Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Migrant Workers

শ্রমিক ট্রেনে দুর্ভোগ, দায় নিল না রেল

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিযায়ী শ্রমিকদের ওই দুর্দশার ছবি প্রশ্ন তুলে দিয়েছে রেলের সার্বিক কমর্দক্ষতা নিয়ে।

বিরোধীদের অভিযোগ, পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি রেলের ওই মনোভাব আসলে সরকারের অসংবেদনশীলতারই প্রতিফলন। ছবি: পিটিআই।

বিরোধীদের অভিযোগ, পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি রেলের ওই মনোভাব আসলে সরকারের অসংবেদনশীলতারই প্রতিফলন। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২০ ০৩:০৫
Share: Save:

চিত্র-১। বন্ধ শৌচাগারে মরে পড়ে রয়েছেন মুম্বই ফেরত শ্রমিক। জানা গেল চার-চার দিন পর।

চিত্র-২। মুজফফ্‌রপুর স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে শুয়ে থাকা মৃত মা-কে জাগানোর চেষ্টা করে চলেছে এক শিশু। ক’দিন আগে এই স্টেশনেই দুধ না-পেয়ে মায়ের কোলে মারা যায় একটি শিশু। হন্যে হয়ে ঘুরেও দুধ জোগাড়ে ব্যর্থ হন বাবা।

চিত্র-৩। তিন দিনের মাথায় ধুঁকতে ধুঁকতে গোয়া থেকে ট্রেনে মণিপুর পৌঁছলেন এক দল শ্রমিক। পটনা যাওয়ার শ্রমিক ট্রেন পৌঁছল পুরুলিয়া। গোরক্ষপুরের ট্রেন রৌরকেলা।

চিত্র-৪। স্টেশনে ট্রেন থামতেই লুট হয়ে যাচ্ছে খাবার, জল। প্রবল গ্রীষ্মে কামরার শৌচাগারে জল ভরেনি রেল।

আরও পড়ুন: দ্বিতীয় দফার ব্যর্থতা ঢাকতে চায় বিজেপি

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিযায়ী শ্রমিকদের ওই দুর্দশার ছবি প্রশ্ন তুলে দিয়েছে রেলের সার্বিক কমর্দক্ষতা নিয়ে। বিরোধীদের অভিযোগ, পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি রেলের ওই মনোভাব আসলে সরকারের অসংবেদনশীলতারই প্রতিফলন। সব অভিযোগের জবাব দিতে আজ মাঠে নামেন রেলবোর্ডের চেয়ারম্যান বিনোদ যাদব।

আরও পড়ুন: করোনা নিয়ে সরকার কাঠগড়ায়, বেঞ্চ বদল গুজরাতে

মুজফফ্‌পুরের ঘটনা নিয়ে যাদব জানিয়েছেন, মহিলা অসুস্থ ছিলেন। মারা যাওয়ায় তাঁকে স্টেশনে শুইয়ে রাখা হয়েছিল। পরিবারের লোকেরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার সময়ে কেউ ভিডিয়ো তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়। ওই মহিলার দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে কি না, শিশুর দায়িত্ব কে নেবে, এই সব প্রশ্নের জবাব রাজ্য সরকারের কাছে শুক্রবার জানতে চেয়েছে পটনা হাইকোর্ট। বিহার সরকার জানায়, ওই মহিলা মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন। বাচ্চার দায়িত্ব মহিলার বোন নিয়েছেন। তবে মহিলার দেহের ময়নাতদন্ত হয়নি বলেই জানিয়েছে নীতীশ সরকার। যদিও পরিবারের দাবি, মহিলা মানসিক রোগী ছিলেন বলে রেল যা বলছে, তা ঠিক নয়। আমদাবাদ থেকে আসার সময়ে প্রচণ্ড গরমে খাবার ও জল না পেয়ে মারা যান ভিন্ রাজ্যে কাজে যাওয়া ওই মহিলা। আর বন্ধ শৌচাগারে মৃতদেহ প্রসঙ্গে রেলের দাবি, ট্রেনটি ঝাঁসি এসেছিল সাফাই হতে। তখনই মৃতদেহ উদ্ধার হয়। কখন ও কী ভাবে ওই ব্যক্তি মারা গেলেন, তা ময়নাতদন্তে জানা যাবে।

রেল মন্ত্রক জানিয়েছে, ১ মে থেকে শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে ৩,৮৪০টি ট্রেন চালানো হয়েছে। তার মধ্যে ২০-২৪ মে-এর মধ্যে কেবল ৭১টি ট্রেন ঘুরপথে গন্তব্যে পৌঁছেছে। মাত্র ৪টি ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছতে অতিরিক্ত এক দিন বেশি সময় নিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে গোয়া-মণিপুর ট্রেনটি। বিনোদ যাদবের দাবি, ‘‘অসমে ধস নামায় ট্রেনটিকে দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়।’’ রেলের যুক্তি, অধিকাংশ ট্রেন বিহার ও উত্তরপ্রদেশগামী হওয়ায় লাইনে ভিড়ের কারণে ট্রেন ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। সূত্রের মতে, সমালোচনা হওয়ায় ৪ দিন বাদে ওই নীতি থেকে সরে আসে রেল। দু’থেকে তিন শতাংশ ট্রেনে খাবার পৌঁছতে না পারার কথাও স্বীকার করে নিয়েছে রেল। মেনে নেওয়া হয়েছে স্টেশন লুঠের ঘটনাও। তবে রেলের দাবি, ঘটনাগুলি ব্যতিক্রম। অভুক্ত থাকায় যাত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE