প্রতীকী ছবি।
বাড়ির টিভিটা লকডাউনের আগে থেকেই বিকল পড়ে আছে। লকডাউনের জেরে দিনমজুর বাবার কাজও সীমিত। পরিবারে ইন্টারনেট যুক্ত স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটার বিলাসিতা। তাই অনলাইন ক্লাসে যোগ দেওয়ার উপায় নেই। অথচ আগামী বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা। আর হয়তো পড়াশোনাই হবে না, এই আশঙ্কায় গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করলেন নবম শ্রেণির এক ছাত্রী। কেরলের মমল্লপ্পুরম জেলায় জনজাতি শ্রেণির ওই ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় প্রশাসনিক ও শিক্ষা মহলে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী সি রবীন্দ্রনাথ।
স্থানীয় এক পুলিশ আধিকারিক সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, ‘‘লকডাউনের জেরে ওই পরিবারের উপর আর্থিক চাপ বেড়েছিল। মেয়েটি ভেবেছিল, হয়তো সে আর পড়াশোনা করতে পারবে না, অথবা অনলাইন ক্লাসে যোগ না দিলে অন্যদের থেকে অনেক পিছিয়ে পড়বে। প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, টিভি বা অন্য কোনও উপায়ে অনলাইন ক্লাস করতে না পেরে মেয়েটি মানসিক ভাবে প্রচণ্ড চাপে ছিল।’’
গত ২৫ মার্চ লকডাউনের আগে থেকেই দেশে স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়েছে। তার কিছু দিন পর থেকেই দেশ জুড়ে অনলাইন ক্লাস সম্প্রচারের ব্যবস্থা হয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের তরফে। টিভি বা ইন্টারনেট যুক্ত স্মার্ট ফোনে সেই ক্লাসে যোগ দিতে পারেন পড়ুয়ারা। কেরলেও তেমনই একটি টিভি চ্যানেলে ‘ফার্স্ট বেল’ নাম অনলাইন ক্লাস সম্প্রচার হত। প্রথম থেকে ১২ ক্লাস পর্যন্ত পড়ুয়াদের সেই অনুযায়ী সময়সূচিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই ছাত্রী এক দিনও ক্লাসে যোগ দিতে পারেননি।
ওই ছাত্রীর বাবা দিনমজুর। লকডাউনের পর থেকে কাজ প্রায় নেই বললেই চলে। তার মধ্যে কয়েক সপ্তাহ আগেই আরও এক সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তাঁর মা। ফলে চাপ আরও বেড়েছে। ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, বাড়িতে একটা টিভি ছিল। কিন্তু সেটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। মেয়ে বলেছিল, সারাতে। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে তা করতে পারিনি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘জানি না, কেন মেয়েটা এমন করল। আমি এও বলেছিলাম, চিন্তা করিস না, কোনও বন্ধুর বাড়িতে দিয়ে ক্লাস করার ব্যবস্থা করব।’’
দেশের মধ্যে কেরলে শিক্ষার হার সবচেয়ে বেশি। সেই রাজ্যেই এমন আত্মহত্যার ঘটনায় প্রশাসনিক মহলে শুরু হয়েছে বিকল্পের খোঁজ। সরকারি হিসেবে কেরলে মোটামুটি ভাবে আড়াই লক্ষ পড়ুয়ার বাড়িতে টিভি বা স্মার্ট ফোন নেই। তাঁদের জন্য ‘ভিউইং সেন্টার’ তৈরি করে অনলাইন ক্লাসে যোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে সরকার। এই পড়ুয়াদের ল্যাপটপ দেওয়া যায় কি না, তা নিয়েও ভাবনা চিন্তা চলছে।
অন্য দিকে এই ঘটনার পর কংগ্রেস নেতা তথা কেরলের ওয়েনারের সাংসদ রাহুল গাঁধী স্থানীয় জেলাশাসককে মঙ্গলবার একটি চিঠি লিখেছেন। বহু পড়ুয়া অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে পারছেন না বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।
https://www.anandabazar.com/topic/online-class
https://www.anandabazar.com/topic/kerala
আরও পড়ুন: মে মাসে কাজে যোগ দিয়েছেন ২ কোটির বেশি মানুষ, আশা জাগাচ্ছে সমীক্ষা রিপোর্ট
আরও পড়ুন: লাল সতর্কতায় মুম্বই, দুই রাজ্যে প্রবল সাইক্লোন ‘নিসর্গ’ ঝাঁপাবে কাল দুপুরে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy