প্রতীকী ছবি।
দেশে এই প্রথম বাণিজ্যিক বিমানের ভাড়া বেঁধে দিল বিমান মন্ত্রক। সোমবার থেকে ফের অন্তর্দেশীয় বিমান চলাচল শুরু হবে। গ্রীষ্মকালীন বিমান চলাচলের যে সূচি বিভিন্ন বিমান সংস্থা কেন্দ্রের কাছে জমা দিয়েছিল, আপাতত তার এক-তৃতীয়াংশ উড়ান চলাচল করবে। যাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট বিধিও জারি করেছে বিমান মন্ত্রক। ২৪ অগস্ট মাঝরাত পর্যন্ত এই ব্যবস্থা চালু থাকবে। আগামিকাল উড়ানের বুকিং শুরু হবে।
বিমান চলাচল শুরু হলেও ভাড়া সাধারণের নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল নানা শিবিরের। আজ এক সাংবাদিক বৈঠকে বিমানমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী জানান, যাত্রী ও বিমান সংস্থার কথা মাথায় রেখে ভাড়া বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
যাতায়াতের সময়ের ভিত্তিতে উড়ানগুলিকে সাত ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সেগুলি হল ৪০ মিনিটের কম সময়, ৪০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা, এক ঘণ্টা থেকে ৯০ মিনিট, ৯০ মিনিট থেকে ২ ঘণ্টা, ২ ঘণ্টা থেকে ১৫০ মিনিট, ১৫০ মিনিট থেকে ৩ ঘণ্টা ও ৩ ঘণ্টা থেকে ২১০ মিনিট। প্রত্যেক ভাগের একটি সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ভাড়া স্থির করেছে কেন্দ্র। বিমানসচিব জানিয়েছেন, এই দুই সীমার মাঝামাঝি ভাড়ার চেয়ে কম দামে উড়ানের অন্তত ৪০ শতাংশ টিকিট বিক্রি করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে দিল্লি-মুম্বই উড়ানের কথা বলেছেন তিনি। ওই পথে সর্বোচ্চ ভাড়া ১০ হাজার টাকা। সর্বনিম্ন ৩৫০০ টাকা। এই দুই সীমার মাঝামাঝি ভাড়া, অর্থাৎ ৬৭০০ টাকার চেয়ে কম দামে বিমানের অন্তত ৪০ শতাংশ টিকিট বিক্রি করতে হবে। কেন্দ্রের স্থির করা তালিকায় সবচেয়ে কম ভাড়া ২০০০ টাকা। সর্বোচ্চ ১৮,৬০০।
উড়ানে সুরক্ষা বিধি
• ২ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে পৌঁছতে হবে যাত্রীদের।
• বিমানবন্দরে তাঁদের শারীরিক পরীক্ষা করা হবে।
• ১৪ বছরের বেশি বয়সি যাত্রীদের ফোনে আরোগ্য সেতু অ্যাপ থাকা আবশ্যিক। না হলে একটি ফর্মে নিজের শারীরিক অবস্থার কথা জানাতে হবে।
• কন্টেনমেন্ট জ়োনের কোনও বাসিন্দাকে বিমানবন্দরে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
• ট্রলি ব্যবহার যথাসম্ভব এড়াতে হবে।
• অনলাইনে বোর্ডিং পাস ও ব্যাগেজ ট্যাগ সংগ্রহ করতে হবে। এক জন যাত্রী কেবল একটি মাল নিয়েই বিমানের কেবিনে যেতে পারবেন।
• যাত্রীরা নিজেরা মাস্ক পরে যাবেন। বিমানে ওঠার আগে আর একটি মাস্ক দেবে বিমান সংস্থা।
• খাবার দেওয়া হবে না। যাত্রীরা খাবার নিয়ে যেতে পারবেন না। জলের বোতল দেওয়া হবে।
• নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিমান জীবাণুমুক্ত করতে হবে। সে ক্ষেত্রে শৌচাগারকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
• সংবাদপত্র বা অন্য কাগজ বিমানে থাকবে না। কেবল সুরক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশিকা থাকবে।
সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকতে বিমানের মাঝের আসন ফাঁকা রাখার দাবি জানিয়েছিল বিভিন্ন শিবির। কিন্তু বিমানমন্ত্রী জানিয়েছেন, সে দাবি মানতে কোনও বিমান সংস্থাই রাজি নয়। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য নির্দিষ্ট বিধি তৈরি করা হয়েছে। প্রস্তাবিত ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’-এ বিমানের শেষ তিনটি সারি খালি রাখার কথা বলা হয়েছিল। মাঝপথে কোনও যাত্রীর উপসর্গ দেখা দিলে তাঁকে ওই সারিগুলির কোথাও সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু সেই প্রস্তাবও মানেনি বিমান সংস্থাগুলি।
ট্রেন বা বাসে কোনও রাজ্যে পৌঁছলে যাত্রীদের ১৪ দিন কোয়রান্টিনে পাঠানো হচ্ছে। সেই বিধি উড়ানের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বিমানমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘যাঁরা করোনা পজ়িটিভ তাঁদের বিমানে উঠতে বা বিমানবন্দরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। ফলে বিমানে কেবল উপসর্গহীন ব্যক্তিরা থাকতে পারেন।’’ তিনি ইঙ্গিত দেন, স্বল্প দূরত্বের উড়ানের ক্ষেত্রে কোয়রান্টিনের পক্ষপাতী নয় কেন্দ্র। তবে যে রাজ্যে বিমান নামবে সে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে বলে জানিয়েছেন বিমানমন্ত্রী। এই ঘোষণার কিছু ক্ষণ পরেই অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা জানান, তাঁরা সব বিমানযাত্রীকে কোয়রান্টিনে রাখার দাবি জানাবেন।
তবে কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার মতে, কেন্দ্রের পরিকল্পনায় অনেক ত্রুটি আছে। তিনি বলেন, ‘‘পুরো যাত্রী ভর্তি বিমানে ওড়া কি নিরাপদ? সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হবে কি? বিমানমন্ত্রীর উচিত এ সব নিয়ে স্পষ্ট জবাব দেওয়া।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy