে অসুস্থ মাকে দেখতে এসে কোলের মেয়েকে নিয়ে আটকে পড়েছিলেন রেখা চৌহান। পাঁচ বছরের আর এক মেয়ে বিলাসপুরের বাড়িতে। দু’মাস পরে ফেরার সুযোগ পেয়ে বললেন, “আর তর সইছে না। কত ক্ষণে পৌঁছব, তা-ই ভাবছি।” নয়ডায় কলেজে পড়েন ঝাঁসির রশিদ। টিকিট বিক্রি শুরু হতে আর দেরি করেননি। টিকিট কেটে উঠে পড়েছেন বিলাসপুরের ট্রেনে। ঝাঁসিতে দাঁড়াবে সেটি। মুখে হাসি নিয়ে বললেন, “ভেবেছিলাম ইদটা এ বার একাই কাটাতে হবে। বিশেষ ট্রেন চালানোয় ইদের আগে বাড়ি ফিরতে পারছি।”

বেঙ্গালুরুর ট্রেন রাত নটায় হলেও, রাজীব কুমার চলে এসেছিলেন বিকেল চারটের মধ্যে। অফিসের কাজে দিল্লিতে এসে আটকে পড়েছিলেন। রাজীব বলেন, “অনেক কষ্টে টিকিট পেয়েছি। রাস্তায় কোনও গাড়ি নেই। উপরন্তু শুনলাম ট্রেনে ওঠার আগে অনেক পরীক্ষা হবে, তাই ঝুঁকি না-নিয়ে আগেই চলে এসেছি।” লাইনে থাকা প্রত্যেক যাত্রীর ভাবনাটা উঠে এল রাজীবের মুখে, “এখন কোনও ভাবে বাড়ি ফিরতে চাই।”

অন্য বিষয়গুলি:

Migrant Workers New Delhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE