ছবি পিটিআই।
সংক্রমণ যেমন নিঃশব্দে ছড়াচ্ছে, তেমনই বহু আক্রান্তের শরীরে অজান্তে নোভেল করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে যাচ্ছে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ে অন্তত কন্টেনমেন্ট জ়োন বা গণ্ডিবদ্ধ রাখা সংক্রমিত এলাকার মানুষদের একটা বড় অংশের শরীরেই কোভিড-১৯ প্রতিরোধের ক্ষমতা তৈরি হয়েছে। বস্তুত, আজই প্রথম বার দেশে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যাকে পেরিয়ে গিয়েছে করোনা থেকে সেরে ওঠা মানুষের সংখ্যা। ফলে আশার আলো দেখছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
চিন্তা অবশ্য পুরোপুরি কাটছে না। ভারতে যে গতিতে রোগী বাড়ছে, তাতে আগামী এক বা দেড় দিনের মধ্যেই মোট সংক্রমণের নিরিখে ব্রিটেনকে ছাপিয়ে যেতে পারে এই দেশ। ব্রিটেনে সংক্রমিতের সংখ্যা ২.৮৭ লক্ষ। ভারতের চেয়ে মাত্র ১১ হাজার বেশি। গত চব্বিশ ঘণ্টায় ভারতে নতুন করে ৯,৯৮৫ জন আক্রান্ত হওয়ায় মোট সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২,৭৬,৬৮৩ জন। তবে ব্রিটেনে মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি— ৪০,৫৯৭ জন। আর গত কাল ভারতে ২৭৯ জন মারা যাওয়ায় এ দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭,৭৪৫ জন। দেশে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ১,৩৩,৬৩২ জন। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ফেরা রোগীর সংখ্যা ১,৩৫,২০৫ জন। স্বাস্থ্য মন্ত্রক দাবি করেছে, আগামী দিনে সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা বাড়বে।
দেশের ৭০টি জেলায় সমীক্ষা চালিয়ে আইসিএমআর জানিয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলির মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ সংক্রমিত হয়ে সেরেও উঠেছেন। তাঁদের রক্তে অ্যান্টিবডি মিলেছে। এ ভাবেই জনগোষ্ঠীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠতে শুরু করলে কন্টেনমেন্ট এলাকায় নতুন সংক্রমণের হার কমবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনও জনগোষ্ঠীর ৬০ শতাংশের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে গেলে ভাইরাস নতুন করে ছড়াতে পারে না। আইসিএমআরের সমীক্ষার ফল দেখে তাঁরা মনে করছেন, এই বিষয়টি কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলিতে হয়তো ছোট আকারে শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে সারা দেশের ক্ষেত্রেও একই সমীকরণে অধিকাংশ মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে।
আরও পড়ুন: সাহায্য চেয়েও মেলেনি! শ্রমিক স্পেশালে শিশুকন্যার মৃত্যু
তবে অতীতের অন্যান্য ভাইরাসের দ্বিতীয় বার ফিরে আসার উদাহরণ থাকায় করোনাও দ্বিতীয় ধাক্কা দিতে পারে বলে আশঙ্কা বহু চিকিৎসকের। শীতকালে কোভিড-১৯ ফের ব্যাপক আকার নিতে পারে মনে করছেন তাঁরা। আজ এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে এমসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া জানান, ইউরোপ ও আমেরিকার বিশেষজ্ঞেরা করোনার দ্বিতীয় আক্রমণের আশঙ্কা করছেন, যা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে তাঁর আশ্বাস, যত দিন যাবে, সংক্রমণের হার কমবে। সুস্থ মানুষের সংখ্যা বাড়বে। জনগোষ্ঠীতে করোনা-প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে। দেশে দৈনিক নতুন আক্রান্তের সংখ্যা গত কয়েক দিন ধরে ৯ হাজারের ঘরে আটকে থাকলেও এখনও তা পাঁচ অঙ্কে পৌঁছয়নি। ফলে লড়াইয়ে কাজ হচ্ছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে গোষ্ঠী-সংক্রমণ শুরু! দুঃশ্চিন্তা বাড়িয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy