সেই ছবিতে রামপুকার। ছবি: পিটিআই
সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের আলোকচিত্রী অতুল যাদব যখন ছবিটা তুলেছিলেন, তখন নাম, ফোন নম্বর কিছুই নেওয়া হয়নি। লকডাউনের দিনগুলোয় পরিযায়ী শ্রমিকদের অসহায়তার অনেক ছবিই তাঁকে তুলতে হয়েছে। তবু গত সোমবার বিকেলে দিল্লির নিজামউদ্দিন সেতুর কাছে মোবাইল ফোনটা আঁকড়ে ধরে কান্নায় দুমড়ে যাওয়া মুখ তাঁকে গাড়ি থেকে নামতে বাধ্য করেছিল।
অতুল লিখছেন, ‘এ ক’দিনে মানুষের এত কান্না দেখেছি যে, তা নতুন করে বিস্ময় আর জাগায় না। তবু মধ্যবয়সি মানুষটিকে হাউহাউ করে কাঁদতে দেখে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে পারলাম না। শুধু ছবি তুলেও এগিয়ে যেতে পারলাম না।’
অতুল প্রশ্ন করে জানলেন, ওঁর ছেলে গুরুতর অসুস্থ। মৃত্যুপথযাত্রী। উনি যে কোনও ভাবে বাড়ি ফিরতে চান। কোথায় বাড়ি? কান্নার দমকের ফাঁকে জড়ানো গলা যমুনা-পারের দিকে হাত দেখিয়ে বলল, ‘‘উধার!’’ বেশ কিছু ক্ষণ সময় লাগল অতুলের ওই উধার-এর মর্ম বুঝতে। উধার মানে, ১২০০ কিলোমিটার দূর, বিহারের বেগুসরাই। নজাফগড়ে শ্রমিকের কাজ করতে এসেছিলেন। এখন হাঁটতে শুরু করেছেন। কিন্তু পুলিশ যমুনা সেতু পেরোতে দেয়নি। তিন দিন ধরে সেতুর উপরেই বসে আছেন তিনি। অতুল ওঁকে কিছু বিস্কুট আর জল দিলেন। সান্ত্বনাও দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ভাষা জোগায়নি।
আরও পড়ুন: ‘আপনার সাইকেলটি নিয়ে চললাম, আমায় ক্ষমা করবেন’
অতুল পুলিশের কাছে গেলেন। অনুরোধ করলেন, ওঁকে কি যেতে দেওয়া যায় না? পুলিশ গাঁইগুঁই করছিল। তবে সংবাদমাধ্যমের লোক দেখে জানাল, ওঁকে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে। অতুল ছবি জমা দিলেন অফিসে। কিন্তু এ সবের মধ্যে মানুষটির নাম, ফোন নম্বর কিছুই নেওয়া হয়নি।
কী করে খবর পাওয়া যাবে, উনি ফিরতে পারলেন কি না?
বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। ছবিটা দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল। বিচলিত করেছিল বহু মানুষকে। খবরের কাগজগুলো খুঁজে বার করল ওঁকে। সেখান থেকেই অতুল জানলেন, ওঁর নাম রামপুকার পণ্ডিত। উনি বিহারে ফিরেছেন। ওঁর ছেলে আর নেই।
আরও পড়ুন: ‘গৃহবন্দি’ নয়, দিল্লিতে চিকিৎসককে তালাবন্দি করল প্রতিবেশী
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy