ছবি: এএফপি।
নিষেধাজ্ঞা শিথিলের প্রথম দিনে সে ভাবে চাকা ঘুরল না শিল্পের। দেশের যে সব জায়গায় করোনার থাবা পড়েনি, সেখানে সোমবার থেকে শর্তসাপেক্ষে কম কর্মী নিয়ে এবং পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে কৃষি, শিল্প, নির্মাণের কাজ শুরুর অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু সামান্য কিছু ব্যতিক্রম বাদে প্রথম দিন অন্তত কল-কারখানায় কিংবা নির্মাণশিল্পে প্রাণ ফিরতে শুরু করার ছবি সে ভাবে চোখে পড়েনি।
কেন?
প্রথমত, যে ১৭০টি জেলায় করোনার প্রকোপ সব থেকে বেশি, বহু বড় কারখানা ও তাদের অনুসারী শিল্প, ছোট-মাঝারি শিল্প তালুক সেই সমস্ত অঞ্চলেই। সেখানে কাজ শুরুর উপায় নেই। দিল্লি, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গনা, কর্নাটক, পঞ্জাবের মতো বেশ কিছু রাজ্য ৩ মে পর্যন্ত কোনও রকম নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হবে না বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সব রাজ্য এবং তার সংলগ্ন অঞ্চলে শিল্প এবং পরিষেবা ভিত্তিক সংস্থার সংখ্যা যথেষ্ট। সে তামিলনাড়ুর গাড়ি শিল্প হোক বা কর্নাটকের তথ্যপ্রযুক্তি। দিল্লি লাগোয়া নয়ডাতেও নির্মাণ কাজ শুরুর ছাড়পত্র দেয়নি প্রশাসন। নির্মাণ সমেত প্রায় সব কাজ বন্ধ মহারাষ্ট্রেও।
আরও পড়ুন: ‘দেশ-বিরোধী’ পোস্ট করার অভিযোগে কাশ্মীরে অভিযুক্ত ২ সাংবাদিক
দ্বিতীয়ত, যে সব সংস্থা নিষেধাজ্ঞা শিথিলের সুযোগে উৎপাদনে কোমর বাঁধতে চাইছে, কিছুটা সময় লাগছে তাদেরও। কাঁচামাল ও কর্মী পাওয়ার সমস্যা যেমন রয়েছে, তেমনই এত দিন কারখানা টানা বন্ধ থাকার পরে নতুন করে সব শুরু করতে গিয়েও হোঁচট খেতে হচ্ছে। যেমন, গুজরাত এবং গুরুগ্রামের গাড়ি শিল্পাঞ্চলে বেশ কিছু কারখানায় এ দিন শুধু ঝাড়পোঁছ হয়েছে মেশিনের। এই সব সংস্থার অধিকাংশ যন্ত্রাংশই তৈরি হয় অনুসারী ছোট-ছোট সংস্থায়। কাজ শুরু করতে গিয়ে কর্মী থেকে পুঁজি— বিস্তর সমস্যার মুখে তারা। কিছু গাড়ি সংস্থার প্রশ্ন, করোনা আক্রমণের আগে থেকেই দেশে গাড়ি বিক্রিতে ভাঁটা। পড়ে আছে অবিক্রীত গাড়ি। তার উপরে এখন শোরুম বন্ধ অধিকাংশ জায়গায়। বিক্রির উপায়ই যদি না-থাকে, তৈরি করে লাভ কী?
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯-এর দিনগুলোতে জীবন যে রকম
তৃতীয় বাধা, অনিশ্চয়তা। সরকার শুরুতেই জানিয়েছে, কোনও অঞ্চলে আর্থিক কর্মকাণ্ড শুরুর পরে যদি করোনার সংক্রমণ চোখে পড়ে কিংবা নজরে আসে নিয়ম না-মানার ঘটনা, তা হলে ছাড়পত্র ফিরিয়ে নেওয়া হবে। বহু ছোট-মাঝারি সংস্থার প্রশ্ন, কষ্ট করে কাঁচামাল এবং কর্মী জোগাড়ের পরে যদি হঠাৎ উৎপাদন বন্ধের নোটিস আসে, সেই আর্থিক ক্ষতির দায় বইবে কে?
বাজারে চাহিদা থাকায় ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির বেশ কয়েকটি তাড়াতাড়ি কারখানা সচল করতে চাইছে ঠিকই। কিন্তু কর্মী থেকে কাঁচামাল পেতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। এখন খুব কম সংস্থাই একা একটি পণ্য তৈরি করে। ছিঁড়ে যাওয়া ‘সাপ্লাই চেন’ মেরামতে সময় লাগবে বলে তাঁদের ধারণা। লকডাউনের মধ্যেও অত্যাবশ্যক পণ্যের জোগান নিশ্চিত করতে এই সব সংস্থার কিছু কারখানায় অল্পস্বল্প উৎপাদন জারি ছিল অবশ্য। এ দিন তার কয়েকটিতে চাকা ঘুরেছে। আপাতত ১৫-২০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ শুরুর কথা বলেছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির সংগঠন ন্যাসকমও। রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি জানিয়েছে, ৪২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের ৫১১টি প্রকল্পে দ্রুত হাত দেবে তারা। ত্রাণ শিবিরে আটকে থাকা রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকরা কতটা কাজ পাচ্ছেন, তা স্পষ্ট হবে আগামী কয়েক দিনে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy