কাজে ফিরছেন শ্রমিক-কর্মীরা। কলকাতার একটি কারখানায়। ছবি: রয়টার্স
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে। লকডাউন করেও কার্যত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়নি সংক্রমণ। তাই শুরু হয়েছে ‘আনলক’ করার প্রক্রিয়া। তার মধ্যেই কিছুটা স্বস্তি দিল দেশের কর্মসংস্থানের চিত্র। মে মাসে ২ কোটি ১০ লক্ষ মানুষ কাজে যোগ দিয়েছেন বা ফিরে এসেছেন বলে রিপোর্ট প্রকাশ করল বেসরকারি সমীক্ষক সংস্থা সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি (সিএমআইই)। বেকারত্বের হার এখনও উল্লেখযোগ্য ভাবে কম থাকলেও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ফিরে আসার এই চিত্র অনেকটাই আশাব্যঞ্জক বলেই মত প্রকাশ করেছে সিএমআইই।
কয়েকদিন আগেই ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিক এবং পুরো বছরের জিডিপির হার প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। তাতে শেষ ত্রৈমাসিকে দেশে বৃদ্ধির হার ছিল ৩.১ এবং আর্থিক বছরের এই হার ছিল ৪.২, যা গত ১১ বছরে সর্বনিম্ন। এই হারও অনেকটাই আশাব্যঞ্জক বলে অর্থনীতিবিদদের একাংশ মত প্রকাশ করেছেন। আবার অন্য অংশ বলছেন, লকডাউনের আংশিক প্রভাব ছিল শেষ ত্রৈমাসিকে। ফলে লকডাউনের পুরো প্রভাব পড়বে আগামী জুনে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকে। আবার ইলারা সিকিউরিটিজ নামে একটি সমীক্ষক সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, জিডিপির এই আশাপ্রদ হারে উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে কেরল, পঞ্জাব, তামিলনাড়ু এবং হরিয়ানা, এবং কর্নাটক— এই পাঁচ রাজ্যের।
জিডিপি নিয়ে এই সব চর্চার মধ্যেই মঙ্গলবার দেশের কর্মসংস্থানের চিত্র নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করল সিএমআইই। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, মে মাসে বেকারত্বের হার ২৩.৫ শতাংশ। আগের মাস এপ্রিলেও এই হার একই ছিল। অর্থাৎ বেকারত্বের হার না বাড়লেও নীচেও নামেনি। কিন্তু আশা জাগিয়েছে, শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মসংস্থান ক্ষেত্রে ফিরে আসা। অর্থাৎ লকডাউনে যাঁরা কাজ হারিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই কাজে যোগ দিয়েছেন এবং কাজ খুঁজতে শুরু করেছেন। এপ্রিলে এই হার ছিল ৩৫.৬ শতাংশ। মে-তে সেটা বেড়ে হয়েছে ৩৮.২ শতাংশ। আবার কর্মনিযুক্তির হারও গত মাসের ২৭.২ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২৯.২ শতাংশ।
আরও পড়ুন: দেশে করোনা আক্রান্ত দু’লক্ষের কাছাকাছি, মহারাষ্ট্রেই ৭০ হাজার
সব মিলিয়ে গোটা চাকরি ক্ষেত্রের ছবিটাই আশাব্যঞ্জক বলে মনে করছেন সিএমআইই-র বিশেষজ্ঞরা। সংস্থার প্রধান মহেশ ব্যস বলেন, ‘‘এপ্রিলে যাঁরা সক্রিয় কর্মসংস্থান ক্ষেত্র থেকে অনেকেই কার্যত ঘরে বসে পড়েছিলেন, মে মাসে তাঁদের অনেকেই আবার ফিরে এসেছেন। এপ্রিলে বিরাট আকারের ছাঁটাইয়ের কারণে চাকরির বাজার থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিলেন এবং তাঁদের কর্মহীনের খাতায় ধরা হয়েছিল।’’ তাঁর মতে, ‘‘মে মাসে সেই শ্রমিক-কর্মীদেরই একটা বড় অংশ ফিরে এসেছেন, কাজ খুঁজতে শুরু করেছেন।’’
আরও পড়ুন: ‘ভারত সীমান্তে চিন আগ্রাসী হয়ে উঠছে’, সমালোচনা আমেরিকার
কিন্তু কাজ খোঁজা আর কাজ পাওয়ার মধ্যে পার্থক্য বিরাট। সেখানেই সন্দিহান বিশেষজ্ঞদের একাংশ। আইসিএমই তাঁদের মতে, ভারতের মতো দেশে মাসমাইনের পাকা চাকরি পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। সেই তুলনায় অসংগঠিত ক্ষেত্রে কিছুটা সহজ। সিএমআইই-র অধিকর্তা মহেশ ব্যাসও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, মাসমাইনের চাকরি পাওয়া যেমন কঠিন, তেমনই লকডাউনের সময় এই রকম চাকরি যাঁরা হারিয়েছেন, তাঁদের সেটা ফিরে পাওয়াও কঠিন।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেছন, ‘‘এপ্রিলের তুলনায় মে-তে কর্মসংস্থানের মূল সূচক কিছুটা ভাল হলেও মোটের উপর এই ক্ষেত্র এখনও লকডাউনের আগের তুলনায় দুর্বল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy