দেশ জুড়ে করোনা-সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনের নয়া নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বুধবার সকালে ওই নির্দেশিকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, আগামী ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন চলাকালীন গোটা দেশেই জুড়ে বন্ধ থাকবে বাস-ট্রেন-বিমান পরিষেবা। কেবলমাত্র জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। ওই গাইডলাইন বা নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, বন্ধ রাখা হবে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে, ‘জনগণের কষ্ট লাঘব করতে’ আগামী ২০ এপ্রিলের পর ছাড় দেওয়া হবে কৃষি ক্ষেত্র, তথ্যপ্রযুক্তি, ই-কমার্স এবং আন্তঃরাজ্য পরিবহণ ব্যবস্থায়।
এ দিনের নির্দেশিকায় আরও জানানো হয়েছে, ‘‘গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল রাখতে ওই সব এলাকায় যে সমস্ত কলকারখানা রয়েছে বা সেখানকার খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, সড়ক নির্মাণ, কৃষিকাজের প্রকল্প, নির্মাণ ও শিল্প প্রকল্প, এমএনআরইজিএ-এর আওতায় কাজ, জল সংরক্ষণের কাজ এবং সাধারণ পরিষেবা দেওয়ার কেন্দ্র খোলা রাখা হবে।’’ তবে করোনা-সংক্রমণ ঠেকাতে সবর্ত্র যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হয়, সে দিকেও নজর রাখতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, লকডাউনের সময় এ সব ক্ষেত্রে ছাড়ের ফলে গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিশেষত ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, আগামী ২০ এপ্রিল থেকে ছাড় মিলবে আন্তঃরাজ্যে পণ্য পরিবহণকারী ট্রাকের যাতায়াতের ক্ষেত্রেও। অপরিহার্য এবং তুলনামূলক ভাবে কম প্রয়োজনীয়— এই দুই ধরনের পণ্য পরিবহণের ওই ছাড় দেওয়া হবে। ওই পণ্যসামগ্রী নিয়ে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে ট্রাকগুলি যাতায়াতের সময় তাতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে যাতে তা সারাই করে নেওয়া যায় সে দিকেও নজর রাখা হয়েছে। ফলে ট্রাক সারানোর দোকানগুলিও খুলছে আগামী সোমবার, ২০ এপ্রিল থেকে। সেই সঙ্গে ওই দিন থেকে রাস্তার ধারের ধাবাগুলিও খোলার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র।
Ministry of Home Affairs (MHA) issues National Directives for #COVID19 management. Wearing of face cover is compulsory in all public places, workplaces. Spitting in public places shall be punishable with fine. pic.twitter.com/14Y7zq9vqp
— ANI (@ANI) April 15, 2020
সরকারি কাজের জন্য যে সব কলসেন্টার কাজ করে, তা-ও খোলার অনুমতি পাবে আগামী সোমবার থেকে। সেই সঙ্গে ওষুধ ও মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারী কলকারখানাও খোলা যাবে বলে জানানো হয়েছে ওই নির্দেশিকায়। প্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদনকারী ইউনিট, আইটি হার্ডওয়্যার এবং প্যাকেজিং করার কারখানাগুলিও খোলার কথাও জানানো হয়েছে। ছাড় দেওয়া হবে কয়লা উৎপাদন, তেল ও মিনারেল প্রস্তুতকারী ইউনিটগুলিকেও।
আরও পড়ুন: করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ১১ হাজার ছুঁইছুঁই, দেশে মৃত বেড়ে ৩৭৭
এ দিনের নির্দেশিকা অনুযায়ী, দুগ্ধ সরবরাহ, দুগ্ধজাত দ্রব্য, পোলট্রি এবং পশুপালনেও ছাড় দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে চা, কফি এবং রাবার প্ল্যান্টগুলিও খোলা হবে। পরিষেবা ক্ষেত্র এবং ই-কমার্সের গুরুত্বের কথা স্বীকার করে করে কেন্দ্র জানিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর পরিষেবা চালু করার পাশাপাশি অনলাইনে শিক্ষাদান এবং তার মাধ্যমে দূরশিক্ষার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: যাবতীয় সঞ্চয় দিয়ে গ্রামে গ্রামে গরিবদের রেশন পৌঁছে দিচ্ছেন এই কৃষক দম্পতি
মঙ্গলবার ২১ দিনের লকডাউনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, গত কাল সকালে জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর পর এ দিনের নির্দেশিকায় বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হলেও সব সময়ই সামাজিক দূরত্ব বজার রাখার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দেশ জুড়ে আগামী ৩ মে পর্যন্ত সিনেমা হল বা অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রের পাশাপাশি বন্ধ থাকবে শপিং মল। এ ছাড়া, প্রার্থনার জন্য জমায়েতও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কর্মস্থল ও রাস্তায় মাস্ক বা মুখাবরণ পরা বাধ্যতামূলক করা ছাড়াও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ‘হটস্পটে’ প্রবেশ নিষেধ বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)