Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

নিজামউদ্দিনের জামাত ঘিরে চিন্তা গোটা দেশে

জনতা কার্ফুর আগের দিন অর্থাৎ ২১ মার্চ ওই মসজিদে ছিলেন ১৭৪৬ জন। যাঁদের মধ্যে ২১৬ জন বিদেশি।

নিজামউদ্দিনের ধর্মীয় সভায় উপস্থিতদের কোয়রান্টিনে পাঠানো হচ্ছে। ছবি: এপি।

নিজামউদ্দিনের ধর্মীয় সভায় উপস্থিতদের কোয়রান্টিনে পাঠানো হচ্ছে। ছবি: এপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২০ ০৪:২৩
Share: Save:

করোনা সংক্রমণের প্রশ্নে দিল্লির নিজামউদ্দিন এলাকার ‘তবলিঘি জামাত’ চিন্তা বাড়াল পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশের।

মার্চ মাসের শুরু থেকে দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত আলামি মার্কেজ বাঙ্গালেওয়ালি মসজিদে ধর্মীয় জমায়েতের ডাক দিয়েছিল তবলিঘি জামাত। তাতে যোগ দিতে এসেছিলেন দেশ-বিদেশের প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, করোনা সংক্রমণের আবহেই মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, কিরঘিজস্তান থেকে বিদেশিরা এসেছিলেন। ১৫ মার্চ অনুষ্ঠান শেষের পরেও নিজামউদ্দিন এলাকাতেই থেকে যান অনেকে। জনতা কার্ফুর আগের দিন অর্থাৎ ২১ মার্চ ওই মসজিদে ছিলেন ১৭৪৬ জন। যাঁদের মধ্যে ২১৬ জন বিদেশি। আর গোটা দেশে সেই সময়ে বিদেশ থেকে আসা মুসলিম ধর্মপ্রচারক ছিলেন ৮২৪ জন।

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ওই জামাতে যোগ দেওয়া ব্যক্তিদের সংক্রমিত হওয়ার খবর মিলেছে। তাঁদের কেউ কেউ মারাও গিয়েছেন। ফলে প্রচারের আলোয় উঠে আসে নিজামউদ্দিনের ওই মসজিদ। তার পর থেকে শুরু হয় পরীক্ষা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, দিল্লিতে এখনও পর্যন্ত জামাতে যোগ দেওয়া ১২০৩ জনকে পরীক্ষা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৩০৩ জন করোনায় আক্রান্ত। যদিও ওই সংগঠনের বক্তব্য, জনতা কার্ফু ও লকডাউনের ফলে অনেকে দিল্লিতে থেকে যেতে বাধ্য হন।

জামাতিদের ব্যাপারে কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে প্রথম সতর্ক করে ২১ মার্চ। তার পর ২৮ মার্চ সব রাজ্যকে চিঠি দিয়ে তারা জামাতে যোগ দেওয়া ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দেয়। ওই ব্যক্তিরা কাদের সংস্পর্শে এসেছেন, সে ব্যাপারেও খোঁজখবর নিতে বলা হয়। ২৯ মার্চ রাজ্যগুলিকে চিঠি দেন ইন্টেলিজেন্স বুরোর প্রধান। কিন্তু একাধিক রাজ্যের দায়সারা মনোভাবে হতাশ কেন্দ্র। দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ রাজ্য দিল্লি সরকারের মতোই হাত গুটিয়ে বসে ছিল। এখন নিজামউদ্দিন এলাকায় সংক্রমিতের সংখ্যা বৃদ্ধি ও তেলঙ্গানায় মৃত্যুর পরে হইচই হওয়ায় তারা নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়েছে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন রাজ্যে ২১৩৭ জনকে পরীক্ষা করে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে।

আজ রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ থেকে যাঁরা এই জমায়েতে (দিল্লির তবলিঘি জামাত) গিয়েছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। অতি দ্রুত তাঁদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করানো হবে এবং ১৪ দিনের জন্য তাঁদের আবশ্যিক কোয়রান্টিনে পাঠানো হবে।’ রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানান, প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে। পরে রাতে নবান্ন সূত্রে দাবি করা হয়, দিল্লি থেকে রাজ্যে ফেরা সকলকেই চিহ্নিত করা গিয়েছে। তাঁদের কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা হচ্ছে, তাঁরা ইতিমধ্যে কত জনের সংস্পর্শে এসেছেন। সেই তথ্য পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের ক্ষেত্রেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, বিদেশিদের মধ্যে রাজাবাজারের একটি মসজিদে তাইল্যান্ডের ১৩ জন তবলিঘি জামাতি এবং ৬ জন স্থানীয় ধর্মপ্রচারক গত ৮-১০ দিন ধরে রয়েছেন। মেটিয়াবুরুজের মসজিদে মালয়েশিয়ার ৯ জন এবং ইন্দোনেশিয়ার ৪ জন জামাতি আটকে রয়েছেন। কলুটোলার এক মসজিদে মায়ানমারের ১৪ জন জামাতিকে চিহ্নিত করা গিয়েছে।

নিজামউদ্দিনের ঘটনায় প্রবল ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় সরকার। স্বাস্থ্যকর্তাদের একটি বড় অংশ মনে করছেন, এই ঘটনায় করোনার বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইটা অনেক কঠিন হয়ে গেল।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Nizamuddin
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy