করোনা আক্রান্ত সন্দেহে এক রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হচ্ছে। দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
করোনা রোগীর ছুটি-নীতি ঘিরে প্রশ্ন উঠছিল। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের ( আইসিএমআর) তরফে ব্যাখ্যা এল দিন তিনেক পরে। শুক্রবার ওই কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থা জানিয়েছিল, উপসর্গহীন, হালকা, খুব হালকা এবং মাঝারি উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিদের হাসপাতাল থেকে ছাড়ার ক্ষেত্রে আরটি-পিসিআরের (রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন পলিমারাইজ় চেন রিঅ্যাকশন) রিপোর্ট আর বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত কতটা চিকিৎসাবিজ্ঞানসম্মত, তা নিয়ে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক।
নতুন ছুটি-নীতির জেরে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করেছিলেন কিছু চিকিৎসক। তাঁদের আশঙ্কা দূর করতে কেন এই সিদ্ধান্ত, সেই বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছে আইসিএমআর। ওই সংস্থা জানিয়েছে, রোগীর সুস্থতার মাপকাঠি হিসেবে বিভিন্ন দেশ নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টের চেয়ে উপসর্গের গতিবিধির উপরে জোর দিয়েছে। নতুন নীতিতে উপসর্গ দেখা দেওয়ার ১০ দিন পরে হালকা, খুবই হালকা উপসর্গযুক্ত বা উপসর্গহীন আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষা ছাড়া ছুটি দেওয়া যেতে পারে বলে জানানো হয়েছে। উপসর্গ দেখা দেওয়ার ১০ দিন পরে মাঝারি মাপের করোনা লক্ষণযুক্ত রোগীদেরও নমুনা পরীক্ষা ছাড়া ছেড়ে দিতে বাধা নেই। শুধু ছুটি দেওয়ার আগের তিন দিন রোগীর যে কোনও উপসর্গ নেই, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে। সিভিয়ার কেসে আগের নির্দেশই বহাল রয়েছে।
সোমবার আইসিএমআরের তরফে জানানো হয়েছে, আরটি-পিসিআরে পজ়িটিভ এলেও ১০ দিন পরে দেখা গিয়েছে, নমুনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। আক্রান্তের শরীরে ভাইরাল-লোডও যে দিন দশেকের মধ্যে কমে এসেছে, গবেষণায় তা ধরা পড়েছে। ওই সংস্থার বক্তব্য, সাধারণ মানুষ, চিকিৎসক ও ভাইরোলজিস্টদের কাছে সুস্থতার মাপকাঠি ভিন্ন। সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় না-থাকলে উপসর্গের উপরেই জোর দেওয়া উচিত। নতুন ছুটি-নীতির ফলে সংক্রমণ ছড়াতে পারে, এমন কোনও প্রমাণ নেই।
আরও পড়ুন: প্লাজ়মা গবেষণায় রাজ্যের চার সংস্থাকে অনুমোদন দিল আইসিএমআর
আরও পড়ুন: রাজ্য ‘ক্রীতদাস’ নয়! কেন্দ্রকে মুখ্যমন্ত্রী
সংক্রামক রোগের এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘যখন নতুন কেস খুঁজে বার করা জরুরি, তখন অহেতুক আমরা ফলো-আপ কেসে সময় নষ্ট করছি।’’ একটি বেসরকারি হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজিস্ট অঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাসপাতাল ও পরীক্ষা কেন্দ্রগুলির চাপ কমানোর প্রশ্নে এটা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। তবে হোম আইসোলেশনের বিষয়টি কঠোর ভাবে মানতে হবে।’’ ক্যানসার চিকিৎসক সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় জানান, আগামী দিনে সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী হারের কথা মাথায় রেখে এই নির্দেশিকা যুক্তিসঙ্গত। তবে কিছু প্রশ্নের উত্তর অধরা। তাঁর কথায়, ‘‘যাঁদের হোম আইসোলেশনে থাকার মতো ঘর নেই, তাঁদের কী হবে? রোগী কেমন আছেন, এই নজরদারির জন্য সচেতনতা বড় মাপকাঠি। সকলেই সচেতন, তা তো নয়! মাঝারি মাপের উপসর্গযুক্ত ব্যক্তি বাড়ি ফেরার পরে ফের সমস্যা হলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। প্রয়োজনে তিনি যাতে হাসপাতালে ফের শয্যা পান, সেটাও তো নিশ্চিত করতে হবে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy