প্রতীকী ছবি।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৫ লক্ষ ছাড়িয়েছে। কিন্তু ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর সমীক্ষায় উঠে এসেছে ভয়ঙ্কর তথ্য। কেন্দ্রীয় এই সংস্থার সেরো সার্ভে রিপোর্ট অনুযায়ী মে মাসেই দেশে মোট সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ৬৪ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। অঙ্কের হিসেবে এখন তা হলে সেই সংখ্যা যে কত কোটিতে পৌঁছেছে, সেই চিন্তায় ঘুম উড়েছে স্বাস্থ্য প্রশাসন থেকে আম নাগরিকের।
২৫ মে থেকে টানা ৬৮ দিনের সম্পূর্ণ লকডাউন হয়েছে দেশে। কার্যত সেই সময়ের মধ্যেই ১১ মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত একটি সেরো সার্ভে চালিয়েছিল আইসিএমআর। সম্প্রতি তার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে `ইন্ডিয়ান জার্নাল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ পত্রিকায়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মে মাসে দেশে মোট পূর্ণবয়স্ক সম্ভাব্য আক্রান্তের সংখ্যা ৬৪ লক্ষ ৬৮ হাজার ৩৮৮। সমীক্ষা শুরুর দিন ১১ মে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৭ হাজার ১৫২। ৪ জুন সমীক্ষার শেষ দিন সেই সংখ্যা ছিল ২ লক্ষ ১৬ হাজার ৯১৯। এই পরিসংখ্যান থেকেই অনুমান করা যেতে পারে, এখন দেশে আক্রান্তের সংখ্যা কত কোটি।
কী ভাবে এই সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে? সমীক্ষায় উঠে এসেছে, ওই সময় দেশে এক জন করোনা আক্রান্ত পিছু ৮০ থেকে ১৩০ জনের সংক্রমণ নির্ধারণ করা যায়নি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘আমাদের সমীক্ষায় উঠে এসেছে, সারা দেশে করোনা আক্রান্তদের খুঁজে বের করার হার অত্যন্ত কম। এর অর্থ, ভারত এখনও কোভিড সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং বিপুল সংখ্যক ভারতীয় সন্দেহভাজন করোনা আক্রান্ত।’’
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় ১২০০ মৃত্যু, দেশের দৈনিক আক্রান্তও সর্বোচ্চ
সেরো সার্ভেতে রক্তের সিরাম সংগ্রহ করে ইমিউনোগ্লোবিন জি (আইজিজি) অ্যান্টিবডি টেস্ট করা হয়। কারও শরীরে এই অ্যান্টিবডি টেস্ট পজিটিভ হলে অর্থাৎ শরীরে করোনার অ্যান্টিবডির উপস্থিতি থাকলে ধরে নেওয়া হয়, অন্তত গত দু’মাসের মধ্যে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। প্রায় এক মাস ধরে দেশের ২১টি রাজ্যের ৭০টি জেলার ৭০০টি গ্রাম ও পুরসভার ওয়ার্ডে সমীক্ষা চালিয়েছিল আইসিএমআর। ৩০ হাজার ২৮৩টি বাড়ি ঘুরে মোট ২৮ হাজার মানুষের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। তাঁদের কোভিড কবচ ‘এলাইজা’ পদ্ধতিতে টেস্ট করা হয়েছিল। তার মধ্যে ২৫৬ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। ৬৯ জনের রিপোর্ট নির্ধারণ করা যায়নি।
আরও পড়ুন: রাজ্যে আজ লকডাউন, নিটের জন্য কাল নয়
রিপোর্টে উঠে এসেছে, পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া মানুষর সংখ্যা, অর্থাৎ করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৭০ শতাংশই গ্রামাঞ্চলের। ১৬ শতাংশ শহরের বস্তি এলাকার এবং বাকি ১৪ শতাংশ শহরাঞ্চলেরই বস্তি ছাড়া অন্য এলাকার। অর্থাৎ সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই সময়েই গ্রামাঞ্চলে সংক্রমণ ছড়িয়েছিল। যদিও ওই সমীক্ষায় সংগৃহীত নমুনার চার ভাগের তিন ভাগই নেওয়া হয়েছিল গ্রামাঞ্চলের মানুষের। সেই কারণেই গ্রামীণ এলাকায় সংক্রমণের হার শহরের তুলনায় বেশি হয়েছে।
এর পাশাপাশি দেখা গিয়েছে, মহিলাদের চেয়ে পুরুষদের মধ্যে সংক্রমণের হার বেশি। সেরো পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সিদের মধ্যে (৪৩.৩%)। ৩৯.৫ শতাংশ আক্রান্তের বয়স ৪৬ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। আর সংক্রমণের হার সবচেয়ে কম ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে (১৭.২%)। এ ক্ষেত্রে যুক্তি, করোনার জন্য সরকারি নির্দেশিকায় ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে প্রবীণদের বাইরে বেরতে নিষেধ করা হয়েছিল। অন্য দিকে, তরুণ ও মধ্যবয়সিদের কাজের জন্য বাইরে বেরতেই হয়েছে। মহিলারাও তুলনায় কম বাইরে বেরিয়েছেন। ফলে তাঁদের মধ্যে সংক্রমণের হার কম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy